Type to search

নারী–শিশুর সুরক্ষায় সমাজকর্মীদের ওপর বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ

জাতীয়

নারী–শিশুর সুরক্ষায় সমাজকর্মীদের ওপর বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ

অনলাইন ডেক্স :

নারী–শিশুর সুরক্ষায় সমাজকর্মীদের ওপর বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ
বাংলাদেশে এখনো শিশুরা যৌন নির্যাতন, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ ও শৃঙ্খলা শেখানোর নামে সহিংস আচরণ ও মানসিক শাস্তির শিকার হয়। এ কারণে প্রতিদিন লাখ লাখ শিশু ঝুঁকির মুখে পড়ছে। অরক্ষিত শিশুদের প্রয়োজনে পর্যাপ্তভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এক লাখের বেশি সমাজকর্মী প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে মাত্র তিন হাজার সমাজকর্মী রয়েছেন।

সমাজকর্মীদের ওপর বিনিয়োগ বাড়াতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জাতিসংঘ শিশু তহবিল সম্প্রতি বছরব্যাপী একত্রে কাজ করতে চুক্তি করেছে। ১৫ মার্চ এ চুক্তি হয়। আজ মঙ্গলবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ইউনিসেফ জানায়, ১৪ বছরের কম বয়সী প্রতি ১০ ছেলেমেয়ের মধ্যে ৯ জন, অর্থাৎ ৪ কোটি ৫০ লাখ ছেলেমেয়ে বাড়িতে নিয়মিত সহিংস আচরণের শিকার হয়। ৫১ শতাংশ, অর্থাৎ অর্ধেকের বেশিসংখ্যক মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ১৮তম জন্মদিনের আগেই। লাখ লাখ শিশু রাস্তায় বাস করছে, যারা স্কুলের বাইরে থেকে যাচ্ছে বা বিপজ্জনক শিশুশ্রমে আটকা পড়ছে। এই শিশুদের শনাক্ত করতে এবং তাদের ক্ষতি ও নিগ্রহের শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে একটি সুপরিকল্পিত, প্রশিক্ষিত ও সমর্থিত সমাজসেবাকর্মী বাহিনী নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ঝুঁকির মুখে থাকা ব্যক্তিদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক মানুষ, বিধবা, নিঃস্ব নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাতা বিতরণ করছে। আমরা আমাদের শিশুনিবাস ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এতিম ও ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশ্রয় প্রদান করি।’

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘প্রয়োজনের সময় শিশুদের কাছে পৌঁছে দেওয়া প্রতিটি সুকার্যকর শিশু সুরক্ষাব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে প্রশিক্ষিত সমাজকর্মীদের অবদান। আমাদের অবশ্যই তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদের পেছনে বিনিয়োগ করতে হবে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইউনিসেফ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তাপ্রাপ্ত সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন নিবেদিত সমাজকর্মীরা শহর ও গ্রামীণ কমিউনিটিগুলোতে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছে। এই সমাজকর্মীরা ২০২১ সালে ২ লাখের বেশি শিশুর কাছে সেবা পৌঁছে দিয়েছেন, তাদের মনোসামাজিক সহায়তা দিচ্ছেন, ঘটনা ব্যবস্থাপনা–পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করেছেন এবং রেফারেল পরিষেবা দিয়েছেন। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে তাঁরা শিশু উন্নয়নকেন্দ্র নামে পরিচিত আটককেন্দ্রগুলো থেকে পাঁচ হাজারের বেশি শিশুর মুক্তিতে সহায়তা দিয়েছেন এবং এই শিশুদের তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনরায় একত্র হতে সহায়তা করেছেন।

২০১৫ সালে ইউনিসেফের সহায়তায় সমাজসেবা অধিদপ্তর চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ প্রতিষ্ঠা করে, যা দেশব্যাপী একটি টোল-ফ্রি নম্বর। ২০২১ সালে হেল্পলাইনটি ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি শিশু ও জনগোষ্ঠীর উদ্বিগ্ন সদস্যদের ফোনকলে সাড়া দেয় এবং তাদের আইনি সহায়তা, আশ্রয়, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা বিষয়ে পরামর্শ ও রেফারেল সেবা দেয়। ২০২০ সালে মহামারির চূড়ান্ত সময়ে চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ সাড়া দেয় ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি ফোনকলে

সূত্র : প্রথম আলো “