Type to search

সকল জেলায় আইসিইউ চালু ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না হ’লে রাজপথে নামতে বাধ্য হব — যশোরে বাম জোট

অন্যান্য

সকল জেলায় আইসিইউ চালু ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না হ’লে রাজপথে নামতে বাধ্য হব — যশোরে বাম জোট

প্রিয়ব্রত ধর,ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: সমস্ত জেলা সদরের হাসপাতালে আইসিইউ চালু, করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুদ করা, প্রতিদিন ১ লাখ করোনা সম্পল পরীক্ষা করা সহ সকল ধরনের
স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, লকডাউন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হতদরিদ্র মানুষকে পরিবার প্রতি খাদ্য সহ ৫ হাজার
টাকা প্রদান করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচার, আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং মুনিয়া
নামের অল্পবয়সী মেয়েকে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আটক ও
বিচারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল)
বেলা ১১টায় প্রেসকাব যশোরের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানব বন্ধন শেষে কিক্ষোভ শহরের আংশ প্রদর্শন করে। যশোর জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক কমরেড আবুল
হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মাকর্সবাদী)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক
ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মাকর্সবাদী)’র জেলা সমন্বয়ক কমরেড হাচিনুর রহমান ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মাকর্সবাদী)’র যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাসদ জেলা সমন্বয়ক কমরেড
শাহাজান আলী, ওয়ার্কার্স পার্টি (মাকর্সবাদী)’র জেলা
সম্পাদকমন্ডলির অন্যতম সদস্য কমরেড মিজানুর রহমান, টিইউসি’র জেলা সভাপতি ও শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদ
যশোরের আহ্বায়ক মাহবুব মজনু, বাসদ (মাকর্সবাদী)’র কমরেড তুহিন, বাসদ যশোরের নেতা কমরেড আলাউদ্দিন প্রমুখ।
নেতবৃন্দ বলেন, করোনার শুরু থেকেই আমরা আইসিইউ’র দাবি করে আসছিলাম। অধিক করোনা টেস্টর ও চিকিৎসা নিরাপত্তার দাবি করেছিলাম। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য ১ বছরে কয়েকজন মহানুভব মানুষের সহায়তায় যশোর আইসিইউ’র কিছুটা মুখ দেখতে পেলেও ৬৪ জেলার সকলে দেখতে পায়নি।
আমাদের পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের করুণ অবস্থা দেখলে সকলের কান্না চলে আসছে। আইসিইউ ও অক্সিজেনের হাহাকার পড়ে গিয়েছে। আমাদেরও কি সেই অবস্থা হবে- না আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নেব ? ৬৪ জেলায় আইসিইউ ও পর্যান্ত অক্সিজেন রাখবো ? ভারতে চিকিৎসা নিতে যেয়ে আমাদের যে ভাইরা করোনায় বেনাপোণ বন্দর দিয়ে দেশে যশোর ২৫০ বেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এনে ভর্তি করার পর তারা পালিয়ে গিয়েছিল। তারা উদ্ধার হওয়ার পূর্ব পর্যান্ত কাদের সাথে মিশেসে, আর কাদের সংত্রাসিত করেছে, তাকি আমরা জানি? তাদের সকলকে উদ্ধার করা গেয়েছে কি? এ ব্যার্থতার দায়ভার কাদের? তাদের এই জাতীয় হিনতার সাজা দেওয়া হয়েছে? কেভিড নিয়ন্ত্রন সমস্বয়ং কমিটির বক্তব্য কি জনগণ জানতে চায়। প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয় করে করোনার জন্য তৈরি হাসপাতাল এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা নিয়ে নয়ছয় করে কাউকে কাউকে কোটিপতি হতে দেখছি,কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করতেও দেখছি।
আমরা অবিলম্বে চিকিৎসা খাতে লুটপাট ও বিদেশে পাচারহওয়া টাকা উদ্ধার করে নতুন নতুন হাসপাতাল, আইসিইউ,পর্যাপ্ত অক্সিজেন সহ চিকিৎসার অবকাঠামো গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি। করোনার দ্বিতীয় ধাপ বলে দিচ্ছে সংক্রমণ পরিহার করতে না পারলে করোনার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। তাই প্রথম থেকেই আমরা কার্যকর লকডাউন দাবি করে আসছি। কিন্তু লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হলে মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। লকডাউনের প্রথম দফায় লুটপাট, দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতি হওয়ার পরও সাধারণ মানুষ যৎসামান্য অনুদান পেয়েছিলো। দ্বিতীয় দফার করোনার লকডাউনের সময়কালে হতদরিদ্র মানুষকে কোন অনুদান দেয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত। আমরা শুনতে পেলাম হতদরিদ্র মানুষের জন্য করোনাকালীন সময়ে সরকার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু এক এস আলম গ্রুপের ৩ হাজার ১শ’ ৭০ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে দিয়েছে সরকার। আমরা দাবি করছি- এই জাতীয় ঋণ আদায় করে করোনা মোকাবেলায় দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলা হোক। লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দরিদ্র মানুষদের পরিবার প্রতি খাদ্য মাসে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হোক। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এস আলম গ্রুপ কর্তৃক বাঁশখালীর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বকেয়া বেতন চাওয়ায় শ্রমিকদের গুলি করে হত্যার বিচার, আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিকদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে এই খুনি এস আলম গ্রুপকে ক্ষমা করে দেয়া ৩ হাজার ১শ’ ৭০ কোটি টাকা অবিলম্বে আদায়ের দাবি করছি।
প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে করোনার জন্য তৈরি জরুরি হাসপাতাল হাওয়া করে দেয়া বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরদের নিকট থেকে আদায় সহ তাদের পাচার ও আত্মসাৎ করা সকল সম্পদ এখনই উদ্ধার করা হোক। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধার এতিম কন্যা মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে সায়েম সোবহান আনভীরকে অবিলম্বে আটক ও বিচারের আওতায় আনা হোক। অন্যথায় বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোর সহ সারাদেশে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।