Type to search

টানা চার দিন যাবৎ ভবদহবাসীর ডিসি অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন

যশোর

টানা চার দিন যাবৎ ভবদহবাসীর ডিসি অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন

স্টাফ রিপোৃটার: জলাবদ্ধতা দূর করাসহ ছয় দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো যশোর কালেক্টরেট ভবনের (ডিসি অফিস) সামনে অবস্থান নিয়েছেন ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার বাসিন্দারা। ওই কর্মসূচিতে আসা ভবদহ এলাকার হরেকৃষ্ণ সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চান না ভবদহের জলাবদ্ধতার অবসান হোক। তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আমাদের দুরবস্থার কথা কখনোই জানাননি। তারা চান এই জল দেখিয়ে রিলিফ এনে আত্মসাৎ করতে।’

বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ভবদহবাসী মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পৌঁছান। এ সময় পানি সরিয়ে জীবন বাঁচানোর স্লোগান দেওয়া হয়।

পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক চৈতন্য পালের অভিযোগ, ‘ভবদহ অঞ্চলের ব্যাপক এলাকা জলমগ্ন। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা সবখানেই পানি। সম্প্রতি জলে ডুবে দুই শিশুসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ড আর কিছু ঘের মালিকের আঁতাতের ফলে জলাবদ্ধতার অবসান হচ্ছে না।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘পাউবো ভবদহ এলাকায় সেচ প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে এর কোনও সুফল আমরা পাইনি। নতুন করে আরও ৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যাতে লুটপাটের বড় বড় খাত রয়েছে। আমাদের দাবি, অবিলম্বে অবিবেচনাপ্রসূত এই প্রকল্প বাতিল করা হোক।’

ওই এলাকার বাসিন্দা চৈতন্য পাল বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে পাঁচ-ছয়টি এক্সাভেটর লাগানো হলে কৃষকরা সেখানে চাষাবাদ করতে পারবেন। তারা অন্তত দুটো মোটা ভাত খেয়ে আর মোটা কাপড় পরে বাঁচতে পারবেন।’

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অন্যদের মধ্যে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, শিবপদ বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, নীলকণ্ঠ মণ্ডল, কানু বিশ্বাস, প্রণব বিশ্বাস, পলাশ মোল্লা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির ছয় দফা দাবি হলো–১. সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান, নদী হত্যা, জনপদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা, ফসল-বসতবাড়ি, জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। ২. প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ অবিবেচনাপ্রসূত প্রকল্প বাতিল। ৩. ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিল কপালিয়ায় টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু। ৪. আমডাঙ্গা খাল সংস্কার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন ও কাজের স্বচ্ছতা আনতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর তদারকিতে সম্পন্ন করা। ৫. ভবদহ স্লুইসগেটের ভাটিতে পাইলট চ্যানেল করতে পাঁচ-ছয়টি এক্সাভেটর লাগানো। ৬. ২১, ৯ ও ৮ ভেন্টের গেট ওঠানামা করানোর ব্যবস্থা এবং এই জনপদের মানুষের ক্ষতিপূরণ, কৃষিঋণ মওকুফ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।