Type to search

ঝিকরগাছার পল্লীর মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মামলা থাকাপরও নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত

ঝিকরগাছা

ঝিকরগাছার পল্লীর মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মামলা থাকাপরও নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত

 

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জ্বলপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান থাকারপরও নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার বিষয়ে এলাকার সুমি খাতুন, মোঃ মুজাহিদ ও আঃ ছাত্তার নামের ব্যক্তিরা বাদি হয়ে মাদ্রাসার পক্ষে সুপার, সভাপতি, সুপার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ডিজি, উপ পরিচালক ও রেজিষ্ট্রারকে বিবাদী করে যশোরের বিজ্ঞ ঝিকরগাছা সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করছেন। দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১৪৫/২৩, তাং ০৩/০৫/২০২৩ইং।
বিজ্ঞ আদালতে মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে তিনশতাধিক নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যমান রয়েছে। মাদ্রাসাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় এমপিও ভুক্ত হয়েছে। যার কারণে মাদ্রাসাটিতে নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বিগত ১৫/১০/২০২০, ২০/০৪/২০২১ ও ০৮/১১/২০২১ইং তারিখে ৩টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। কিন্তু করোনা মহামারী জনিত কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় নাই। অতঃপর আইনানুগ প্রক্রিয়ায় উক্ত পদ সমুহে নিয়োগের জন্য একটি দৈনিক পত্রিকাতে ১৩/০৩/২০২৩ইং তারিখে
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। কিন্তু করোনা মহামারী জনিত কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। অতঃপর আইনানুগ প্রক্রিয়ায় উক্ত পদ সমূহে নিয়োগের জন্য যশোরের দৈনিক পত্রিকাতে সর্বশেষ বিগত ১৩/০৩/২০২৩ ইং তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। নিরাপত্তা কর্মী পদে ২ নং বাদীসহ মোট ৯/১০জন, আয়া পদে ১ নং বিবাদীসহ ১০-১২ জন এবং কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ৭ জন নিয়োগ প্রত্যাশী প্রয়োজনীয় পোস্টাল অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট সহ আবেদনপত্র দাখিল করে। আবেদনপত্র গুলি যাচাই-বাছাই অঞ্চলে সঠিক বলে বিবেচিত হয়। অতঃপর ২ ও ৩ নং বিবাদী সভাপতি ও সুপার ৪ নং বিবাদী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আঁতাত ও যোগ সাজস করে ১ও ২নং বাদীর অনুকূলে কোন প্রবেশপত্র প্রেরণ না করে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বেআইনি অর্থ বাণিজ্য করা লক্ষে নিজেদের পছন্দমতে প্রার্থী বরাবর গুটিকয়েক প্রবেশপত্র প্রেরণ করেছেন। কিন্তু বাদীপক্ষের অনুকূলে কোন প্রবেশপত্র প্রেরণ করেননি। বাদীপক্ষ বিগত ২/৫/২০২৩ তারিখে বিশ্বস্ত মতে উক্ত বিষয়ে অবগত হয়ে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় খোঁজখবর নিয়ে উক্ত প্রবেশপত্র প্রেরণের বিষয়ে জানতে পারে। অতঃপর বাদীপক্ষ ৩ নং বিবাদী সুপারের সাথে যোগাযোগ করে প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুপার সাহেব ২ নং বিবাদী সভাপতি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। অতঃপর বাদী পক্ষ ওই দিনই সভাপতি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে সভাপতি সাহেব ১ও ২ নং বাদীকে নালিশি পদ সমূহে নিয়োগ পেতে হলে বিপুল অংকের টাকা ১ ও ২নং বিবাদীকে প্রদান করতে হবে মর্মে স্রেফ জানিয়ে দেন। অতঃপর বাদীপক্ষ উহার প্রতিবাদ করলে সভাপতি সাহেব নালিশির পদের বিপরীতে ইতিমধ্যেই বিপুল অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে নালিশই পদ সমূহে নিয়োগ প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মর্মে ১ও ২নং বাদীকে জানিয়ে দেন। এবং আরো বলেন নালিশি পদে নিয়োগ পাইবার জন্য আদৌ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কোন প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে এবং তাহারা আগামী ৬/৫/২০২৩ইং তারিখে নামমাত্র পড়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন বলে জানান দেন। এমতাবস্থায় বেশ কিছুদিন যাবত মামলার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলেও শনিবার (১৯ আগস্ট) সরকারি ভাবে সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের দিনেই নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মাদ্রাসার সুপার বায়েজিদ বোস্তমী বলেন, আজ নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। তখন মাদ্রাসার নামে মামলার বিষয়ে তার নিকট জানতে চাইলে তিনি তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন সুইচ অফ করে রাখেন।
মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, হ্যায় নিয়োগ বোর্ড তৈরি হচ্ছে। আমি মাদ্রাসার সভাপতিতো। আমরা যখন চিঠি পাইনি তখন ওরা নিষেজ্ঞার মামলা দেছে। তখন আমি কোর্টে উকিলের মাধ্যমে ইনটোটাল নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করে দিছি। ওদেরকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এক সপ্তাহ আগে চিঠি দিয়েছি। সবগুলোর রিসিভ আমার নিকট আছে। আজকে বোর্ডের ডেট আমার কাজ তো আমি করবোই। আমি সব লিগ্যালে করেছি। আনলিগ্যাল কিছুই নেই। ওরা আজ বোর্ডে যায়নি। ওদের জন্য কি আর স্যারেরা বসে থাকে! মামলা যদি ওরা টিকোতি পারে তাহলে আমি মামলা চালাবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞা বলেন, আজ যশোর জেলা শিক্ষা অফিসে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই মামলা খারিজ হয়ে গেছে। যদি মামলার কোন আপডেট হয়ে থাকে তাহলে বিজ্ঞ আদালত থেকে আমাদের নিকট কোনো কাগজপত্র আসেনি। যদি বিজ্ঞ আদালত থেকে কোনো কাগজপত্র আসে তাহলে আমরা সব বন্ধ করে দিবো। আর এটা মাদ্রাসা তো, ঢাকা থেকে ডিজির প্রতিনিধি আসে তারাই এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন।