Type to search

টিকিট বিক্রি শুরুর পরই বন্ধ

জাতীয়

টিকিট বিক্রি শুরুর পরই বন্ধ

১৯৯২ সাল থেকে কম্পিউটারে প্রিন্ট করে আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। এরপর টিকিট বিক্রির কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে অনলাইন ও অ্যাপভিত্তিক করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে টিকিট বিক্রির কাজটি করে আসছিল সিএনএস বিডি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের ৭৭টি স্টেশনে অনলাইন, অ্যাপ এবং কাউন্টারে সমন্বিতভাবে কম্পিউটারে প্রিন্ট করা টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি টিকিট বিক্রির কাজের নতুন দায়িত্ব পায় সহজ ডটকম নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। নতুন দায়িত্ব হস্তান্তরের সুবিধার্থে ২০ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইন, অ্যাপ ও কম্পিউটারে প্রিন্ট করা টিকিট বিক্রি বন্ধ ছিল। গতকাল শনিবার অনলাইনে টিকিট বিক্রি চালুর উদ্দেশ্যে একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা প্রকাশ করে রেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে টিকিট বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ওয়েবসাইট অকার্যকর হয়ে পড়লে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে। আর ১৯ মার্চ পর্যন্ত অ্যাপে টিকিট কাটা সম্ভব হলেও গতকাল তা বন্ধ ছিল। এ পরিস্থিতিতে শুধু কাউন্টারের মাধ্যমে টিকিট কিনতে হাজার হাজার মানুষ কমলাপুর, বিমানবন্দর, চট্টগ্রামসহ বড় স্টেশনগুলোতে ভিড় করেন।

গতকাল রাতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী এনায়েতুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগে তিনি অ্যাপে টিকিট কাটতেন। গতকাল অ্যাপ বন্ধ পেয়ে তিনি রেলের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট কাটার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিকেলে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে কয়েক হাজার মানুষের লাইন দেখতে পান। পরে বাসে সিলেটের পথে রওনা দেন।

■ টিকিট বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বদল। ■ সফটওয়্যার–হার্ডওয়্যার বুঝিয়ে দেয়নি আগের প্রতিষ্ঠান। ■ আগের অ্যাপের মালিকানা রেলের নেই। ■ বছরে গড়ে ১০ কোটি টিকিট বিক্রি হয়। এর মধ্যে অর্ধেক অনলাইনভিত্তিক বিক্রি হয়।

অনলাইনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম কবে সচল হবে সে বিষয়টি কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। রেলের সূত্রে জানা গেছে, সহজ ডটকম জানিয়েছে, অনলাইনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শিগগিরই তারা চালু করতে পারবে না। যদিও বর্তমানে অর্ধেক টিকিট অনলাইনে বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই রেল কর্তৃপক্ষ সহজ ডটকমকে লিখিতভাবে সমস্যার বিষয়ে জানাতে বলেছে। অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা না গেলে শতভাগ টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে বিক্রি হবে। যদিও এতে গ্রাহকের ভোগান্তি কমবে না।

সহজ ডটকমের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএনএস রেলের অ্যাপ তাদের বুঝিয়ে দেয়নি। এ জন্য অ্যাপে টিকিট বিক্রি বন্ধ আছে। আর অনলাইনে টিকিট বিক্রির সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সিএনএস শেষ সময় বুঝিয়ে দেয়। এরপরও সহজ ডটকম নিজেদের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার বসিয়ে অনলাইন টিকিট কার্যক্রম চালু করে। কিন্তু গতকাল মিনিটে ২২ লাখ হিট বা ভিজিট হওয়ার পর সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বলেন, অনলাইনে যে সব ভিজিট হয়েছে, এর অনেকগুলো বিদেশ থেকে হয়েছে। এ জন্য সাইবার হামলা হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

বছরে রেলে গড়ে ১০ কোটি টিকিট বিক্রি হয়। এর মধ্যে প্রায় আট কোটি টিকিট কম্পিউটারে প্রিন্ট করা যার অর্ধেক বিক্রি হয় অনলাইনে ও মুঠোফোন অ্যাপের মাধ্যমে। বাকি অর্ধেক কাউন্টার থেকে কাটতে হয়। সিএনএস কাউন্টারে বিক্রি করা প্রতিটি টিকিট থেকে পেত ২ টাকা ৯৯ পয়সা। আর অনলাইনে বিক্রি হওয়া প্রতিটি টিকিট থেকে তারা নিয়েছে ছয় টাকার মতো। অন্যদিকে সহজ ডটকম প্রতিটি টিকিট বিক্রির বিনিময়ে পাচ্ছে মাত্র ২৫ পয়সা। তবে প্রতিষ্ঠানটি রেলের স্থাপনা ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন ভাড়া বাবদ পাঁচ বছরে ২৫ কোটি টাকা আয় করবে বলে চুক্তি করেছে।

অনলাইন ও অ্যাপে টিকিট বিক্রির বিষয়ে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী প্রথম আলোকে বলেন, আগের অ্যাপটির মালিকানা ছিল সিএনএসের। এ জন্য নতুন অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টিকিট বিক্রির অনলাইন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে আজ (রোববার) সহজ ডটকমের সঙ্গে বিস্তারিত বৈঠক হবে।

সূত্র : প্রথম আলো ;