Type to search

লৈঙ্গিক স্বীকৃতি পেলেও হিজড়াদের জীবনমানে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি

জাতীয়

লৈঙ্গিক স্বীকৃতি পেলেও হিজড়াদের জীবনমানে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স
লৈঙ্গিক স্বীকৃতির ৬ বছরেও হিজড়াদের জীবনমানে তেমন পরিবর্তন হয়নি, তাদের উন্নয়নে সরকারের দেয়া সহায়তা যথেষ্ট নয়।

সবক্ষেত্রে বঞ্চণার শিকার এ জনগোষ্ঠীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন পাল্টায়নি, তেমনি তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগও যথেষ্ঠ নয়।

দিনের শুরুটায় হয় পেটের দায়ের চিন্তায়। বেড়োতে হবে ছল্লা বা ঢোলে। দোকানে, দোকানে বা রাস্তায় ঘুরে টাকা তোলা এবং বাচ্চা নাচানোর সংস্কৃতিকেই বলা হয় ছল্লা বা ঢোল। ভোর থেকেই হিজড়া ডেরায় শুরু হয় তারই প্রস্তুতি।

সাজগোজ শেষে এলাকাভেদে সপ্তাহের চারদিন তারা জড়ো হন নির্দিষ্ট একটি স্থানে। সেখান থেকে হিজড়া গুরুমায়েরা শিষ্যদের কাজ বন্টন করে দেন। এরপর ভাগভাগ হয়ে সবাই বেরিয়ে পড়েন ছল্লায়। দিনশেষে যা পাওয়া যায় তাই ভাগবাটোয়ারা করে নেন গুরুশিষ্যরা।

চারদিনের আয় দিয়ে চলতে হয় সাতদিন। সঙ্গে রয়েছে বাড়িভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ। ফলে কোনোরকমে টেনেটুনে চলতে হয় তাদের। পেটের দায়ে কেউ কেউ নামেন যৌনপেশায়ও। হিজড়াদের অনেকেই জানান, তাদেরও এভাবে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতে ভালো লাগে না। অনেকেই বলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে। কিন্তু, কাজের ব্যবস্থা করবে কে? তবে, সরকারিভাবে তাদের কাজের বন্দোবস্ত করলে জীবনধারন অনেকটাই সহজ হতো বলেও আশা প্রকাশ করেন হিজড়ারা।

তাদের কেউ কেউ চিরাচরিত সংস্কৃতি বাদ দিয়ে বাসে, ট্রাফিক সিগন্যালে টাকা তোলেন বা জড়িয়ে পড়ে ছোট-খাঁটো অপরাধে। যা নিয়ে আপত্তি আছে হিজড়াদের মধ্যেই। অল্প বয়সেই পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া হিজরা জনগোষ্ঠীকে সহজে কেউ বাড়ি ভাড়াও দিতে চাননা। দিলেও ভাড়া হাঁকান আর দশজনের তুলনায় বেশি।

হিজড়াদের সম্পর্কে সমাজের অধিকাংশের ধারণা নেতিবাচক। দেখলেই দুহাত তফাৎ চলে যাওয়ায় যেন অভ্যাস হয়ে গেছে সাধারণের। কিন্তু যারা হিজড়াদের সঙ্গে একই অঙ্গণে থাকেন, অবসর সময় কাটান তাদের অভিজ্ঞতা কি?

হিজড়াদের সঙ্গে বসবাস করা প্রতিবেশীরা জানান, তারা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন। কোনও সমস্যা হয় না।

অবশ্য হিজড়াদের নিয়ে মানুষের চিন্তাধারার যে একেবারেই পরিবর্তন ঘটছে না তা নয়।

২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর ট্রাফিক পুলিশ, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্নজায়গায় হিজড়াদের নিয়োগ দেয়ার আশ্বাস বা প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা শেষ পর্যন্ত আর এগোয়নি।

কারও কারও ব্যক্তি উদ্যোগ এবং দুয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশের দু’চারজন হিজড়ার জীবনমানে পরিবর্তন এলেও সার্বিকভাবে তারা রয়ে গেছেন প্রান্তিক হিসেবেই।সূত্র, DBC বাংলা