Type to search

বিদ্রোহী চেয়ারম্যান কামরান সিকদারের হুকুমে ওয়ার্ড সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের উপর নৃসংশ্য হামলার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

নড়াইল

বিদ্রোহী চেয়ারম্যান কামরান সিকদারের হুকুমে ওয়ার্ড সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের উপর নৃসংশ্য হামলার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান কামরান সিকদারের হুকুমে ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক সেনা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের উপর নৃসংশ্য হামলার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১০টায় লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার আকবর হোসেনের বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন,বাবলু শেখ,মোঃ রাসেল শেখ,মোঃ সোহাগ শেখ প্রমূখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, গত ২৫মে আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য দুই লক্ষ টাকা নিয়ে বাজারে যেয়ে দোকানে বসে চা খাব এমন সময় আমাকে হত্যা করার জন্য বিদ্রোহী চেয়ারম্যান কামরান সিকদারের নির্দেশে মিরাজ,মশিয়ার, সাদ্দাম,তারিক,শাহিনুর,পিকুল,মফিজার,ইসরাফিল ও মাহমুদ আমার উপর নৃসংশ হামলা চালায় । এই হামলায় আমি প্রানে বেচে গেলেও আমার দুটি পা ভেঙ্গে যায় ও টাকা নিয়ে যায় । আমি পঙ্গু হয়ে আছি। আমি যখন হামলার শিকার হয়ে যশোর চিকিৎসাধীন ছিলাম তখন আমার কাছে না শুনে কামরান চেয়ারম্যান যারা আমাকে মারেনি তাদের আসামী করে আমার ভাইয়ের ছেলে বাবলুকে দিয়ে মামলা দেয়। পরে আবার বাবলুকে ভয়ভীতি দিয়ে সে মামলাও তুলতে বাধ্য করে। জীবন বাজি রেখে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে দেশ স্বাধীন করে কি পেলাম। আমি একজন সাবেক সেনা সদস্য,বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বর্তমান ওয়ার্ড আওয়ামীলগের সভাপতি হয়েও বিচার পাচ্ছিনা। আমার অপরাধ আমি বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে নৌকা মার্কার প্রার্থীর নির্বাচন করেছিলাম। আমার উপর হামলার বিচার চেয়ে আমার এলাকার লোকজন মানববন্ধন করতে গেলে কামরান চেয়ারম্যান তার বাহিনী দিয়ে ভয় দেখিয়ে সেইসব লোকজনকে নিয়ে যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের ছেলে মোঃ সোহাগ শেখ বলেন, আমার আব্বু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমার আব্বুকে বাজারে গেলে মেরে পা ভেঙে দিছে। সাথে থাকা নিলু শেখকে ও মারে। আমি ঢাকায় থাকি আব্বুকে মারার খবর পেয়ে যশোর চিকিৎসাধীন আব্বুকে দেখতে আসি। ২৫ তারিখে হামলার পর আমরা ব্যস্ত আব্বুকে নিয়ে এদিকে ওরা ২৫ তারিখেই মামলা থানায় দেওয়া হয়ে গেছে। আমরা আব্বুর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকাকালে চাচাতো ভাই বাবলুকে দিয়ে আমাদের অনুমতি ছাড়াই যারা আমার আব্বুকে ও নিলু ভ্ইাকে যারা মেরেছে তারাই মামলা দেয় নিরাপরাধ ব্যক্তিদের আসামী করে। কি আজব ব্যাপার, আমার বাবাকে মারার মামলার বাদি হব আমরা কিন্তুু সেটা হলোনা। আবার মামলা তুলে ফেলা হলো আমাদের না জানিয়ে। আমার আব্বুকে যারা প্রকৃত হামলা চালিয়ে পঙ্গু করেছে তাদের বিচার চাই। মামলা করতে চাই। কিন্তু তানা হয়ে উল্টো আমরা কাউন্টার মিথ্যা মামলার আসামী হয়েছি।
নিলু শেখ বলেন, আমি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন চাচা নৌকা মার্কার নির্বাচন করার কারনে আমাদের উপর এ হামলা চালায়। কিন্তু আশ্চর্য্য বিষয় হলো আমাদের উপর হামলার মামলা হলো আমরা কিছুই জানিনা। আবার সেই মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেলো সেটাও কিছুই জানিনা। কোন দুনিয়ায় বসবাস করছি বুজতেছিনা। আমরা হামলার শিকার হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার সময় লাহুড়িয়ায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ আসলে আমি তিনাকে জানাই কামরান চেয়ারম্যানের হুকুমে আমাদের উপর এ হামলা চালায়। এর আগেও কামরান সিকদার ও মাসুম সিকদার আমার আব্বাকে মারে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। প্রকৃত ঘটনা হলো আমাদেরকে মেরে ফেলতে পারলে গরীবের হক মেরে খেতে পারে ও কামরান চেয়ারম্যানের রাজনীতির ফয়দা হাসিল হয়। তারা বলে এমপি আমাদের লোক আমাদের কিছুই হবে,তোদের কোন মামলা ওসি নেবেনা।
মামলার বাদি বাবলু শেখ বলেন, কামরান চেয়ারম্যানের বাহিনী প্রতিদিন আমার বাড়িতে যেয়ে হুমকি দিতো অত্যাচার নির্যাতন করতো। মামলা না তুললে আমাকে বাড়িতে আসতে দিচ্ছিলনা। আমার বাড়ির হাস মুরগি টিউবওয়ে ও অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছিলো। এ ছাড়াও আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। যে কারনে আমি মামলা তুলতে বাধ্য হয়েছি।
লাহুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরান সিকদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। প্রকৃত ঘটনা নৌকা মার্কার প্রার্থী আনিসুজ্জামানের কাছে জানতে পারবেন। তবে সত্যিটা হলো হাটবাজারের ইজারার টাকা নিয়ে এ হামলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। হামলায় যে পরিমান জখম হয়েছে তাতে ডাক্তার গ্রিভিয়াস সার্টিফিকেট দিয়েছে। বাদী এই মামলা প্রত্যাহার করলেই হবেনা যতক্ষন পর্যন্ত জখমী ম্যাজেস্ট্রেট বা বিচারকের সামনে না বলবে। আর আমরা দুই একদিনের ভীতর চার্জসিট আদালতে পেশ করবো।
নড়াইলের পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধার উপর এরকম হামলা নির্যাতন বরদাস্ত করা হবেনা। অতি উৎসায়ী হয়ে মামলার বাদী হলেই হবেনা। তার নিকট আত্বীয় না হলে এটা আইন দেখবে। ভিকটিম থানায় বা আমাদের কাছে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।