Type to search

এস এম সুলতানের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে লাখো মানুষের মিলন মেলা

লাইফস্টাইল

এস এম সুলতানের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে লাখো মানুষের মিলন মেলা

নড়াইল প্রতিনিধি
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে নড়াইলের চিত্রা নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় ১২টি নৌকা অশংগ্রহণ করে। এর মধ্যে নারীদের চারটি এবং পুরুষদের আটটি নৌকা ছিল। নড়াইল পুরাতন ফেরিঘাটের শেখ রাসেল সেতু হতে শুরুহয়ে মাছিমদিয়ার এস. এম সুলতান সেতু পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার বাইচে অংশ নেয় কালাই নৌকা ১০টি, টালাইয়ের ৪টি নৌকা। মোট পাঁচটি টানে বাইচ শেষ হয়।
এদিকে নৌকাবাইচকে ঘিরে জমিদারবাড়ির বাধাঘাট, চরের ঘাট আর পঙ্কবিলা ঘাটে মেলা বসে। মেলায় নানা ধরনের নাগরদোলা, চরকি আর পসরা নিয়ে বসেছিলো আগত দর্শকদের জন্য। এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে লাখো নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃদ্ধের আগমনে যেন পরিণত হয় মিলন মেলায়।

প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান পিপিএম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, নৌকাবাইচ কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরাসহ অনেকে।
প্রতিযোগিতায় কালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে-গোপালগঞ্জের মা শীতলা নামের নৌকা, দ্বিতীয় যশোরের জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুল কাদের খানের নৌকা এবং ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বেলেবানা গ্রামের নিছার শেখের নৌকা তৃতীয় হয়েছে।
টালাই গ্রুপে মাগুরা সদরের ঘানাবাড়ি গ্রামের আকরাম হোসেনের নৌকা প্রথম, খুলনার তেরোখাদা উপজেলার পাটগাতি গ্রামের দিদার মোল্যার নৌকা দ্বিতীয় এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলার অপূর্ব রায়ের নৌকা তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।
এছাড়া নারীদের মধ্যে নড়াইল সদরের হাতিয়াড়া গ্রামের পুতুল মজুমদারের নৌকা দ্বিতীয়, গুয়াখোলা গ্রামের দিপালী সরকারের নৌকা দ্বিতীয় এবং একই গ্রামের মনিহার পালের নৌকা তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
টালাই এবং কালাই নৌকার প্রত্যেক বিভাগের ১ম স্থান অধিকারী প্রতিটি নৌকাকে ৬০ হাজার টাকা, ২য়স্থান অধিকারী প্রতিটি নৌকাকে ৪০ হাজার টাকা এবং তৃতীয়স্থান অধিকারী প্রতিটি নৌকাকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়। তবে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী নৌকাকে ৫ হাজার টাকা করে সান্তনা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া নারী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিদের ১ম স্থান অধিকারীর জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারী নৌকাকে ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কারের প্রদান করা হয়েছে।

১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। অসুস্থ অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রিয় জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রাম এলাকায় সংগ্রহশালা চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এসএম সুলতান।
এস এম সুলতান চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে ১৯৮২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন।