নড়াইলের লোহাগড়ায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান ও কর্মকর্তা কর্তৃক হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে পল্লি বিদ্যুতের লাইনম্যান,কর্মকর্তাদের কর্তৃক হয়রানী,বিনা কারনে
প্রতিবন্ধি মোঃ খায়রুজ্জামানের বিদ্যুতের মিটার খুলে নিয়ে যাওয়া এবং তার
ভাইয়ের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং মিথ্যা মামলায় ফাসানোর হুমকির
ভয়ভীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার
ঝিকিরা বাজারে ২রা সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০ টায় ভুক্তভোগী পরিবার ও
এলাকাবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, লক্ষিপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্র্ডের ইউপি সদস্য
মোঃ শেখ কামাল, ৫নং ওয়ার্র্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আজিজুর রহমান,সাবেক ইউপি
সদস্য মোঃ সেকেন্দার আলী, সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম মোল্যা,মোঃ
মিজানুর রহমান,ব্যবসায়ী মোঃ তোহিদুর রহমান, প্রতিবন্ধি মোঃ
খায়রুজ্জামান,জাহানারা বেবী,আলেয়া, হিরা প্রমূখ।
প্রতিবন্ধি মোঃ খায়রুজ্জামান বলেন,গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে পল্লি
বিদ্যুতের লাইনম্যানরা আমাদের বাড়িতে ভাইয়ের মিটারের লাইন ঠিক করার সময়
আমার মিটারের বিদ্যুতের তার লুসটা ঠিক করে দিতে বললে তারা বলেন আমরা যে
দুইটির অভিযোগ পেয়েছি সে গুলোই ঠিক করবো। আর আপনার টা যদি ঠিক করাতে হয়
তাহলে পাঁচশত টাকা দিতে হবে। আমি তখন বলি আমি একজন প্রতিবন্ধি মানুষ টাকা
দিতে পারবোনা। আর কেন টাকা লাগবে। এ নিয়ে আমার সাথে তাদের বাগবিতন্ডা হলে
তারা আমার উপর ক্ষেপে যেয়ে উপর থেকেই অফিসে ফোন দিয়ে বলে আমাদেরকে মারছে
আপনারা অফিস থেকে আরো কর্মকর্তাদের নিয়ে আসেন। তারপর তারা এসে আমার
বিদ্যুতের মিটার খুলে নিয়ে যায়,ভাইয়ের মিটারের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন
করে এবং আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসানোর হুমকি দিয়ে যায়। আমাদের বাড়িতে
বিদ্যুুত না থাকায় আমাদের ১০৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ বাবা গোলাম সরোয়ার মোল্যা
গরমে সারারাত কষ্ট পায়। আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় সংসদ সদস্য ও
প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।
জাহানারা বেবী বলেন,আমার শশুরের বয়স ১০৫ বছর। লাইনম্যানদের বল্লাম আমাদের
বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবেননা। তবু তার শুুনলোনা। আমার শশুর গরমে
সহ্য করতে না পেরে সারারাত গরমে কষ্ট পেয়েছে। পরে মসজিদে আমার শশুরকে
রেখে এসেছি।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, পল্লি বিদ্যুতের লাইনম্যান, কর্মকর্তাদের কর্তৃক
আমরা প্রতিয়িত হয়রানী স্বীকার হচ্ছি। তাদের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে গেছি।
নতুন কোন বিদ্যুত সংযোগ নিতে গেলে আট থেকে দশ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়।
এছাড়া কোন বাড়িতে বিদ্যুত লাইনের সমস্যা হলে অভিযোগ দেওয়া হলে ২/৩ মাস
পরে পল্লি বিদ্যুতের লাইনম্যানরা বিদ্যুত লাইন ঠিক করতে আছে। সে সময়
তাদের পাঁচশত/ এক হাজার টাকা দিতে হয়। আর তারা সরেজমিনে মিটারের রিঢিং না
দেখেই অফিসে বসে ইচ্ছামত বিদ্যুত বিল করে পাঠায়। এ জন্য অনেকের মিটারে
অতিরিক্ত বিল আসে। অনেকে অতিরিক্ত বিল কেন হলে জানতে চাইলে বলে পরের মাসে
ঠিক করে দিব।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুত লক্ষীপাশা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল
ম্যানেজার (ডিজিএম) এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাহক খাইরুজ্জামান
বিদ্যুত অফিসের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। লাইনম্যানদের গায়ে হাত
তুলেছেন। আর লাইনম্যানরা টাকা চাইলে অফিসে অভিযোগ করতে পারতেন। তাদের
সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে হবে কেন ? সে কারনে পুলিশ দিয়ে মিটার খুলে এনছি।
এ ধরনের ঘটনার জন্য মিটার খোলা যায় কিনা জানতে চাইলে বলেন,আমার স্টাফদের
গায়ে হাত তুলবে আর আমি কি বসে থাকবো।
যশোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) বলেন, বিষয়টি
আমি জানিনা। খবর নিয়ে দেখি কি ঘটেছে। মিটার খোলার ঘটনা হলে অফিসে এসে মাফ
চাইলে দুএকদিনের ভীতর মিটার লাগানো হয়। টাকা কেন চাইবে। সমস্যা হলে
অফিসের লোক কাজ করে দিবে। আর এ বিষয়ে আমাদের ওখানের জোনাল অফিসে যেয়ে
আলোচনা করে সমাধান করেন। নিউজ কেন করবেন।