করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য প্রকৌশলীদের ভূমিকা
সাজ্জাদ হোসেন ফয়সাল ঃ খাদ্য মানুষের প্রথম মৌলিক চাহিদা। করোনা মাহামারীতে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ যেকোনো দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। একমাত্র জনগণের ক্ষুধার কষ্ট লাঘব করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার লকডাউন শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে, এই কারণে সংকট অার ঘনীভূত হয়ে অাসছে। এই পরিস্থিতি ও পরিস্থিতি পরবর্তী খাদ্য প্রকৌশলীরা রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও টি টেকনোলজি বিভাগ(এফইটি) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(যবিপ্রবি) এগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের(বিএসসি ইন এগ্রো প্রসেস এন্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেনঃ
প্রফেসর ড. জি এম রবিউল ইসলাম,শিক্ষক,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
বাংলাদেশের পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি Engineering knowledge কাজে লাগিয়ে যথাযত Food packaging নিশ্চিত করতে হবে,এমনকি Food distribution এর জন্য কার্যকর Supply chain তৈরী করতে হবে, তবেই সংরক্ষিত খাদ্য দ্রব্য দেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে এবং এতে করে দেশের রিমেটেন্স অর্জনের পাশাপাশি নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে,এজন্য আমি সরকারী ও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দূরদর্শী সুদৃষ্টি কামনা করি।
মোঃ সুমন রানা,শিক্ষক,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় মুহূর্তে দেশের অনেক কর্মক্ষম মানুষের গৃহবন্দি জীবন যাপন ও কর্মহীন হয়ে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতির চাকা হয়ে গেছে শ্লথ। কাজেই করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়ে উঠবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এ জন্য কৃষি পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। খাদ্য প্রকৌশলীগণ এই ক্ষেত্রে রাখতে পারেন অগ্রণী ভূমিকা। শস্য দানা, ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদন ব্যবস্থায় GAP (Good Agricultural Practices) এবং GHP ( Good Hygienic Practices) অনুসরণের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি কল্পে ব্যাপক প্রচারণা চালানো ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে সঠিক SOP’s ( Standard Operating Procedures) অনুসরণ, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি (Proper Personal Hygiene) মানা, Cross Contamination এড়িয়ে চলা, Proper Time-Temperature অনুসরণ, সর্বোপরি GMP ( Good Manufacturing Practices) মেনে চলার ক্ষেত্রে জোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যেহেতু করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য অণুজীবের ক্ষেত্রে বাহক হিসেবে মানুষ ও যন্ত্রপাতি এবং প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, তাই প্রোডাকশন লাইনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাঝে নিরাপদ দূরত্ব, এপ্রোন, মাস্ক, হেয়ার কভারিং, গ্লাভস, গাম বুট, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা (হ্যান্ড ওয়াশিং, নালা ব্যবস্থা ইত্যাদি) নিশ্চিত করতে হবে। অসুস্থ্য ব্যক্তিদের কোনোভাবেই প্রোডাকশন লাইনে ঢুকতে দেয়া যাবে না। যন্ত্রপাতি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে CIP ও COP এবং অন্যান্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ফ্লোর ক্লিনিং করার ক্ষেত্রে surface active agent ( সাবান, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি) ব্যবহারের পাশাপাশি স্যানিটাইজিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। প্রোডাকশন এরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ফুট বাথ (ক্লোরিন পানি) নিশ্চিত করতে হবে। প্যাকেজিং এর ক্ষেত্রে ভালো মানের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল ও উন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থা ( টেট্রা প্যাক, এসেপ্টিক প্যাকেজিং ইত্যাদি) অনুসরণ করতে হবে।
খাদ্য সংরক্ষণের বিভিন্ন কলাকৌশল এর ব্যাপারে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে অধিক পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেন নিম্ন বাজারদর এবং হিমাগারের অভাবে নষ্ট না হয়ে যায় সে ব্যাপারে তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।
খাদ্য বিতরণের ক্ষেত্রে নিয়োজিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি ও GHP মেনে চলতে হবে। ব্যবহৃত গাড়ি ও অন্যান্য উপকরণগুলোকে নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সর্বোপরি সকলের সচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে।
অামজাদ পাটোয়ারী,শিক্ষার্থী,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি, যথাযত বৈজ্ঞানিক পদ্বতিতে খাদ্য সংরক্ষন ও প্রসেসিং করা খুবই দরকার, না হয় ১৬ কোটি জনগণের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চত করাটা অসম্ভব হয়ে পড়বে।গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশে উৎপাদিত শস্য জাতীয় খাদ্যের(ধান, গম ইত্যাদি) ১৬-২০%,ফল_ মূল,শাকসবজির প্রায় ৪০% Post Harvest loss হয়,যার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল সঠিক সময়ে processing না করা,সঠিক পদ্বতিতে পন্য পরিবহন না করা,cold storage এর অব্যবস্হাপনা এমনকি মানহীন নিন্ম মানের Ripening chemical এর ব্যাবহার, কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরধারী ইত্যাদি।উপযুক্ত জায়গায় খাদ্য প্রকৌশলীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে এই বিশাল পরিমান ক্ষতির হাত থেকে দেশ ও জাতিতে রক্ষা করা সম্ভব।
মোহসিনা হোসাইন মিশা,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য প্রকৌশলীদের প্রচুর খাদ্য উৎপাদন,গুণগত মান,উন্নয়ন,সংরক্ষণ,সরবরাহ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দরিদ্র জনগণের কথা চিন্তা করে স্বল্প খরচে অধিক গুণগত মানের খাদ্য উৎপাদন ও বিকল্প খাদ্য উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে।তাছাড়া অামাদের ভবিষ্যতে এমন কোনো দুর্যোগ অাসলে যাতে খাদ্য সংকটে না পড়তে হয় সেইজন্য ইতিবাচক খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ীভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
ইয়াসিন অারাফাত,শিক্ষার্থী,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
দেশের ফুড ইন্ড্রাস্ট্রিগুলোর যে টেকনিশিয়ানরা থাকেন তারা মূলত বিদেশি তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে তাদের পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য উচিত দেশের ভিতরে দক্ষ টেকনিশিয়ান গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ার ফলে খাদ্যের কাঁচামাল অামদানি কিংবা খাদ্য রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না তাই পচনশীল দ্রব্য থেকে Dried Food Product উৎপাদনের চেষ্টা করতে হবে এবং Food Fortification ও Food Enrichment এর মাধ্যমে খাদ্যের গুণাগুণ বৃষ্টি করার চেষ্টা করতে হবে।অালকাতুজ অাঁখি,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
করোনাকালীন মহা দুর্যোগ শেষে, আমরা বুঝতেই পারছি খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।আমরা খাদ্য প্রকৌশলীরা সেক্ষেত্রে দুইটি জিনিসের উপর গুরুত্ব এনে কাজ করতে পারি….
প্রথমত, পুষ্টিকর খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ। আমাদের দেশের অধিকাংশ নিম্নশ্রেণীর মানুষ এখনও ভাত ডালের উপরেই নির্ভরশীল, অন্যদিকে মাছ-মাংসের মুল্য আকাশচুম্বী বলে এদের আমিষ এর চাহিদাও পুরণ হয়না। এমনকি মৌসুমি ফলমুল সহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার এদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিছু কিছু খাবারের উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবনের দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত খাদ্যভ্যাস এ পরিবর্তন আনার জন্য জনসাধারণ কে উৎসাহ দেয়া…. খাদ্যভ্যাস এ যদি একটা নিয়ন্ত্রিত পু্ষ্টিকর খাদ্য তালিকা থাকে, তবে পরবর্তীতে আমরা অবশ্যই নিজেরাই সব অসুখের প্রতিষেধক!
পরিশেষে বলা যায় যে, খাদ্য প্রকৌশলীদের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মহামারী মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এইটা সবারই কাম্য।
প্রফেসর ড. জি এম রবিউল ইসলাম,শিক্ষক,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
বাংলাদেশের পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি Engineering knowledge কাজে লাগিয়ে যথাযত Food packaging নিশ্চিত করতে হবে,এমনকি Food distribution এর জন্য কার্যকর Supply chain তৈরী করতে হবে, তবেই সংরক্ষিত খাদ্য দ্রব্য দেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে এবং এতে করে দেশের রিমেটেন্স অর্জনের পাশাপাশি নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে,এজন্য আমি সরকারী ও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দূরদর্শী সুদৃষ্টি কামনা করি।
মোঃ সুমন রানা,শিক্ষক,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় মুহূর্তে দেশের অনেক কর্মক্ষম মানুষের গৃহবন্দি জীবন যাপন ও কর্মহীন হয়ে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতির চাকা হয়ে গেছে শ্লথ। কাজেই করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়ে উঠবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এ জন্য কৃষি পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। খাদ্য প্রকৌশলীগণ এই ক্ষেত্রে রাখতে পারেন অগ্রণী ভূমিকা। শস্য দানা, ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদন ব্যবস্থায় GAP (Good Agricultural Practices) এবং GHP ( Good Hygienic Practices) অনুসরণের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি কল্পে ব্যাপক প্রচারণা চালানো ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে সঠিক SOP’s ( Standard Operating Procedures) অনুসরণ, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি (Proper Personal Hygiene) মানা, Cross Contamination এড়িয়ে চলা, Proper Time-Temperature অনুসরণ, সর্বোপরি GMP ( Good Manufacturing Practices) মেনে চলার ক্ষেত্রে জোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যেহেতু করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য অণুজীবের ক্ষেত্রে বাহক হিসেবে মানুষ ও যন্ত্রপাতি এবং প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, তাই প্রোডাকশন লাইনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাঝে নিরাপদ দূরত্ব, এপ্রোন, মাস্ক, হেয়ার কভারিং, গ্লাভস, গাম বুট, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা (হ্যান্ড ওয়াশিং, নালা ব্যবস্থা ইত্যাদি) নিশ্চিত করতে হবে। অসুস্থ্য ব্যক্তিদের কোনোভাবেই প্রোডাকশন লাইনে ঢুকতে দেয়া যাবে না। যন্ত্রপাতি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে CIP ও COP এবং অন্যান্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ফ্লোর ক্লিনিং করার ক্ষেত্রে surface active agent ( সাবান, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি) ব্যবহারের পাশাপাশি স্যানিটাইজিং এজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। প্রোডাকশন এরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ফুট বাথ (ক্লোরিন পানি) নিশ্চিত করতে হবে। প্যাকেজিং এর ক্ষেত্রে ভালো মানের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল ও উন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থা ( টেট্রা প্যাক, এসেপ্টিক প্যাকেজিং ইত্যাদি) অনুসরণ করতে হবে।
খাদ্য সংরক্ষণের বিভিন্ন কলাকৌশল এর ব্যাপারে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে অধিক পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেন নিম্ন বাজারদর এবং হিমাগারের অভাবে নষ্ট না হয়ে যায় সে ব্যাপারে তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।
খাদ্য বিতরণের ক্ষেত্রে নিয়োজিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি ও GHP মেনে চলতে হবে। ব্যবহৃত গাড়ি ও অন্যান্য উপকরণগুলোকে নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সর্বোপরি সকলের সচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে।
অামজাদ পাটোয়ারী,শিক্ষার্থী,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি, যথাযত বৈজ্ঞানিক পদ্বতিতে খাদ্য সংরক্ষন ও প্রসেসিং করা খুবই দরকার, না হয় ১৬ কোটি জনগণের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চত করাটা অসম্ভব হয়ে পড়বে।গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশে উৎপাদিত শস্য জাতীয় খাদ্যের(ধান, গম ইত্যাদি) ১৬-২০%,ফল_ মূল,শাকসবজির প্রায় ৪০% Post Harvest loss হয়,যার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল সঠিক সময়ে processing না করা,সঠিক পদ্বতিতে পন্য পরিবহন না করা,cold storage এর অব্যবস্হাপনা এমনকি মানহীন নিন্ম মানের Ripening chemical এর ব্যাবহার, কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরধারী ইত্যাদি।উপযুক্ত জায়গায় খাদ্য প্রকৌশলীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে এই বিশাল পরিমান ক্ষতির হাত থেকে দেশ ও জাতিতে রক্ষা করা সম্ভব।
মোহসিনা হোসাইন মিশা,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য প্রকৌশলীদের প্রচুর খাদ্য উৎপাদন,গুণগত মান,উন্নয়ন,সংরক্ষণ,সরবরাহ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দরিদ্র জনগণের কথা চিন্তা করে স্বল্প খরচে অধিক গুণগত মানের খাদ্য উৎপাদন ও বিকল্প খাদ্য উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে।তাছাড়া অামাদের ভবিষ্যতে এমন কোনো দুর্যোগ অাসলে যাতে খাদ্য সংকটে না পড়তে হয় সেইজন্য ইতিবাচক খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ীভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
ইয়াসিন অারাফাত,শিক্ষার্থী,এপিপিটি বিভাগ,যবিপ্রবি
দেশের ফুড ইন্ড্রাস্ট্রিগুলোর যে টেকনিশিয়ানরা থাকেন তারা মূলত বিদেশি তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে তাদের পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য উচিত দেশের ভিতরে দক্ষ টেকনিশিয়ান গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ার ফলে খাদ্যের কাঁচামাল অামদানি কিংবা খাদ্য রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না তাই পচনশীল দ্রব্য থেকে Dried Food Product উৎপাদনের চেষ্টা করতে হবে এবং Food Fortification ও Food Enrichment এর মাধ্যমে খাদ্যের গুণাগুণ বৃষ্টি করার চেষ্টা করতে হবে।অালকাতুজ অাঁখি,এফইটি বিভাগ,শাবিপ্রবি
করোনাকালীন মহা দুর্যোগ শেষে, আমরা বুঝতেই পারছি খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।আমরা খাদ্য প্রকৌশলীরা সেক্ষেত্রে দুইটি জিনিসের উপর গুরুত্ব এনে কাজ করতে পারি….
প্রথমত, পুষ্টিকর খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ। আমাদের দেশের অধিকাংশ নিম্নশ্রেণীর মানুষ এখনও ভাত ডালের উপরেই নির্ভরশীল, অন্যদিকে মাছ-মাংসের মুল্য আকাশচুম্বী বলে এদের আমিষ এর চাহিদাও পুরণ হয়না। এমনকি মৌসুমি ফলমুল সহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার এদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিছু কিছু খাবারের উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রয়োজনে নতুন জাত উদ্ভাবনের দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত খাদ্যভ্যাস এ পরিবর্তন আনার জন্য জনসাধারণ কে উৎসাহ দেয়া…. খাদ্যভ্যাস এ যদি একটা নিয়ন্ত্রিত পু্ষ্টিকর খাদ্য তালিকা থাকে, তবে পরবর্তীতে আমরা অবশ্যই নিজেরাই সব অসুখের প্রতিষেধক!
পরিশেষে বলা যায় যে, খাদ্য প্রকৌশলীদের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মহামারী মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এইটা সবারই কাম্য।
লেখক – সাংবাদিক