Type to search

পিতা ইচ্ছেপূরণ করলেন হেলিকপ্টারে করে বিয়ে দিয়ে

নড়াইল

পিতা ইচ্ছেপূরণ করলেন হেলিকপ্টারে করে বিয়ে দিয়ে

নড়াইল প্রতিনিধি
পিতা হাফেজ বাবু বিশ^াস দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সৌদি আরবে থাকেন। অনেকদিন আগের
থেকেই ইচ্ছা ছিলো বড় ছেলেকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে দিতে নিয়ে যাবেন। ঠিক
সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিলো। আদরের সন্তানকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে দিতে
পেরে বাবু বিশ^াসের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী এবং সন্তান সবাই খুশি। এদিকে
হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ের বিষয়টি এলাকাতেও ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের নিধিখোলা গ্রামের হাফেজ বাবু বিশ^াসের
ছেলে হাফেজ ইমরান হোসেন পাশের লোহাগড়া উপজেলা সদরের লক্ষীপাশা এলাকায়
হেলিকপ্টারযোগে বিয়ে করতে যান। হেলিকপ্টারে চড়ে বর ইমরান ও তার বাবা
হাফেজ বাবুল বিশ^াস সহ পরিবারের চার সদস্য যান কনের বাড়িতে। লক্ষীপাশা
মোল্যার মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমে প্রাইভেটকারে লোহাগড়া কলেজপাড়ার একটি
কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবার হেলিকপ্টারযোগে বধূ ঐশীকে নিয়ে
বাড়িতে আসেন বর ইমরান হোসেন। হেলিকপ্টারটি অবতরণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর
মোহাম্মদ কমপ্লেক্স চত্বরে।
বর ইমরান বিশ^াস ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএসসির
শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের সঙ্গে লোহাগড়ার লক্ষীপাশা নিবাসী মাওলানা
তৈয়েবুর রহমানের মেয়ে ঐশীর প্রায় দুই বছর আগে বিয়ে হয়েছে। শনিবার
হেলিকপ্টারযোগে আনুষ্ঠানিক ভাবে কনেকে বরের বাড়িতে তুলে আনা হলো।
হেলিকপ্টারে বর ও কনের আসা-যাওয়ার জন্য এক ঘন্টায় খরচ গুণতে হয়েছে এক লাখ
৪৫ হাজার টাকা। সৌদিপ্রবাসী বাবা বাবু বিশ^াসের ইচ্ছেপূরণে গ্রামাঞ্চলে
এই হেলিকপ্টার বিয়ে উপলক্ষে বেশ আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বিয়ে উপলক্ষে শনিবার বিকেলে চার শতাধিক আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীকে
আমন্ত্রণ করে ভুরিভোজের ব্যবস্থা করা হয়।
পাইকমারী গ্রামের স্কুল শিক্ষক কামরুজ্জামান মুকুল বলেন,‘ এক সময়ে গ্রাম
বাংলার ঐতিহ্য ছিলো পালকিতে বিয়ে। কালক্রমে তা হারিয়ে গিয়ে এখন সাধারণত
প্রাইভেটকার, বাস সহ অন্যান্য যানবাহনে বরযাত্রী আসা-যাওয়া করে। এই প্রথম
আমাদের এলাকায় হেলিকপ্টারে বিয়ে হলো। অনেকের কোটি কোটি টাকা আছে কিন্তু
এমন শখ খুব কম মানুষেরই আছে। বাবু বিশ^াস হেলিকপ্টার ভাড়া করে সবাইকে
অবাক করে দিয়েছে। আমাদের এলাকার মানুষ কখনো এতো কাছের থেকে হেলিকপ্টার
দেখেনি। এ কারনে হাজার হাজার উৎসুক জনতা হেলিকপ্টার ও বর-বধুকে দেখার
জন্য উপস্থিত হয়।
বরের পিতা হাফেজ বাবু বিশ^াস বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর সৌদিআরব আছি। এ দীর্ঘ
সময়ে কর্মজীবনে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। কষ্টার্জিত টাকা উপার্জনের মাঝে
ইচ্ছে ছিল-আমার বড় ছেলেকে হেলিকপ্টারে বিয়ে দিব। আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার
সেই ইচ্ছাপূরণ হলো।’
এদিকে হেলিকপ্টারের বিয়ের ঘটনাটি জানাজানি হলে নূর মোহাম্মদ কমপ্লেক্স
চত্বরে হেলিকপ্টার দেখতে কয়েক হার্জা উৎসুক জনতা ভীড় করে। বরযাত্রী
দুপুরে চলে গেলেও হেলিকপ্টারটি বিকাল ৩টার সময় অবতরণ করেন। নববধু দিয়ে এ
খন্টার মধ্যেই আবার ফিরে আসে।