Type to search

সংসারের ঘানি টানতে শিশু হাসানুর বই ছেড়ে ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরল

অভয়নগর

সংসারের ঘানি টানতে শিশু হাসানুর বই ছেড়ে ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরল

মিঠুন দত্ত
পিতা অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় শিশু হাসানুর’র স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। যে বয়সে তার বই নিয়ে স্কুল/ মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা। সেই বয়সে তার ভ্যানের হাতোল ধরতে হলো। হটাৎ করে তার পিতা স্টোক করে প্যারালাইসে আক্রান্ত হওয়ায় তার জীবনের এই ছন্দ পতন হলো।
হাসানুরের বয়স ১২ বছর। তার পিতার নাম আশরাফুল ইসলাম। বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বাঁশতলা গ্রামে। পেশায় তিনি একজন চায়ের দোকানী। তার দুই মেয়ে এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। তারা শ^শুর বাড়িতে থেকে স্বামী সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ছেলে হাসানুর কে নিয়ে তার সংসার ভালই চলছিলো। কয়েক বছর আগে সে পরিবার নিয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পোড়াবাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করে। সে এখানে এসেও চায়ের দোকানদারি করতো। ছেলে হাসানুর এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসায় পড়তো। হাসানুর লেখাপড়া করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলো।
এর মধ্যে তার পিতা স্টোক করে শরীর প্যারালাইস্ট হয়ে যায়। তার সংসারে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। পিতার সংসারের হাল ধরতে শিশু হাসানুরের কর্মে নেমে পড়তে হয়েছে। তার পরিবার ধার দেনা করে হাসানুরকে একটি ইজি ভ্যান কিনে দিয়েছে। হাসানুর সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্যান নিয়ে। নওয়াপাড়া এলাকায় ভ্যান চালিয়ে সে অসুস্থ্য পিতার চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করে ও বাকি টাকা দিয়ে কোন মতে তাদের সংসার চলে।
এক সাক্ষাতকারে হাসানুর জানান, সকলা ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যান চালিয়ে সে প্রতিদিন তিন থেকে চারশত টাকা আয় করে। সে বয়সে ছোট বলে তার ভ্যানে লোক উঠতে আপত্তি করে। তার আয় করা টাকা থেকে পিতার চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন প্রায় দেড়শত টাকা ব্যয় হয়। বাকি টাকা দিয়ে তাদের সংসার চালে। সংসারে সে তার মা ও অসুস্থ্য পিতা রয়েছে। যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চলে। তার স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে সে মানুষের মতো মানুষ হবে। সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু পিতা অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ায় তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে।