Type to search

আজ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস

নড়াইল

আজ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস

নড়াইল প্রতিনিধি
১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস। মিত্র বাহিনীর অংশগ্রহন ছাড়াই নড়াইলের বীর
মুক্তিযোদ্ধারা এই দিন নড়াইলকে সম্পূর্ণভাবে শত্রু মুক্ত করতে সক্ষম হন।
সামগ্রীক মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ক্যানভাসে নড়াইল দেশের একটি ক্ষুদ্র এলাকা
হলেও মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলের রয়েছে গৌরব উজ্জল ইতিহাস। শোষন বঞ্চনাহীন সুখি
সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার মুক্তি সংগ্রামের সেই চেতনা সঠিক বাস্তবায়নের
প্রত্যাশায় আজো দিন গুনছেন এখানকার সেইসব বীরসেনারা।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দশ লক্ষাধিক মানুষের বিশাল
জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষনে স্বাধীনতার যে আহ্বান ছিল
নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা তা থেকে পিছুুুপা হয় নাই। নড়াইল ছিল
মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের অধীন রণ কৌশলগত এলাকা। প্রথম দিকে ওসমান
চৌধুরী এবং পরবর্তীতে মেজর মঞ্জুর নেতৃত্ব দেন এই সেক্টরের। এসময়
অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে অস্ত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামের
সুচনা করেন নড়াইলের মুক্তি পাগল জনতা। পরে তারা ভারত গিয়ে সামরিক
প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসে হানাদারদের বিরুদ্ধে নিজেদের বিভিন্ন এলাকায়
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এর এক পর্যায়ে প্রায় দুই শতাধিক খান সেনাসহ
রাজাকার-আল বদরদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে কালিয়া থানা মুক্ত হয় ২৪
নভেম্বর। লোহাগড়া থানা মুক্ত হয় ৭ ডিসেম্বর। নড়াইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে
চলা চিত্রা নদীর পূর্ব তীর থেকে ৯ ডিসেম্বর মুক্তি যোদ্ধাদের সম্মিলিত
চুড়ান্ত আক্রমন পরিচালিত হয় নড়াইল শহর মুক্ত করতে। বর্তমান পানি উন্নয়ন
বোর্ড কার্যালয়ে অবস্থিত নড়াইলে হানাদারদের সর্বশেষ ঘাঁটি দখলের মধ্যদিয়ে
১০ ডিসেম্বর সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত হয় নড়াইল। অগ্নিঝরা সেইসব দিনের
স্মৃতি আজো তাড়া করে ফেরে সম্মুখ সমরে অংশ নেয়া বাংলা মায়ের সেই সব সূর্য
সন্তানদের।
সুখি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখতে চান দেশ
মাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়া মুক্তিযোদ্ধারা ।
মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলে ৫ জন খেতাব প্রাপ্ত হন তারা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর
মোহাম্মদ, বীর উত্তম মুজিবুর রহমান, বীর বিক্রম আফজাল হোসেন, বীর প্রতীক
খোরশেদ আলম ও বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান। ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ৮নং
সেক্টরের সেক্টর প্রধান মেজর মঞ্জুর নড়াইলে আসেন এবং মুক্তি পাগল হাজারো
জনতার উপস্থিতিতে ডাকবাংলো প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের
পতাকা উত্তোলন করা হয়।