Type to search

নিচু করে নির্মাণ করায় টেকা সেতুর কাজ বন্ধ

অভয়নগর

নিচু করে নির্মাণ করায় টেকা সেতুর কাজ বন্ধ

ভবদহের টেকা সেতুর কাজ বন্ধ করলো বিআইডবিøউটিএ

প্রিয়ব্রত ধর
যশোরের অভয়নগরে উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন ও মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের সীমানাঘেঁষে টেকা নদীর ওপর পুরোনো সেতুটি ভেঙে নির্মাণাধীন গার্ডার সেতুটি নীতিমালা অনুযায়ী নির্মাণ না করায় তা স্থগিত করল বিআইডবিøউটিএ এর কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সেতুটি পরিদর্শণ শেষে নীতিমালা না মেনে সেতুটি করায় তা বন্ধের নির্দেশ দেয়।

 

জানা গেছে টেকা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজে নকশা অনুয়ায়ী পানি থেকে সেতুর উচ্চতা খুব কম। এর নিচ দিয়ে নদীতে নৌযান চলাচল করতে পারবে না। সেতুটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)। মনিরামপুরের এলজিইডি সূত্র জানায়, ৫১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের পুরোনো সেতু ভেঙে একই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর দৈর্ঘ্য হবে ৯৬ মিটার ও প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার এবং উচ্চতা ২ দশমিক ৪৭ মিটার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫৭ লাখ ২৮ হাজার ৫০৭ টাকা। নির্মাণকাজ পেয়েছে যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড শামীম চাকলাদার (জেভি)। গত বছরের ১৩ অক্টোবর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। আগামী বছরের ৭ মার্চ এর কাজ শেষ হওয়ার কথা।

বিআইডবিøউটি এর(বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) একটি দল আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেতুটি পরিদর্শন করেছেন। দুপুর একটার দিকে দলটি টেকারঘাট এলাকায় আসেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দলটি সেতু এলাকায় নদী ঘুরে ঘুরে দেখেন। তাঁরা এ সময় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন। পরিদর্শন দলে ছিলেন বিআইডবিøউটিএ, খুলনার পশ্চিম বদ্বীপ শাখার যুগ্ম পরিচালক (নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন) আশরাফ হোসেন এবং উপপরিচালক মাসুদ পারভেজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস। এ ছাড়া ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, কমিটির সদস্য শিবপদ বিশ^াস, অধ্যাপক অনিল বিশ^াস ও সাধন বিশ^াস উপস্থিত ছিলেন।
বিআইডবিøউটিএর ছাড়পত্র (নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স) না নেওয়া এবং নেভিগেশন মানদন্ড অনুযায়ী সেতু নির্মাণ না করায় দলটি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডবিøউটিএর ছাড়পত্র নেওয়ার পর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে দলটি এলজিইডিকে বলেছে।
ভবহদ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নের্তৃবৃন্দ বলেন, অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার মাঝামাঝি টেকার ঘাট এলাকায় টেকা নদীর ওপর সড়কসেতুটি এমনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে, যার নিচ দিয়ে বর্ষায় নৌকাও চলতে পারবে না। মনিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের অনিল বিশ্বাস বলেন, এই নদী দিয়ে জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের ২৭ বিলের জল সরে। জলাবদ্ধতা থাকায় কয়েকবছর বিলে ফসল নেই। অনেকে এই নদীতে নৌকায় করে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেতুটি এমনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে যে এর তলদেশ বিল থেকে উঁচু। সেতুটির উচ্চতাও কম। এর নিচ দিয়ে ডিঙি নৌকাও চলাচল করতে পারবে না।

বিআইডবিøউটিএ, খুলনার পশ্চিম বদ্বীপ শাখার যুগ্ম পরিচালক (নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন) আশরাফ হোসেন বলেন, নদ-নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু টেকারঘাট এলাকায় টেকা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। সেতুর উচ্চতা কম হওয়ায় নদীতে ছোট ও মাঝারি আকারের নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা পরিদর্শন করে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য মৌথিকভাবে এলজিইডিকে বলেছি। আগামী রোববার এলজিইডি যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দিয়ে বিয়য়টি জানানো হবে। বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হবে। নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হবে।