Type to search

দুই সন্তানই প্রতিবন্ধী, জুটলো একটি চেয়ার

মনিরামপুর

দুই সন্তানই প্রতিবন্ধী, জুটলো একটি চেয়ার

 

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স : মণিরামপুরের চাকলা গ্রামের দিনমজুর হাফিজুর রহমান। তার দুই সন্তান সিয়াম (১০) ও ইভা (৬) জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তারা নড়তে-চড়তে পারে না। পারে না কথা বলতে; সোজা হয়ে বসতে। বাবা-মা যেখানে যেভাবে রাখেন, সেভাবেই থাকে তারা। সুস্থতার আশায় দুই সন্তানের জন্যে করেছেন অনেককিছুই। সব হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে এখন কষ্টের জীবন পরিবারটির।
জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহীদ দিবস উপলক্ষে প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন উপজেলা প্রশাসন। খবর পেয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে উপজেলা চত্বরে হাজির হন হাফিজুর। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হয় তাকে। এখন দুই সন্তানকে এক চেয়ারে বসিয়ে ঘোরাফেরা করাতে হবে।
হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ এক ছেলে, এক মেয়ে দেছেন। জন্ম থেকে ওরা দুইজনই প্রতিবন্ধী। ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি। যা কিছু ছিল বিক্রি করে ৫৩ লাখ টাকা খরচ করিছি। ভালো করতি পারিনি। এখন সাড়ে তিন শতক ভিটেয় খুপড়িতে থাকি। মাঠে কাজে যাতি পারলি হাড়ি চড়ে!’
অসহায় এই বাবা জানান, ওরা নড়াচড়া করতে পারে না; কথাও বলতে পারে না। তবে কিছু বললে বুঝতে পারে। বিছানায় কাপড় চোপড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারে। স্ত্রী শাহানারা বেগম আর তিনি ওদের খাওয়া গোসল- সব করান।
তিনি বলেন, ‘বড়টার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড আছে। ছোটটার নেই। স্থানীয় অটিস্টিক স্কুলে দুই সন্তানকে ভর্তি করিয়েছি। সেখান থেকে তালিকা উপজেলায় পাঠিয়েছে। একটা হুইল চেয়ার পাইছি।’
উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম, ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান, এসিল্যান্ড পলাশ দেবনাথ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান প্রমুখ হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারের পাশাপাশি খাবার পেয়েছে শিশুরা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ দেবনাথ বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মণিরামপুরে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য দশটি হুইল চেয়ার এসেছে। স্বল্পতার কারণে চাকলার দুই প্রতিবন্ধী ভাইবোনকে একটি দেওয়া হয়েছে। সামনে বরাদ্দ এলে অপরজনকে দেওয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, ‘দুই ভাই-বোনের মধ্যে একজন চেয়ার পাওয়ার বিষয়টি খেয়াল করিনি। সামনে বরাদ্দ এলে ওই পরিবারটিকে আরো একটি চেয়ার দেবো।’ সূত্র, সুবর্ণভূমি