১৪ জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর প্রভাব, আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

অপরাজেয়বাংলা ডেক্স : বুধবার (২৬ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এছাড়া ২৭ উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ নাইম গওহার ওয়ারা বলেন, ইয়াসের প্রভাবে কাল সন্ধ্যা থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। রাতে বহু এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। প্রচুর মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পূর্ণিমার কারণে গতকাল যেমন জোয়ারের পানির উচ্চতা বেশি হয়েছিল। বুধবার রাতেও তাই হবে। ফলে নতুন করে বহু এলাকা প্লাবিত হবার শঙ্কা রয়েই গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন সাগরের পানি থাকে অনেক বেশি লবণাক্ত। ফলে এই জমা পানি বের করে দেওয়ার জায়গা বানাতে হবে। একইসঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। নইলে প্রকট আকারে ডায়রিয়া দেখা দেওয়ার ভয় আছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে এর মধ্যে দেশের নিম্নাঞ্চলসহ উপকূলীয় এলাকার প্লাবিত হয়ে গেছে। গতরাতেই অনেক এলাকার বাঁধ ভেঙে গেছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে প্লাবিত হতে পারে আরও অনেক এলাকা।
ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত ও নষ্ট হয়েছে । বিশেষ করে কুতুবদিয়া ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। বাগেরহাটের মোংলার প্রায় সাড়ে ৮শ’ পরিবার জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে জোয়ারের পানি পাঁচ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রবল জোয়ারে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখালি ও নাপিতখালিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বালির বস্তা দিয়ে তা বন্ধের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা জানান, ইয়াসের প্রভাবে এমনিতে এখন উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি, দমকা হাওয়াসহ জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে। আজকে রাত পর্যন্ত একই অবস্থা থাকবে। প্লাবিত এলাকাগুলোতে পানি আরও বাড়তে পারে। নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আগামীকালও এর প্রভাব থাকবে। শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৮টি যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী জরুরি উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তিন স্তরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।