তৃতীয় দিনের মতো ডিসি অফিস চত্বরে গণ অবস্থান কর্মসূচি,ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির

ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে দীর্ঘসূত্রিতা- জনমনে চরম ক্ষোভ
প্রিয়ব্রত ধর:
গত ২০১৭ সালে জাতীয় কর্মশালায় গৃহীত ৯৬ শতাংশ মানুষের মতামত অনুযায়ী বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালুর বিষয়ে মতামত দিলেও উক্ত প্রকল্প গ্রহন না করে পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ জন্য নেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত ও প্রহসনমূলক সেচ প্রকল্প গ্রহন করতে যাচ্ছে।
ফলে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বানে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টানা তৃতীয় দিনের মতো ডিসি অফিস চত্বরে গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।

আর এই অবস্থান কর্মসূচি সফল করার জন্য ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুরসহ যশোর শহরের আশপাশ এলাকার নারীপুরুষ ,ছাত্র-ছাত্রীসহ সুধীজনসহ বিভিন্ন দলীয় প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহন করছেন।
কিন্তু আজকে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির ডাকা অবস্থান কর্মসূচিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, যশোর সমার্থন জানিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং আন্দোলনকারীদের উজ্জীবিত করার জন্য গণ সংগীত পরিবেশন করেন।ফলে অবস্থান কর্মসূচি অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ও ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির মনোহরপুর আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক শেখর চন্দ্র বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, এই অঞ্চলের জল নিষ্কাশনের কার্যকর পদ্ধতি টিআরএম (জোয়ারাধার) প্রকল্প বাদ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্প চালু করেছে। অবিলম্বে সেচ প্রকল্প বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালে জাতীয় কর্মশালায় গৃহীত ৯৬ শতাংশ মানুষের মতামত ছিল কপালিয়া বিলে টিআরএম চালুর। কিন্তু সেই দাবি অগ্রাহ্য করে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদী হত্যা করতে সেচ প্রকল্প চালু করেছে। যা ভবদহ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনে কোনও কাজে আসবে না। আমরা চাই বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করা হোক, আমডাঙ্গা খাল সংস্কার ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ছয় দফা দাবি মেনে নেওয়া হোক।

আজকের অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, চৈতন্য কুমার পাল, অধ্যাপক অনিল বিশ্বাস, শিবপদ বিশ্বাসসহ আরও অনেকই বক্তৃতা করেন।
অবস্থান কর্মসূচির প্রস্তাবিত ৬ দফা দাবি-প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ জন্য নেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত ও প্রহসনমূলক সেচ প্রকল্প বাতিল; ক্রাস প্রোগ্রামে মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিল কপালিয়া টিআরএম চালু; ভবদহ স্লুইস গেটের ভাটিতে পাইলট চ্যানেল করার জন্য ৫-৬টি স্কেভেটর চালিয়ে ভবদহ মোহনার নদী মুক্তেশ্বরী,শ্রী টেকা,হরি নদীর বুকে সঞ্চিত পলি অপসরণ এবং ২১,৯ও৮ ভেন্টের গেটসমূহ উঠানামার ব্যবস্থা করা; ভবদহ জনপদের ফসল, বাড়িঘরসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির ক্ষতিপূরণ , কৃষি ঋণ মওকুফ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; আমডাঙ্গা খাল সংস্কার কাজে প্রি-ওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক জনসমক্ষে টাঙিয়ে কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।