Type to search

কালিয়ায় ইউপি নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত আ.লীগের বর্ধিত সভা পণ্ড

জেলার সংবাদ

কালিয়ায় ইউপি নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত আ.লীগের বর্ধিত সভা পণ্ড

দলীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বর্ধিত সভা শুরু হওয়ার মুহূর্তে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হারুন উর রশিদ, কালিয়া পৌর মেয়র মো. ওহিদুজ্জামানসহ কয়েকজন নেতা। এ সময় সাংসদ বি এম কবিরুল হক সেখানে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে বসেন। সভা সঞ্চালনা করছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ।

একপর্যায়ে কৃষ্ণপদ ঘোষ মাইকে সাংসদকে মঞ্চে আসন গ্রহণের জন্য বলেন। তখনই বিষয়টি নিয়ে কৃষ্ণপদ ঘোষের সঙ্গে সাংসদের কথা-কাটাকাটি হয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সাংসদের সমর্থকেরা চেয়ার ভাঙচুর করেন। তখন মঞ্চ ছেড়ে নেতারা যাঁর যাঁর মতো চলে যান। ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খান বর্ধিত সভায় যোগ দিতে পথে ছিলেন।

ব্যানারে আমার নামটা পর্যন্ত রাখেনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে সেখানে উপস্থিত হয়ে সামনের সারিতে বসেছিলাম। আমি উত্তেজিত হইনি। মূলত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। এটা প্রকাশ হয়ে গেছে। এতে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা উত্তেজিত হয়ে চেয়ার-টেবিল ছুড়ে মেরেছে।

বি এম কবিরুল হক,সাংসদ, নড়াইল-১ (কালিয়া-নড়াইলের একাংশ) আসন

স্থানীয় লোকজন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ধিত সভার ব্যানারে ও আমন্ত্রণপত্রে সাংসদের নাম ছিল না। এতে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। তবে তাঁকে সভায় আসতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে লেখা ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস ও প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন মো. নিজাম উদ্দিন খান। সাংসদ বি এম কবিরুল হকের সঙ্গে কৃষ্ণপদ ঘোষ ও জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খানের রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষ্ণপদ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সভার শুরুতে সাংসদ সেখানে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে বসেন। সাংসদকে মঞ্চে আহ্বান করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে অশ্লীল গালাগাল করেন। উত্তেজিত হন। তেড়ে আসেন। তাঁর সমর্থকেরা সভাস্থলের চেয়ার ও কমিউনিটি সেন্টারের জানালা-দরজা ভাঙচুর করেন। আমাদের ওপর হামলা চালান। হামলায় মাউলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিলাস কুমার দাস আহত হয়েছেন।’

হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ বি এম কবিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যানারে আমার নামটা পর্যন্ত রাখেনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে সেখানে উপস্থিত হয়ে সামনের সারিতে বসেছিলাম। আমি উত্তেজিত হইনি। মূলত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন খান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। এটা প্রকাশ হয়ে গেছে। এতে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা উত্তেজিত হয়ে চেয়ার-টেবিল ছুড়ে মেরেছে।’

পূর্বপরিকল্পিতভবে সাংসদ কবিরুল হক সভায় হামলা করেছেন। একজন দলীয় সাংসদ হয়ে নেতা কৃষ্ণপদ ঘোষকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন।

নিজাম উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ

এ ঘটনার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাংসদের বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ কুন্ডু ও সরদার আলমগীর হোসেন, সদস্য মাহমুদুল হাসান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মলয় কুমার কুন্ডুসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিজাম উদ্দিন খান বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভবে সাংসদ কবিরুল হক সভায় হামলা করেছেন। একজন দলীয় সাংসদ হয়ে নেতা কৃষ্ণপদ ঘোষকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন। তিনি এভাবে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়েছেন। এসব বিষয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে জানানো হবে। ওই ঘটনা ঘটিয়ে তিনি এখন অবান্তর কথা বলছেন।’সূত্র,প্রথমআলো