Type to search

১০ জানুয়ারী রাখাল রাজার ঘরে ফেরা

জাতীয়

১০ জানুয়ারী রাখাল রাজার ঘরে ফেরা

লুৎফুননেছা
ছোট একটা দেশ ছিল,সেই দেশে সোনার ফসল ফলত কিন্ত সেদেশের লোক গুলো খুব সরল আর অতিথি পরায়ন। তারা সহজে মানুষকে ভালবাসত ও বিশ^াস করত । তাই তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে একের পর এক ভিন দেশীরা সম্পদ লুন্ঠন করত,তাদের ছিলো অগাধ দেশপ্রেম কিন্ত তাদের সেই দেশ প্রেমকে কাজে লাগানোর জন্য নেতা ছিলোনা। তারা শোষিত হতে হতে যখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছে ছিলো তখন তাদের মধ্যে এক জন জ্যোতির্ময় পুরুষের আর্বিভাব ঘটল। সেই জ্যোতির্ময় পুরুষকে আমরা কি বলব। ধর তাকে আমরা রাজাবলে সম্বোধন করি। সেই রাজা এই একদিন তাদের সংঘবদ্ধ করলো এবং দেশের মুক্তির জন্য তাদের লড়াইয়ের ডাক দিলো। সেই দেশের জনগন সেই জ্যোতির্ময়ের দিকে তাকিয়ে তাকে বিশ^াস করলো তাঁর ডাকে আপামর জন সাধারণ সাড়া দিলো । জ্যোতির্ময় বলল, তোমাদের যা আছে তাই ািনয়ে তোমরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়।

 

তখন দেশ মাতৃকার ডাকে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমি এতক্ষন কার কথা বলছি জান। সে হচ্ছে টুঙ্গীপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান (খোকা) তাঁর সেই ঐতিহাসিক ৭ই র্মাচের ভাষন। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তিনি ৭ই মার্চে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিপুল জনসমাবেশ তার ভাষণ পেশ করলেন। কাদের বিরুদ্ধে, আমাদের যুদ্ধ করতে বললেন। সেই পাকিস্থানী না- পাক শাষক গোষ্টির বিরুদ্ধে । এতক্ষনে বলছি সেই দেশটার নাম বাংলাদেশ। সেই দেশটাকে শোষন করতো পাক-পাকিস্থানীরা। আমরা ৭১ সালে নির্বাচনে বিপলু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্বেও না-পাক শাষক ক্ষমতা ছাড়তে রাজি ছিলনা। এরপর আলোচনার বিপুল পরিমান না-পাক সেনা ২৫ শে মার্চের কালোরাতি ঢাকার সেনা নিবাস ভরে ফেলে। এবং আমাদের সেই জ্যোতির্ময় নেতাকে বন্ধী করে পাকিস্থানের কারাগারে রাখে,কিন্ত নেতা ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েদেন। সেটা প্রথমে চট্টগ্রাম কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়। এর আগে দেশবাসী নেতাকে ভালবেসে বঙ্গবন্ধু নামে ভ’ষিত করে২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনার কিছ’ক্ষন পরে পাকিস্থানী মিলিটারী কতৃক গ্রেফতারের সময় যারা ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার রোডের ৬৭৭ নাম্বার বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা সবাই সেদিন অশ্ররুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। বাংলার মাটি ও মানুষকে তিনি নিজের জীবনের অধিক ভালবেসে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ কালীন পাকিস্থানের কারান্তরালে অন্তরীন অবস্থায় যখন তার রুমের পাশে কবর খোড়া হয় তখনও তিনি বলেছিলেন আমার লাশটি বাংলাদেশের মাটিতে পাঠিয়ে দিও ,১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা দেওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্থানের পর্বত বেষ্ঠিত র্নিজন এলাকায় অবস্থিত মিয়াওয়ালী কারাগারে বন্দী রাখা হয়। কারান্তরালে একটানা দুইশত অষ্টাশী দিন পাকিস্থানী শাষক তাঁর উপর অমানবিক নির্যাতন করলেও তিনি নতি স্বীকার করেননি। এসময় ভারতের তৎকালিন প্রধান মন্ত্রী ইন্দ্রা গান্দি বাংলাদেশের স্বীকৃতি সহ বঙ্গবন্ধু মুক্তির জন্য বিশে^র বিভিন্ন দেশ সফর করেন। এবং বিশ^নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। এর ফলে না-পাক শাষক সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে । অবশেষে ৮ ই জানুয়ারী ১৯৭২ সালে তিনি মুক্তি পান। ঐ দিনে তিনি লন্ডন চলে যান। এবং বি বি সি বেতার কেন্দ্রে সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাৎকার দেন। অত:পর ৯তারিখ তিনি তার পরম বন্ধু ইন্দিরাজির সঙ্গে দিল্লীতে দেখা করতে যান। পরের দিন জানুয়ারী মাসের ১০ তারিখে স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন ,সেদিন দেশবাসি সেই বাংলার বুল বুল রাজাকে এক নজর দেখার জন্য বিমান বন্দরে ভীড় করে । যথাযথই সেদিন ৮ জানুয়ারী চাকলালা বিমান বন্দরে জুলফিকার আলী ভূট্টো বঙ্গবন্ধু কে বিদায় দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলো। ঘরমযঃরহমষব যধং ভষড়হি আমরা বলি শুধু নাইটিংগেলই নয় তিনি বাংলার বুলবুল পাখির রাজা। বাংলার সাড়ে সাত কোটি জনগনের মনের রাজা। তখন তো এত মত, এত দলও ছিলো না । সবাই তখন মুক্তিযোদ্ধা আর এর একজনই ছিল তার নির্দেশদাতা এবং তাদের মনের পরম রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তাই বলতে হয় ১০ জানুয়ারী বাংলার রাজাকে তারা মনের ঘরে স্থান করে দেয়। রাজার ঘরে ফেরা তাদের অনুভব কে অনন্য মহিমায় শীর্ষসুখের প্রশান্তি দিয়েছে।
লেখক
অবসরপ্রাপ্ত প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ইতিহাস বিদ
লুৎফুননেছা
০১৭১০৭৪৯৯৯২