Type to search

স্বাধীনতা দিবসে  যেমন খুশ তেমন সাজো তে  ডিসপ্লে বেগম খালেদা জিয়ার প্রদর্শন, প্রধান শিক্ষককে শোকজ

নড়াইল

স্বাধীনতা দিবসে  যেমন খুশ তেমন সাজো তে  ডিসপ্লে বেগম খালেদা জিয়ার প্রদর্শন, প্রধান শিক্ষককে শোকজ

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভিন্নধর্মী ডিসপ্লে প্রদর্শন করায়
একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন লোহাগড়া
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে
উপজেলা প্রশাসনের চিঠি ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতীকী এক
শিক্ষার্থীর ছবি পোস্ট করে চলছে নানা সমালোচনা।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী স্বাক্ষরিত
চিঠিতে জানা যায়, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে লোহাগড়া উপজেলা
প্রশাসন ওই দিন সকালে মোল্লার মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ‘দি
লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ নামের একটি বেসরকারি স্কুল ক্ষুদে
শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। ডিসপ্লেটি মহান স্বাধীনতা দিবসের
অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং এ নিয়ে জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা
প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. তসলিম উদ্দিনের কাছে
ভিন্নধর্মী ডিসপ্লে প্রদর্শনের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে
লিখিত বক্তব্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।

চিঠির বিষয়ে দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. তসলিম
উদ্দিন  বলেন, আমরা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের স্বতঃস্ফূর্ত
অংশগ্রহণে একটি ডিসপ্লে প্রদর্শন করি। ডিসপ্লেটিতে বেগম রোকেয়া, বীর
মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন
শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন
এরশাদ,  বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, নারী ফুটবলার-ক্রিকেটার সহ ১০ থেকে ১২ জন
বিশিষ্ট নারীর প্রতিকৃতি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে প্রদর্শন করি আমরা।
তিনি আরও বলেন, পরদিন ২৭ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক
চিঠিতে ডিসপ্লে প্রদর্শনের ব্যাখা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।  আমি চিঠির
ব্যাখ্যায় দুঃখ প্রকাশ করে পরবর্তীতে দিবস অসঙ্গতিপূর্ণ এ ধরনের কোনো
কার্যকলাপ করবো না বলে অঙ্গীকার করেছি।
কেন এমন আয়োজন করেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন,মহান স্বাধীনতা
দিবস উদযাপন পর্ষদের উপজেলা মিটিংয়ে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। এতটা ভেবে দেখিনি
এটা স্বাধীনতা দিবস ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত কিনা। সমাজে নারীদের ভূমিকা
বুঝাতে এমন আয়োজন আমরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে
অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ
সম্পর্কিত ডিসপ্লে প্রদর্শনের  নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। নারী জাগরণের
ডিসপ্লেটি নারী দিবস বা অন্য দিবস সম্পর্কিত বিষয় অনুকূল হলেও স্বাধীনতা
দিবসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাখ্যা
চেয়ে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল।
প্রতীকী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রদর্শনের জন্য এমন চিঠি  দিয়েছেন কিনা-
জানতে চাইলে তিনি বলেন,  এখানে তো শুধু বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নন, মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেগম রোকেয়াসহ নারী জাগরণের অনেক মহীয়সী নারীর
প্রতীকী দিয়ে ডিসপ্লে করেছিল বিদ্যালয়টি। কোনো নির্দিষ্ট নেত্রীর কারণে নয়,
স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি।