Type to search

নড়াইল সরকারী মহিলা কলেজের অন্যায় অনিয়ম দূর করে নিয়মের মধ্যে এনেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষক পরিষদ

শিক্ষা

নড়াইল সরকারী মহিলা কলেজের অন্যায় অনিয়ম দূর করে নিয়মের মধ্যে এনেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষক পরিষদ

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল সরকারী মহিলা কলেজের দীর্ঘদিনের অন্যায় অনিয়ম দূর করে নিয়মের মধ্যে আনতে শুরু করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আকবর আহম্মদ ও কলেজের শিক্ষক পরিষদ।
জানা গেছে গত ১২ জুলাই মোঃ আকবর আহম্মদ নড়াইল সরকারী মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্¦ গ্রহন করেন। দায়িত্¦ নেওয়ার পর থেকে শিক্ষক পরিষদ, সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও কলেজ হোস্টেলের ছাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মত বিনিময় করে যে সকল অনিয়ম অন্যায় ছিল তা দুর করে কলেজকে একটি সুন্দর মনোরম পরিবেশের মধ্যে আনতে সক্ষম হয়েছেন।


ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মোঃ আকবর আহম্মদের গুরুত্¦পূর্ন উল্লেখযোগ্য কাজসমূহ হলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বন্টননীতিমালা বহাল করা, হোস্টেলে অনিয়ম দূরীকরনসহ উন্ননমূলক কাজ করা, জমি অধিকরণ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা,সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা,পদ সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধিকরন,কলেজে অনার্স চালুসহ শূন্য পদসমূহের পদায়নের জন্য নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তুজার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ সুত্রে জানা গেছে বিগত ০৬.১০.২০১৮ ইং তারিখে প্রফেসর ড.মোঃ মাহবুবুর রহমান অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্¦ নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় কলেজে অন্যায় অনিয়ম দূর্নীতি। যদিও একাধিক মিডিয়ায় সেই সময়ে নিউজ হয়েছিল কিন্তু অন্যায় অনিয়ম দূর্নীতি দূর হয়েছিলনা।
বিভিন্ন মিডিয়ার নিউজ ও কলেজের মেয়ে ও অভিবাবকদের কাছ থেকে জানা গেছে,সাবেক অধ্যক্ষ যে সকল অন্যায় অনিয়ম দূর্নীতি করেছেন তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন পরিপত্রের বন্টননীতি পরিবর্তন, কলেজের বিভিন্ন ধরনের গাছ কাটা,ভ’য়া বিল ভাউচার করা,কলেজ হোস্টেলের ছাত্রীদের খাবারের বাজার মেয়েদের থেকে নিয়ে অস্থায়ী পুরুষ কর্মচারীকে দিয়ে করানো, পুরুষ কর্মচারীকে রাতে কলেজে থাকতে দেওয়া,নিজেও কলেজেকে আবাসিক হিসাবে ব্যবহার করা,শিক্ষক,কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অসম্মান জনক আচরন ইত্যাদি।
সাবেক অধ্যক্ষ মহোদয় বন্টননীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী না করে নিজের ইচ্ছামত করেছিলেন যাতে তিনি বন্টনের সিংহভাগ টাকা নিজে হাতিয়ে নিতে পারেন।
কলেজের হোস্টেলের মেয়েরা জানান,আমাদের খাবারের বাজার আগে আমাদের হোস্টেলে থাকা আপুরা করতো। তখন আপুরা নিজেদের পছন্দমতো খেতে পারতো হিসাব ও তাদের কাছে থাকতো। কিন্ত যখন থেকে অস্থায়ী পুরুষ কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হলো তখন থেকেই আপুদের নানান অসুবিধা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে আমাদের ও হচ্ছে।
মেয়েদের হোস্টেলে পুরুষ কর্মচারী ঘনঘন যাওয়া আসা আমাদের আপত্তি আছে আগের আপুদের ও ছিল। এ ব্যাপারে আপুরা ও তাদের অভিবাবকেরা একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন সমাধান পাননি। বরং মেয়েদের ও অভিবাবকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাজার করতে চাইনা মর্মে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এ অনিয়মের পরিবর্তন হওয়ায় আমরা ভীষন খুশি হয়েছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আকবর আহম্মদ স্যার আমাদের হোস্টেলের অনিয়ম গুলো দূর করে আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন এজন্য স্যারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
প্রধান সহকারী শেখ আব্দুল আলীম বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আকবর আহমেদ স্যার যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত নিয়মিত অফিসে আসেন এবং অফিস ও ক্লাস তদারকি করেন। তাছাড়া কলেজের জমি অধিগ্রহণ, কলেজের জমিতে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ ও কলেজের শূন্য পদ পূরন এবং ছাত্রী নিবাসের সমস্যার সমূহ দূরীকরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি লোহাগাড়া সরকারি আদর্শ কলেজে ১৬/১০/২০১৯ ইং তারিখ থেকে ৫/১০/২০২১ ইং তারিখ পর্যন্ত সুনাম ও দৃড়তার সহিত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক কর্মচারী কর্মকর্তা ছাত্রনেত্রীবৃন্দ ও এলাকার শুধীজন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অবগত আছেন।
শিক্ষক পরিষদের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ও হোস্টেল সুপার সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আছিয়া আক্তার বলেন,ভালো কাজ করতে হলে বেশি সময় লাগেনা,লাগে আন্তরিকতা এবং ইচ্ছা যেটা আমাদের কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আকবর আহম্মদ স্যারের আছে। এবং যেটা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
শিক্ষক পরিষদের কোষাধাক্ষ ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মাহমুদুর রহমান বলেন, এখন থেকে কলেজ হোস্টেলের ছাত্রীরা তাদের দৈনন্দিন বাজারের সকল হিসাব নিয়মিত প্রতিদিন খাতায় দেখতে পারবে। কারন এখন থেকে দৈনন্দিন জমা খরচের হিসাব খাতায় লেখা থাকবে। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আকবর আহম্মদ স্যারের আন্তরিকতায়।
শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ নাজমুল হুসাইন রনি বলেন, বন্টননীতি পরিবর্তন করায় সকল স্যাররা সন্তুষ্ট হয়েছেন। কারন কাজের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে করে সকলে তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাবেন। বিভিন্ন আর্থিক কমিটিতে শিক্ষকবৃন্দের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণসহ শিক্ষক বৃন্দের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জমি অধিকরণ সহ বর্তমান সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতে উন্নতির ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আকবর আহম্মদ বলেন,একজন অধ্যক্ষ বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনেক দায়িত্ব। সেটা আমি সঠিকভাবে ন্যয়নীতির সাথে পালন করতে চেষ্টা করছি আগে ও করেছি। দূর্নীতি দেখলে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে আমি স্বস্থি পাইনা। সেই জায়গা থেকেই আমার এ অবস্থান। আর এই কলেজের প্রতি আমার দর্বলতা বেশি কারন এই কলেজে আমার প্রথম চাকুরী শুরু হয়। আমি লোহাগড়া সরকারী আদর্শ কলেজে দুই বছর দায়িত্¦ে ছিলাম। সেখানে ও দৃড়তার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। সেখানে অনেক বাধা ছিল। তারপরও একটা অন্যায় কাজও হতে দেয়নি। যে কারনে মাননীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তুজা ফোন করে প্রশংসা করেছিলেন। আমি মনে করি লোহাগড়া সরকারী আদর্শ কলেজে আরও কাজ করার ছিল। আমার মনের কষ্ট সেটা। যদি সুযোগ পাই আমার অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করতে চাই।