Type to search

চুয়াডাঙ্গার মৃত্যুশয্যা  বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চায় শরিয়ত উল্লাহ

জাতীয়

চুয়াডাঙ্গার মৃত্যুশয্যা  বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চায় শরিয়ত উল্লাহ

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা থেকে
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মৃত পিজিরি উদ্দীনের ছেলে বৃদ্ধ এবং অসুস্থ শরিয়ত উল্লাহ মৃত্যুশয্যায় দিন কাটাচ্ছে। তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় তার নাম অর্ন্তভুক্ত হয়নি। এমন অবস্থায় শরিয়ত উল্লাহ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত ও বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি তুলেছেন।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুর আগে থেকে শরিয়ত উল্লাহ (৯০) স্বাস্থ্য সহকারি পদে চাকরি করতেন ভারতের ২৪ পরগনাতে। পরে বাংলাদেশে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবায় স্বাস্থ্য সহকারি হিসেবে নিয়োজিত হোন। এরপর থেকে তিনি যুদ্ধ চলাকালে সকল মুুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিতভাবে চিকিৎসা প্রদান করেছেন। কিন্তু তবুও পাননি মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় তার নাম। গেল কয়েক দফায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করার পরও তিনি মুক্তিযোদ্ধা কি না সে তথ্যটিও জানতে পারেননি। তাই পরিবারের দাবি সুষ্ঠু তদন্ত করে শরিয়ত উল্লাহের বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি প্রদান করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
শরিয়ত উল্লাহ গত তিন বছর ধরে প্যারালাইস ও বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। এমন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে তিনি লড়াই করছেন। একই সঙ্গে তার বৃদ্ধ স্ত্রী মনোয়ারা বেগম একই রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। শরিয়ত উল্লাহ ও তার স্ত্রী এর প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকার চিকিৎসা খরচ করে তার পরিবারের সদস্যরা। আর তাই মৃত্যুর আগে থেকেই তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে চান।শরিয়ত উল্লাহের ছেলের  মানিকউজ্জামানের দাবি, ১৯৬৩ সালে থেকে তিনি স্বাস্থ্য সহকারি পদে চাকরিতে যোগদান করেন। এরপর ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ভারতের ২৪ পরগনাতে যান। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। যুদ্ধের জন্য যারা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতো তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দিতেন তিনি। এরপর যুদ্ধের শেষে মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত হয়নি। তাই মৃত্যর আগে থেকেই তিনি যেন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও নামে অর্ন্তভুক্ত করার জন্য দাবি করছি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করার পরও তার সুরহা মেলেনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোসেন বলেন, শরিয়ত উল্লাহ তিনি একজন প্রকৃত যোদ্ধা। যুদ্ধ চলাকালীন সময় আমাদের তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার যদি এই শরিয়ত উল্লাহকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত করে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সাদরে গ্রহণ করবে শরিয়ত উল্লাহকে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জহুরা বলেন, শরিয়ত উল্লাহ সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে থাকলে আমাদের কাছে আবেদন করতে হবে। এরপর যাচাই বাছাই করে আমরা মন্ত্রণালয়ে জানাবো হবে।