Type to search

নড়াইলের তাঁরক গোঁসাইয়ের বাড়ি মতুয়া অনুসারীদের হরিবোল ধ্বনিতে মুখরিত

ধর্ম

নড়াইলের তাঁরক গোঁসাইয়ের বাড়ি মতুয়া অনুসারীদের হরিবোল ধ্বনিতে মুখরিত

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
নড়াইলের তাঁরক গোঁসাইয়ের ১০৮তম তীরোধান দিবসে জয় ঢংকার ছান্দসিক শব্দ আর হাজার হাজার মতুয়া। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর গ্রামের ‘গোঁসাই বাড়ি’ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী তীর্থক্ষেত্র। গোঁসাইবাড়ি দেশের মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে অতি পরিচিত ও পূজনীয় নাম। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে লোহাগড়ার জয়পুর সাধক কবি তাঁরক গোঁসাইয়ের ১০৮তম তীরোধান দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে লোহাগড়ার জয়পুর কবিধামে দুদিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।
এমন কোনো মতুয়া খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি লোহাগড়ার জয়পুর গ্রামের গোঁসাই বাড়ি দর্শন করেননি। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জীবন্ত কিংবদন্তি এই গোঁসাই বাড়ি। জয় ঢংকার ছান্দসিক শব্দ আর হাজার হাজার মতুয়া অনুসারীদের হরিবোল ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে জয়পুর কবিধাম। এ বছর লক্ষাধিক মতুয়া অনুসারী কবিধামে উপস্থিত হয়েছেন বলে আয়োজকরা ধারণা করছেন।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, সাধক পুরুষ তাঁরক গোঁসাই নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়পুর গ্রামে বাংলা ১২৫২ সালের ১৫ অগ্রহায়ণ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম কাশীনাথ সরকার, মা অনপূর্ণা দেবী। কাশীনাথ ছিলেন একজন পেশাদার কবিয়াল। কবি গান গেয়েই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন।
সন্তান না হওয়ায় পুত্রেষ্টী যজ্ঞ করে তিনি পুত্র সন্তান তাঁরককে লাভ করেন। পার্শবর্তী ছাতড়া গ্রামের পাঠশালায় তিনি শিক্ষা লাভ করেন। তাঁরক গোঁসাই বহু অলৌকিক কর্মের অধিকারী ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি বাবার মতো কবিগান রপ্ত করেন এবং পরবর্তীতে কবিগান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
তিনি কবিগান পরিবেশনের পাশাপাশি কবিতা লিখতেন। তার রচিত প্রায় ৮শ কবিতা রয়েছে। তিনি মতুয়া ধর্ম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ‘হরিলীলামৃত’ গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। বাংলা ১৩২১ সালের ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশী তিথিতে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। জয়পুর পরশ মনি মহাশ্বশানে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
শ্রী তাঁরক চাঁদ মতুয়া সংঘের কতৃপক্ষ জানান, তাঁরক গোঁসাইয়ের ১০৮তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারি অধিবাস, ১৯ ফেব্রুয়ারি মহোৎসব, ২০ ফেব্রুয়ারি মীন মহোৎসব। তাঁরক গোঁসাইয়ের ১০৮তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কবিধাম সেজেছে অপরূপ সাজে।
এ দিকে, লক্ষ্মীপাশাস্থ শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা মন্দিরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রুপক মুখার্জী বলেন, তাঁরক গোঁসাইয়ের ১০৮তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে লক্ষ্মীপাশাস্থ শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা মন্দিরও জয়পুর পরশমনি মহাশ্বশ্মানের অনুরুপ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য আইনশৃঙ্গলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশা করছি সুন্দরভাবেই অনুষ্ঠান শেষ হবে।