Type to search

রমজানেই রহমত রমজানেই ক্ষমা

ধর্ম

রমজানেই রহমত রমজানেই ক্ষমা

মাওঃ মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম

রমজান হিজরি তথা আরবী বছরের ৯ম মাস। হিজরী সনের দ্বিতীয় বছরে রোজা ফরজ হয়। মহান আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করে দেয়া হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীনবীদের অনুসারীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। এ থেকে আশাকরা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুনাবলী সৃষ্টি হয়ে যাবে  (সুরা বাকারাÑ১৮৩)।  রুগ্ন ও মুসাফির বাদে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নরÑনারীর ওপর রোজা ফরজ অর্থাৎ রোজা রাখা বাধ্যতামূলক। মহান আল্লাহ বলেন, কাজেই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাসের সাক্ষাৎ পাবে তার জন্য এই সম্পূর্ণ মাসটিতে রোজা রাখা অপরিহার্য (সুরা বাকারাÑ১৮৭)।
পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারকে মেনে নিতে হয় কঠিন কষ্ট ও নিয়মানুবর্তিতা। এটা শুরু হয় সাহরী খাওয়ার মাধ্যমে। অর্ধ রাত থেকে মসজিদের মাইকে  ঘোষণা হতে থাকে সাহরী খেয়ে নিন আর মাত্র ÑÑÑÑÑঘ্ণ্টা / মিনিট বাকি আছে। রোজদার ঘোষণা শুনার সাথে সাথেই মধুর ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠে। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী কেঊ পূর্ণ পেট কেঊ আবার অর্ধপেট খেয়ে সাহরী শেষ করে। রাসুল (স.) বলেন, “তোমরা সাহরি খাও, কেননা তাতে বরকত রয়েছে”।(বুখারি ও মুসলিম)।  সাহরীর পর পরই ফজরের নামাজ। মাসজিদের মাইক থেকে আওয়াজ আসে “আছছলাতু খায়রুম মিনান নাওম” অর্থাৎ ঘুম হতে নামাজ ঊত্তম। রোজদার চলে যায় মাসজিদে, আদায় করে ফজরের নামাজ। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম।  তার মাঝে আদায় করে নেয় জোহর ও আছরের নামাজ। এরপর আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ “ইফতারি”। রাসুল (স.) বলেন. “রোজাদারের জন্য রয়েছে দুটি আনন্দ একটি হলো ইফতারির সময় অন্যটি হলো তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়”। (বুখারি ও মুসলিম)।  মৃতপ্রায় চারাগাছ পানি পেলে যেমন নতুন জীবন ফিরে পায়, তেমনি রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করার সাথে সাথে শরীরে  ফিরে পায় পূর্ণ উদ্দাম।

সতেজ শরীরে আদায় করে এশার নামাজ সাথে বিশ রাকাত অতিরিক্ত তারাবির নামাজ। কেঊ কেঊ আবার তাহাজ্জুদের নামাজও আদায় করে থাকে। এতকষ্ট ও নিয়মাবর্তিতার মধ্যে রোজাদর অনুভব করে অনাবিল  আনন্দ ও শান্তি। এটাই হলো রোজাদারের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ হতে রহমত বা করুনা। যেটা তাকে ঘিরে রাখে গোটা রমজান মাস। রোজাদারের কষ্টের প্রতিদান হলো মহান আল্লাহর পক্ষ হতে ক্ষমা। রাসুল (স.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ছওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা পালন করে, তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ছওয়াবের প্রতাশায় রমজান মাসে ইবাদাতের মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ করে, তার অতীতের সকল অপরাধ ক্ষমা করা হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ছওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদর (ভাগ্যরজনীতে) ইবাদাতে মগ্ন থেকে রাত্রি জাগরণ করে, তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হয়  (বুখারি ও মুসলিম)। তাই আসুন রোজা রেখে  আমরা মহান আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের চেষ্টা করি।

মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।