দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্ষমতার করিডোরে ঘোরাফেরা করা এক দলের নাম জাতীয় পার্টি। যে দলের কাছে আদর্শের চেয়ে সুবিধা লাভই মোক্ষম। তাই তো পয়ত্রিশ বছরেও উত্তরবঙ্গের বাইরে দলটির প্রভাব নেই বললেই চলে। এমনকি ঘাঁটি অঞ্চলেও কমছে জনসমর্থন। তারপরও ব্যর্থতা দেখেন না জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। বলছেন, ক্ষমতায় যেতেই রাজনীতি করছে একাদশ সংসদের বিরোধী দল।
সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন আরেক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। সেনা ছাউনি থেকে ঊনিশশো ছিয়াশির পহেলা জানুয়ারি গড়ে তোলেন জাতীয় পার্টি।
পয়ত্রিশতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ডিবিসি নিউজের মুখোমুখি হয়ে বলেন, দলের ব্যর্থতা না থাকলেও দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় কমছে জনসমর্থন। ক্ষমতাসীন না হলে দলের জনসমর্থন কমতে থাকে। বেশিদিন ক্ষমতার বাইরে থাকলে জনগণের আস্থা কমে যায় এবং ক্ষমতায় যেতে পারবে এই বিশ্বাসটাও চলে যায়।
নব্বইয়ে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতনের পর আর সরকার গঠন করতে না পারলেও সুবিধামত কখনও বিএনপি, কখনও আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেছে জাতীয় পার্টি। অবশ্য নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়ে কখনও সরকারে, কখনও যুগপৎভাবে সরকার ও বিরোধী দলে, আবার কখনও কেবল বিরোধী দলে জাতীয় পার্টি।
জিএম কাদের বলেন, যখন যেখানে সুবিধা মনে করা হয়েছে বা যেখানে থাকলে ভোটের রাজনীতির জন্য সুবিধা হবে জাতীয় পার্টি তাই করেছে। অন্য কোন দল হলেও তাই করতো। যেহেতু অন্য কোন দল বিরোধী দল হওয়ার পজিশনে ছিল না তাই সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও ফেরানোর পক্ষে নয় দলটি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের একটি অনিহা তৈরি হয়েছে। এর পিছনে কিছু কারণও আছে। কোন নির্বাচনে গেলে কি হবে এটি নিয়ে চিন্তা করা উচিত। এর সমাধান বের করা উচিত।
উত্থান-পতনের মধ্যেও টিকে থাকাকেই বড় শক্তি মনে করে জাতীয় পার্টি।
সূত্র, DBC বাংলা