অভয়নগরে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলেই চটে উঠলেন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী

নওয়াপাড়া অফিস
অভয়নগর উপজেলার ভাঙ্গাগেট – আমতলা সড়কের ইছামতি গ্রমে খালের উপর নির্মাণাধিন আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকের ওপর চটে উঠলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে মোবাইল ফোনে তার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভয়নগরে কর্মরত দৈনিক কল্যাণ প্রতিনিধিকে ধমকের সুরে বলেন, ‘আপনারা আমাদের কাজের শুধু খারাপ দিকটা তুলে ধরেন। এলাকায় এতো ভাল কাজ হচ্ছে তার কোন নিউজ তো করেন না। তিনি আরো বলেন আগে যে বিটুমিনের দাম ছিলো ৯ হাজার টাকা তা এখন দাম বেড়ে ১৭ হাজার টাকা হয়েছে। আপনারা তো এ সব বিষয়ে লেকবেন না। শুধু খারাপ বিষয়ে লেখেন।’
অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নওয়পাড়া ভাঙ্গাগেট বাদামতলা থেকে আমতলা ভায়া চাকই ১৭৬৮২ মিটার দৈর্ঘ সড়কের ইছামতি খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিশ^ ব্যাংকের অর্থায়নে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রীজেস শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রায় ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৮২ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহŸান করা হয়। টেন্ডারে শরিয়তপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ারা ট্রেডার্স ব্রীজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। কাজটি ২৬-১২-২০২১ তারিখে শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ১৮-০৬-২০২৩ তারিখ। ওই আরসিসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ কাজ স্টিল সাটারিং এর পরির্বতে বাঁশ-কাঠের সাটারিং করে ঢালাই কাজ করা হচ্ছে। তাছাড়া নির্ধরিত মেয়াদে কাজটি সম্পন্ন হবে না বলে স্থানীয়রা আশংকা করছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে স্টিল সাটার দিয়ে ঢালাই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রকৌশলির নির্দেশ অমান্য করে স্টিল সাটারের পরিবর্তে গাছ ও বাঁশ দিয়ে সাটারিং কওে ঢালাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ব্রিজ নির্মাণ কাজের মান নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গত সোমবার ২৯ মে সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিবচর মাদারীপুরের মেসার্স আনোয়ারা ট্রেডার্স’র স্বত্তাধীকারী খান রিয়াজুল হক এর সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেন। তিনি যে ভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সে ভাবে করছি।’
ব্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্রীজের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার শাহীনুর আলী বলেন, ‘উপজেলা ও জেলা কর্মকর্তাদের জানিয়ে এই বাঁশ ও গাছের ব্যবহার করেছে ঠিকাদার। আমি সাইট অর্ডার বুকে লিখিত আকারে দিয়ে আসছি এখানে স্টিল সাটারিং করার জন্য।’
ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার নূরুল ইসলাম বলেন, ডিজাইনে আছে স্টিল সাটারিং কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন বাঁশ, গাছ দিয়ে সাটারিং করতে আমি নিষেধ করি এবং আমাদের সবচেয়ে বড় প্রমান সাইট অর্ডার বুকে আমি লিখিত দিয়েছি এবং জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার ও উপজেলা অফিসকে বলেছি। তার পরেও তারা বাঁশ এবং গাছ দিয়ে প্রথম ¯øাবের ঢালাই কাজ শেষ করে। নিয়ম না থাকলে কেমন করে এটা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত বড় একটি কাজ নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার এবং উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এর অনুমতি ছাড়া আমরা করতে পারি না। তারা আমাদের অনুমতি দিয়েছে তাই আমরা করতে দিয়েছি। তারা বলেছিলেন, যেহেতু প্রথমবার করে ফেলেছে এটা করুক আর করবেনা। কিন্তু ঈদের ছুটিতে আমি বাড়ি ছিলাম, এসে দেখি ঠিকাদারের লোক দ্বিতীয় ¯øাবের জন্য সেই বাঁশ, গাছের সাটারিং করেছে। আমি কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছি এবং স্টিল সাটার না আনা পর্যন্ত কাজ না করতে বলেছি।
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর ইসলাম সাংবাদিকদেও উদ্যেশে বলেন, আমার কাছ থেকে না শুনে কাজের সাইডে কেন গেলেন? আমাকে বলতে পারতেন, সমস্যা কি হয়েছে?
উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা এস এম ইয়াফি বলেন, ঠিকাদার স্টিল সাটারিং বাদে বাঁশ ও গাছ ব্যবহার কওে ঢালই কাজ করছিলো। আমি খবর পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। বাঁশ ও গাছ দিয়ে ঢালই করলে কাজের মান খারপ হবে।