Type to search

সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের সভাপতি আর নেই

রাজনীতি

সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের সভাপতি আর নেই

 

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স : সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক প্রবীণ রাজনীতিক মুনসুর আহমেদ (৭৩) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সাতক্ষীরাসহ দেশবাসীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জানানো হয় তিনি লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলা হয় রাজধানীর ঢাকার স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি কোভিড-১৯ করোনাক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সিভি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক আব্দুল মইন গত ২৮ ডিসেম্বর শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে সাতক্ষীরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে পরীক্ষায় তাদের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১১ জানুয়ারি তাদের দু’জনেরই করোনা নেগেটিভ আসে। তবে, শারীরিক নানা জটিলতার কারণে পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) জোহর বাদ সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠে মরহুম মুনসুর আহমেদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মুনসুর আহমেদ ১৯৪৮ সালে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হামিজ উদ্দীন এবং মায়ের নাম দেলজান বিবি। সাতক্ষীরা পিএন হাইস্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাশ করেন এবং খুলনা কমার্স কলেজ থেকে তিনি স্নাতক পাশ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে সাতক্ষীরার গণমানুষের অধিকার ও উন্নয়নে তার অবদান অপরিসীম। কৃষক শ্রমিক ছাত্র আন্দোলনে তার নেতৃত্বে বারবার কেঁপেছে রাজপথ। তিনি ছিলেন সাতক্ষীরার রাজনৈতিক অঙ্গনের অভিভাবক। তিনি দীর্ঘদিন পারুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর তৎকালীন সাতক্ষীরা-০৪ (দেবহাটা-কালিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাতক্ষীরার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে তিনি ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৮০ সালে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মুনসুর আহমেদ। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত টানা ১৯ বছর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
এরপর ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মুনসুর আহমেদের নাম ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের ২১ মার্চ এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে পুনরায় মুনসুর আহমেদকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
তান মৃত্যুর খবরে সাতক্ষীরায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তাফা কামাল এক বার্তায় মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।সূত্র, সুবর্ণভূমি