Type to search

ইসলামী ব্যাংকের চৌগাছা শাখায় গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ

জেলার সংবাদ

ইসলামী ব্যাংকের চৌগাছা শাখায় গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ

 

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড যশোরের চৌগাছা শাখায় গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাহকরা রীতিমতো ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে এ অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান ঋণ নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে সাধারণ গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। ব্যাংকের ভিতরে দীর্ঘ লাইন থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক কর্মকর্তাদের হেয়ালিপনা লক্ষ্য করা যায়। পরিচিত প্রভাবশালী গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে সাধারণ গ্রাহকদের লাইনে দাড় করিয়ে ঐসব প্রভাবশালী গ্রাহকদের চেক সরাসরি ক্যাশ কাউন্টারের মধ্যে নিয়ে গিয়ে টাকা উত্তোলন করতে দেখা গেছে।

সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগ ব্যাংক ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমান ব্যাংকে যোগদান করার পর থেকে এ হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। এছাড়া ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ঋণ প্রদান কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের অবহেলা ও কাজে গাফিলতির কারনে অনেক ব্যবসায়িরা ঋণ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তার এ ধরণের কর্মকান্ডের কারনে অনেকেই ইসলামী ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এসব বিষয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপককে জানালেও সাধারণ গ্রাহকদের তিনি কোনো পাত্তা দেন না। এছাড়া প্রায় সময়ই সাধারণ গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বাকবিতান্ডা হয়ে থাকে।

সিংহঝুলী গ্রামের শেফালি বেগম জানান, আমি ব্যাংকের আরডিএস প্রকল্পের একজন সদস্য। আমি ৩০ ডিসেম্বর কৃষি কাজের জন্য ৪% লভ্যাংশে ঋণ নিতে যায়। প্রথমে তারা আমাকে ডিপিএসধারী গ্যারান্টার নিয়ে যেতে বলেন। আমি দুইজন গ্যারাান্টার সাথে নিয়ে ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের কর্মকর্তা ফায়েক আলী আমার ঋণের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করন। এর পরে ফাইলটি অনুমদোনের জন্য তিনি আরডিএস প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের নিকটে জমা দেন। কিন্তু প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, এবছর আর ৪% লভ্যাংশে ঋণ দেওয়া যাবেনা। এই বলে তিনি গ্রাহককে ফিরিয়ে দেন।

বেশ কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, বর্তমান আরডিএস প্রকল্প কবর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ঋণ গ্রহিতাদের কাছ থেকে ব্যাক্তিগত সুবিধা নেন। যে গ্রাহক এই কর্মকর্তাকে বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে ভূরিভোজে ব্যর্থ হন তাদের ঋণের ফাইল আটকে রাখেন।

একজন নারী এমএমএস গ্রাহক জানান গত অক্টোবর মাসে তিনি তার এমএমএসের টাকা জমা দিতে গেলে ব্যাংকে ভিড় দেখতে পেলে একজন কর্মকর্তা তাকে পরামর্শ দেন টাকা নিচে গিয়ে বুথে জমা দিয়ে দেন। তখন তিনি বলেন বুথে জমা দেয়ার স্লিপ সংরক্ষণ করতে হবে কিনা? তখন ওই কর্মকর্তা বলেন না রাখলেও চলবে। তিনি সেদিন ১ হাজার টাকা জমা দিয়ে চলে যান। অথচ পরে ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখেন ওই টাকা জমা হয় নি। এসময় তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে কর্মকর্তারা এবং পরে ব্যাংক ব্যবস্থাপক তাকে বলেন ওই স্লিপ সংরক্ষণে থাকলে একটা ব্যবস্থা করা যেত। তিনি তখন স্থানীয় এক সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে বলেন আমি তাকে ডেকে নিয়ে আসি। তখন তড়িঘড়ি করে ওই কর্মকর্তা তার একটি জমা স্লিপের তারিখ কাটাকাটি করে লিখে দিয়ে তিনি ১৪ মাস ধরে যে জমা স্লিপে টাকা জমা দিয়েছেন তার সাথে মিলিয়ে দেন। ওই নারী বলেন ভাই আমি খুবই গরিব মানুষ। নিজে বাড়িতে কিছু কাজ করে এমএমএস টা চালাই। এই এক হাজার টাকা আমার খুব কস্টের টাকা। ইসলামী ব্যাংকে বিশ^াস করে রেখেছিলাম।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, শাখা ব্যবস্থাপকের অযোগ্যতার কারনে ব্যাংকের এই শাখাটি হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা গ্রাহকও হারাব। আস্থাও হারাব।

জানতে চাইলে আরডিএস প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তার উপরে দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমানের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।