Type to search

মহান মে দিবসের ইতিকথা। 

জাতীয়

মহান মে দিবসের ইতিকথা। 

মোল্যা হাবিবুর রহমান (হাবিব)
আজ ১লা মে মহান মে দিবস- আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস।১৮২০ সাল থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত কাজের ঘন্টা কমানোর দাবিতে ধর্মঘটের পর ধর্মঘট হয়। ১৮২৭ সালে দুনিয়ায় প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন ফিলাডেল ফিয়ার মেকানিকদের ইউনিয়ন গৃহ নির্মান শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের ধর্মঘট গুলি হয়েছিল ১০ ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবিতে।১৮৩৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ভ্যান ব্যুরেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের জন্য দশ ঘন্টা কাজের দিন বেধে দিতে বাধ্য হয়। কয়েকটি শিল্পে এই দাবি স্বৃকৃত হবার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রমিকরা দৈনিক আট ঘন্টা কাজের নিয়ম চালু করার দাবি তোলেন। কাজের ঘন্টা কমানোর এই আন্দোলন একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়েছিল তা নয়। উদিয়মান পুজিবাদি ব্যাবস্থায যেখানেই শ্রমিকেরা শোষিত হচ্ছিল সেখানেই এই আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। নিউ ইংল্যান্ড থেকে ক্যালিফর্নিয়া আটলান্টিক হতে প্রশান্ত মহাসাগর অবাধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
 আমেরিকার শিল্প বিকাশের শুরু থেকেই  শ্রমিকদের সৃর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হতো। এমনকি ১৮/২০ ঘন্টা কাজ করতে হতো শ্রমিকদের। অন্যদিকে শ্রমিকদের  মুজুরিও কম দেওয়া হতো। তাই আমেরিকান শ্রমিক সংগঠন ফেডারেশন অব লেবার এর উদ্বোগে কাজের সময় ৮ ঘন্টা নির্ধারনের দাবিতে ১৮৮৬ সালের ১লা মে ধর্ম ঘটের আহবান করে। শ্রমিকরা কারখানা বন্ধ করে বেরিয়ে আসে রাজপথে। আমারিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেট অনুষ্ঠিত হয় এক সুবিশাল সমাবেস।১৮৮৬ সালের ১লা মের আট ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণের আন্দোলন চুড়ান্ত রুপ ধারন করে। শান্তিপৃর্ন ভাবে শেষ হয় মসাবেস। একই দাবিতে১৮৮৬ সালের ৩মে তারিখে ম্যাক কমিক রিপার কারখানার ধর্মঘটে শ্রমিকদের এক সভায় পুলিশ হামলা করে ৬ শ্রমিকে হত্যা করে, আহত করে অনেককে। এ হত্যা কান্ডের প্রতিবাদে ৪ঠা মে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেট স্কায়ারে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি শান্তি পৃর্ন ভাবে সম্পন্ন হতে যাচ্ছিল। এমন সময়ে সমেবেত শ্রমিকদের উপর পুলিশ আবার হামলা করে। সংঙ্গ সংঙ্গে লড়াই শুরু হয়ে যায়। সে লড়াইয়ে ৪শ্রমিক নিহত হয়, পুলিশের একজন সার্জেন্ট সহ কয়েক জন পুলিশ ও নিহত হয়। মামলা দেওয়া হয় শ্রমিকদের নামে। বিচারের নামে প্রহসনের বিচারে শ্রমিকনেতা পার্সনস, স্পাইজ, এডলফ ফিসার এবং এঙ্গেল সহ ৭ জনকে দেওযা হয় ফাসির দন্ত। তাদের প্রেরন করা হয় কারাগারে। ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর ফাসির দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। যারা সেদিন শ্রমিক অধীকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করে জীবন দিয়েছিল। তাদের বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করি। আজকের এই দিনে সরকার ও কারখানার মালিকদের প্রতি শ্রমিকদের দাবি বন্দো রাষ্ট্রায়াত্ত সকল পাট কল গুলি চালু করা হোক,বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হোক। শ্রমিকদের মুজুরি নৃন্যতম ২০হাজার টাকা নির্ধারন হোক। শিশু শ্রম বন্দো হোক, গার্মেন্টস শ্রমিক, নারি শ্রমিকদের সঠিক বেতন নিশ্চিত করা হোক। শ্রমিকদের সকল ন্যায্যদাবি মেনে নেওয়া হোক। শ্রমিক মেহনতি মানুষের বেচে থাকার জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান, বাস্তবসম্মত আবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন ও পেনশন ব্যাবস্থা নিশ্চিত হোক। পরিশেষে মহান ১মে দিবসে শ্রমিকদের সকল ন্যয় সংগত দাবি আদায়ের আন্দোলনের সাফল হোক এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বের সব শ্রমজীবী মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে আজকের মতো শেষ করছি।