Type to search

কেশবপুরে একাধিক বাড়িতে অজ্ঞানপার্টি চুরি।  ৫ সদস্য আটক

কেশবপুর

কেশবপুরে একাধিক বাড়িতে অজ্ঞানপার্টি চুরি।  ৫ সদস্য আটক

কেশবপুরে একাধিক বাড়িতে অজ্ঞানপার্টি চুরি।   ৫ সদস্য আটক। চোরাই মালামালসহ চেতনা নাশক ঔষধ মিশ্রিত হলুদের গুড়া উদ্ধার
জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর (যশোর) থেকে।
যশোরের কেশবপুর উপজেলা এলাকায় একাধিক বাড়ির লোকজনকে অজ্ঞান করে চুরির ঘটনায় অজ্ঞানপার্টির ০৫ সদস্য আটক আটক করেছে পুলিশ। এ সময়ে চোরাই মালামালসহ অজ্ঞান করার চেতনা নাশক হলুদের গুড়া উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কেশবপুর উপজেলা অজ্ঞান পাটি একাধিক বাড়ির লোকজনকে অচেতন করে নগদ টাকা স্বর্ণালংকার লুট করেছে। ২১ আগষ্ট সোমবার রাতে কেশবপুর সদর ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের মৃতঃ মোহাম্মাদ হোসেন হাওলাদারের ছেলে এইচ এম রাসেল(৪৩) একতলা বসত বাড়ীতে প্রবেশ করে খাবারের সাথে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে বাড়ির সকল সদস্যকে অজ্ঞান করে। বাড়ির সকল সদস্য অচেতন হয়ে পড়লে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ৩০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি সোনা লুট করে নিয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে এইচ
এম রাসেল (৪৩) তার স্ত্রী রহিমা খাতুন(৩১) ও একমাত্র মেয়ে রোদনী তাবাচ্ছুম(১৪) ঘরের মালামাল এলোমেলো ও নিজেরা অসুস্থতা বোধ করলে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তারা বর্তমানে আশংকা মুক্তা রয়েছেন। একই দিন রাতে পাশ্ববর্তী বালিয়াডাঙ্গা গ্রামস্থ কালিপদ সেনের ছেলে নিখিল সেনের একতলা বসত বাড়িতে প্রবেশ করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা খাবারের মধ্যে চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করে বাড়ির মালামাল লুটপাটের চেষ্টা করে। এঘটনায় বাড়ির সদস্য, নিখিল সেন (৪৫) তার স্ত্রী পিংকি সেন (৩২) ও তার মেয়ে প্রান্তী সেন অচেতন হয়ে পড়ে। মালামাল ক্ষয়ক্ষতি না হলেও তারা বর্তমানে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে ও তাদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত। এছাড়াও, গত ১৬ আগষ্ট উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের সরাপপুর গ্রামের আনন্দ মোহন মল্লিকের বাড়িতে বাড়ির সদস্যদের অচেতন করে প্রায় ৩ ভরি সোনা ও ২২ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এঘটনায়  আনন্দ মোহন মল্লিক (৬০), মাতা ঝর্না রানী মল্লিক ও পিসি করুনা রানী(৫৫) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আসুস্থ আনন্দ মোহন মল্লিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এরমধ্যে গত ৮ আগষ্ট কোমরপোল গ্রামের আশরাফ আলী খাঁর ছেলে বিল্লাল হোসেনের বাড়ি থেকে ১ জোড়া কানের দুল, ১ জোড়া বালাসহ নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা, গত ১৬ আগষ্ট জাহানপুর গ্রামের চিত্তরঞ্জন দাসের পুত্র গোপিনাথ দাসের বাড়ি থেকে ১ টি অটো ভ্যান, অনুমান ২/৩ ভরি ওজনের রুপার অলংকার, গায়ে মাখা ১৫/১৬টি সাবান সহ ৭০ হাজার টাকা, বাগদাহ গ্রামের খলিলুর রহমানের পুত্র আবুল কালামের বাড়ি থেকে ২টি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় অজ্ঞান পাটি।
কেশবপুর থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম গত ২২ আগষ্ট বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পাটির ৫ সদস্যকে আটকসহ লুট করা মালামাল উদ্ধার করেছে। আটককৃতরা হলো অভয়নগর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের মাসুদ মোল্লার ছেলে ও কেশবপুর পৌর এলাকার সাবদিয়া নাজির হোসেন এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া
তরিকুল ইসলাম (২২), কেশবপুর পৌরসভার ভোগতি গ্রামের আনিছুর বিশ্বাসের ছেলে মোঃ জনি রহমান (২২), মনিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত আকাম সরদারের ছেলে   সাইদুল ইসলাম (৩৬), মনিরামপুর উপজেলার হালসা গ্রামের চাঁদন্দালী মোড়লের ছেলে  ইসরাইল হোসেন (৩৫), কেশবপুর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সুমন হোসেন (২৫)।
পুলিশ তাদের নিকট হতে চুরিকৃত মালামালের মধ্যে ১ ভরি স্বর্ণালংকার, ২ ভরি রুপার অলংকার, ১টি ভ্যান গাড়ি, ১টি মোটরসাইকেল, ২টি মোবাইল, ১২ টি সাবান ও চেতনা নাশক ঔষধ মিশ্রিত হলুদের গুড়া উদ্ধার করেছেন।