Type to search

নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচন কালো টাকা ছড়াছড়ির অভিযোগ

নড়াইল

নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচন কালো টাকা ছড়াছড়ির অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে কালো টাকা ছড়াছড়ির অভিযোগ উঠেছে। কোনো এক
চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউপি-চেয়ারম্যানকে
ঢাকায় নিয়ে ভুরিভোজ করিয়ে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ
তুললেও তারা কৌশলী হয়ে কথা বলছেন। এ নির্বাচনে কোনো কোনো ইউপি মেম্বরের
টার্গেট ১ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। তবে আ’লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা
জানিয়েছেন, তারা দলের বাইরে যাবেননা। এদিকে কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন
এলাকায় জেলা পরিষদ সদস্য প্রার্থীরা ভোটারদের বিরিয়ানির প্যাকে নিয়ে
সৌজন্য সাক্ষাত করছেন এবং সাথে গোপনে একটি খাম ধরিয়ে দিচ্ছেন।
নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান
পদে জেলা আ’লীগের সভাপতি, সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক, আ’লীগ সমর্থিত
প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস (আনারস), লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের
সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ
ফয়জুল আমির লিটু (মোটর সাইকেল) ও সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক লোহাগড়া
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ সুলতান মাহমুদ (চশমা)
প্রতিকে নির্বাচন করছেন। এছাড়া ১নং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৪জন, ২নং
সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩জন, এছাড়া সাধারণ ১নংওয়ার্ডে (কালিয়া উপজেলা) ৩
জন, ২নং ওয়ার্ডে (নড়াইল সদর) ৫জন ও ৩নং ওয়ার্ডে (লোহাগড়া উপজেলা) ৪জন
প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদরের এক ইউপি মেম্বর গত বুধবার বলেছিলেন, তার
টার্গেট ১ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত পেয়েছেন সাড়ে ২০ হাজার টাকা।
সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হিটু জানিয়েছেন,
আ’লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আমাদের ডেকেছিলেন, সদরের ১৩টি
ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মিলে তাকে বলে দিয়েছি, আমাদের কোনো টাকা-পয়সা
লাগবে না। দলের বাইরে যাব না। তবে মেম্বররা কি করবে সেটা বলতে পারবোনা।
আ’লীগ বিদ্রাহী প্রার্থী মোঃ সুলতান মাহমুদ অভিযোগে বলেছেন,
দু’চেয়ারম্যান প্রার্থী কালো টাকা ছড়াচ্ছেন। কোন এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর
পক্ষে লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মেম্বর-চেয়ারম্যানদের নিয়ে ঢাকায়
নিয়ে ভুরিভোজ করিয়ে মেম্বরদের ২০ এবং চেয়ারম্যানদের ৫০ হাজার টাকা
দিয়েছেন। আবার কোন এক প্রার্থীও লোকজন মেম্বর-চেয়ারম্যানদের সম পরিমান
টাকা দিচ্ছেন। বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। আমার টাকা পয়সা নেই। তাছাড়া
ভোটারটা কালো টাকার কাছে মাথা নত করবে না। জনগন অপর দু’প্রাথীকে চেনে। এক
প্রার্থী চরিত্রহীন, ভূমিদস্যু ও উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কোটি
কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আর এক প্রার্থী সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক
থাকাকালীন সময়ে তার সাথে মানুষ ঠিকমতো দেখাই করতে পারেনি। ভোটাররা আমাকে
ভালোবেসে ভোট দেবে বলে মনে করেন। এর আগে গত ৪ অক্টোবর তিনি সাংবাদিকদের
জানিয়েছিলেন, প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোস, প্রত্যেক ইউনিয়নে গিয়ে
মেম্বরদের এক একজনকে ৪ হাজার করে টাকা দিয়েছেন।
তবে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোস ভোটারদের টাকা দেওয়ার বিষয়
প্রসঙ্গে বলেন, কোন কোনো প্রার্থী রাতের আধারে লাল গাড়ী, কালো গাড়ী, সাদা
গাড়ীতে করে কালো টাকা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তোমরা তাদের ধরো। আমি আওয়ামী লীগ
করি। আওয়ামী লীগ জনগনের জন্য কাজ করে। আমি কাওকে টাকাও দেই নি, আর দেব
না। জনগন আমাকে আমার সততা ও দক্ষতার জন্য আমাকে বিজয়ী করবেন।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুকে কয়েকবার ফোন দিলে তিনি ফোন
রিসিভ করেননি। পরে ম্যাসেজ দিলেও কোনো সাড়া দেননি।
নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৫৫২জন। ১৭ অক্টোবর ভোটাররা ৪টি
কেন্দ্রে  ইভিএম-এর মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন
জানান, প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন এবং সিসি টিভি বসানো হয়েছে। টাকা
ছড়ানোর কোনো ধরনের অভিযোগ আমার জানা নেই।