Type to search

যেভাবেই হোক ঢাকা ছাড়তে হবে!

জাতীয়

যেভাবেই হোক ঢাকা ছাড়তে হবে!

অপরাজেবাংলা ডেক্স: সকাল সকাল প্রস্তুত হচ্ছিলেন খোকন পাল। গেন্ডারিয়া এলাকায় সেলুনে কাজ করেন তিনি।

বাড়ি তার পিরোজপুর। ‘লকডাউনের’ ঘোষণায় বন্ধ হয়ে যাবে তার সেলুন। এজন্যই বাড়ি ফিরবেন। কিভাবে যাবেন- জানতে চাইলে সরল উত্তর- যেভাবেই হোক ঢাকা ছাড়তে হবে! কারণ, ঢাকায় থেকে আমার কোনো কাজ নেই। 

সোমবার (২৮ জুন) থেকে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী শুরু হবে সাত দিনের কঠোর ‘লকডাউন’।

এই ‘লকডাউনে’ সবকিছু বন্ধের খবরে আগাম ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন অসংখ্য মানুষ। তাদের মতে, আয়-রোজগার সংকটের শঙ্কায় বাড়ি ফিরছেন তারা।

শুক্রবার (২৫ জুন) থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করে মানুষ। তবে শনিবার (২৬ জুন) সকাল থেকেই বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। তবে টার্মিনালগুলোতে গাড়ি না থাকায় অনেকে রওনা হয়েছিলেন পায়ে হেঁটে।

শনিবার সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা শুরু করছেন অনেকে। যার জন্য যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। সে সঙ্গে পদে পদে ভোগান্তিরও শেষ নেই তাদের। যাত্রীদের এসব ভিড়ের কারণে এসব ঘরমুখো মানুষের যাত্রায় উপেক্ষিত হচ্ছে করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদে বাড়ি ফেরার জন্য যে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় তার মতই অবস্থা চলছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলেই ঢাকা ছাড়ছেন। তারা হন্যে হয়ে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস খুঁজছেন। চালকরাও ভাড়া হাঁকছেন দ্বিগুণ-তিনগুণ। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুণেই ফিরছেন গ্রামে।

মো. আজাদ নামে এক যাত্রী বলেন, গতবার ‘লকডাউনে’ ঢাকাতেই আটকে পড়েছিলাম। পরে কষ্ট করতে হয়েছে অনেক। তাই এবার গ্রামে ফিরছি। অন্তত কাজ বা খাদ্যের সমস্যা তো হবে না। আর নিম্ন আয়ের মানুষদের পরিবারই তো সবকিছু। তাই গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরছি।

আনিসুর রহমান নামে এক প্রাইভেট কারের ড্রাইভার বলেন, এখন তো রাস্তায় গাড়ি চলছে না। একেক জায়গায় একেক সমস্যা। আমরা কিছু যাত্রী নিয়ে চলাচল করছি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রিজার্ভ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে চিরচেনা কোলাহল চোখে পড়েনি। যাত্রীদের উদ্দেশ্য করে হাঁকডাক নেই, সারি সারি থামিয়ে রাখা হয়েছে বাস। টার্মিনালের ভেতরে কিছু দোকান খোলা রয়েছে যেখানে গাড়ির শ্রমিকরা বসে আড্ডা দিয়ে সময় পার করছেন।

আড্ডার মধ্যেই তাদের কেমন আছেন প্রশ্ন করতেই ‘কাজ নাই, ইনকামও নাই। এবার বুইঝা নেন কেমন আছি’।

ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটে চলাচলরত নিরালা পরিবহনের বেশ কয়েকটি বাস দেখা-শোনার জন্য টার্মিনালে শুয়ে-বসেই দিন কাটছেন রাসেলের। তিনি জানান, বন্ধ থাকলেও গাড়ি পাহারা দিতে কাউকে না কাউকে থাকতে হয়। গাড়ির চালক বাড়ি চলে গেছেন, মালিকরা যার যার জায়গাতেই আছেন। কিন্তু শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে গাড়ির সঙ্গেই থাকছেন।সূত্র, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম