নড়াইলের লোহাগড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুইজন আটক

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া সদর ইউনিয়নের কামঠানা গ্রামে ৮ম শ্রেণির
এক স্কুল ছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত
থাকার অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে। ধর্ষণের শিকার ওই স্কুল ছাত্রী কে
গুরুতর অসুস্থ্য ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া হাসপাতালে
নিয়ে আসে। পরর্বীতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম
শ্রেণির ছাত্রী কামঠানা গ্রামের নিজাম শেখের মেয়ে গত বুধবার (২৬ অক্টোবর)
রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ছোট ভাইকে পাশে চাচার বাড়ীতে আনতে যায়। এ সময়
পাশ্ববর্তী বেলটিয়া গ্রামের সাফায়েত মোল্যার ছেলে বখাটে রিফাত মোল্যা
(১৮) এবং কোবাদ মোল্যার ছেলে হাবিবুর রহমান (১৬) ওই মেয়েকে ঝাপটিয়ে ধরে
মুখ বেধে মধুমতি নদীর পাড়ে হ্যাভেন পার্কের ভিতর নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ
করে।
এ সময় মেয়েটি বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার মা লোকজন নিয়ে খোঁজাখুঁজি করতে
থাকে। এক পর্যায়ে দেখতে পাই হ্যাভেন পার্কের ভিতরে দুটি ছেলে তার মেয়েকে
ধর্ষণ করছে। এই অবস্থায় এক জন ধর্ষককে স্থানীয়রা হাতে নাতে ধরে ফেলে
অপরজন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পালিয়ে যাওয়া অপরজন কে সকালে লোহাগড়া থানা
পুলিশ আটক করে।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে ওই ছাত্রী তাঁর চাচার বাড়ি
থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে দুই তরুণ ওই ছাত্রীর মুখ
বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে স্থানীয় একটি মাঠে নিয়ে এক তরুণ ওই
ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং অন্য তরুণ তাঁকে সহায়তা করেন।
এদিকে ওই ছাত্রী বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু
করে। একপর্যায়ে তাঁরা ওই মাঠে গেলে দুই তরুণ সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার
চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন সেখানে হাতেনাতে একজনকে ধরে ফেলে। তবে
আরেক জন সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা–পুলিশ ওই তরুণকে আটক করে। পরে ওই তরুণের দেওয়া
তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আরেক তরুণকেও আটক করে পুলিশ। ঘটনার পর ওই
স্কুলছাত্রীকে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে
তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক
খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ওই ছাত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে এখানে নিয়ে আসা
হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওই ছাত্রীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও শারীরিক
পরীক্ষার জন্য রাতেই নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ওই
ঘটনায় এলাকাবাসী এক তরুণকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পরে ওই তরুণের
দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরেক তরণকেও আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার
প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন বলেন, নারী নির্যাতনে পুলিশ
জিরোটলারেন্স পন্থা অবলম্বন করবে। বিধায় অষ্টম শ্রেনীর শিশুছাত্রীকে
নির্যাতনে পুলিশ কাউকে ছাড় দেবেনা।