চারদিনের ব্যবধানে সিদ্ধান্ত পাল্টেছে তিন দফা। বিদেশফেরত সবার জন্য বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থেকে সরে এখন হোম কোয়ারেন্টিনে ভরসা রাখছে সরকার। এ সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী অভিহিত করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দেয়া অসম্ভব।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে হু হু করে বাড়ছে রোগী। প্রায় পরিপূর্ণ হাসপাতালের শয্যা। আইসিইউ সংকট জাগাচ্ছে গত বছরের ভীতি। দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর সারি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঊনত্রিশে মার্চ, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের চৌদ্দ দিন বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের নির্দেশনা জারি করে সরকার। পরদিনই এ সিদ্ধান্ত বদলে কেবল যুক্তরাজ্যসহ ইওরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়। আর অন্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা থাকবে হোম কোয়ারেন্টিনে।
দু’দিনের মাথায় পাল্টে যায় এ সিদ্ধান্তও। এবারের পরিকল্পনা- লক্ষণ-উপসর্গ না থাকলে হোম কোয়ারেন্টিন, আর থাকলে সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে নিজ খরচে চৌদ্দ দিনের আইসোলেশন।
বারবার সিদ্ধান্ত বদল। তারপর বিদেশফেরত সবার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থেকে সরে হোম কোয়ারেন্টিনে ভরসা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ যেন আত্মবিনাশের আয়োজন।
বিএসএমএমইউ লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন-আল-মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ‘যদি বারবার সিন্ধান্ত পরিবর্তন করেন তাহলে মানুষের মধ্যে একটা ইপ্রেসন হয় যে এখানে নীতি নির্ধারণ যারা করছেন তারাই দোলাচলে আছে। হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যর্থতার কারনেই কিন্তু বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এসেছিল।’
যুক্তরাজ্য ফেরতদের নিয়েও হচ্ছে একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত। প্রথমে বলা হলো- যুক্তরাজ্যসহ ইওরোপ ফেরৎ সবার ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক। পরে যুক্তরাজ্য বাদে পুরো ইওরোপ এবং বিভিন্ন মহাদেশের বারোটি দেশ থেকে যাত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তুলে নেয়া হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনাও।
মহামারী মোকাবিলায় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সংশ্লিষ্টদের কাছে না থাকলে সামনে আরও দুর্দিন অপেক্ষা করছে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।সূত্র, DBC বাংলা