Type to search

যশোরে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জনজীবন

যশোর

যশোরে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জনজীবন

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স: যশোরে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে মশার বিস্তার।

দিন ও রাতে মশার কামড়ে নাজেহাল শহরবাসী। দিনের বেলায়ও অফিস কিংবা বাসা-বাড়িতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। আর সন্ধ্যা হলেই মশার উপদ্রব বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ। কিন্তু মশা নিধনের জন্য প্রতি বছর বাজেট থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।

তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন মশার প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে মশার উপদ্রব বাড়বে স্বাভাবিক। তবে, মশা নিধন কর্মসূচি চালানো হচ্ছে দ্রুতই মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আসবে।
জানা গেছে, অনুকূল পরিবেশ ও আবহাওয়ায় মশার প্রজনন অনেকগুণ বেড়ে গেছে। শীতের শেষে তাপমাত্রা বাড়ায় মশার আবাসস্থলে থাকা ডিম একযোগে ফুটছে। এতে মশার ঘনত্ব ক্রমশ বাড়ছে। ফলে যশোর শহরে মশার উপদ্রব বাড়ছে।

এদিকে আগামী ৩১ মার্চ যশোর পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বর্তমান পৌর পরিষদও মশক নিধনে তেমন গতিশীল কোনো কার্যক্রম নেয়নি। ফলে অন্যবারের মতো এবছর গরমের শুরুতেই মশক নিধন শুরু করা যায়নি।
যশোর শহরের আপনমোড় এলাকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান গালিব বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর মশার উপদ্রব বেশি। ঘরে বাইরে সবখানে মশার উৎপাত। রাতের মতো দিনেও মশ ঘরবাড়ির মধ্যে উড়ে বেড়াচ্ছে। দরজা খুলে ঘরে ঢোকার আগেই এক ঝাক মশা ঢুকে পড়ে।

যশোর স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার কলেজছাত্র ফখরুল হোসেন বলেন, রাতের মতো দিনেও মশার সমান উৎপাত। সন্ধ্যার পরে ও রাতে জানালা-দরজা একটু খুললেই মশায় সারা ঘর ভরে যায়। মশার উপদ্রবের কারণে দিনের বেলাতেও মশার কয়েল জ্বালিয়ে বা মশারি টাঙিয়ে রাখতে হয়। তাতেও মশা যায় না।

এদিকে সচেতন মহলের দাবি মশা মারার ওষুধ ছিটালেই যে এর উপদ্রব কমে আসবে সেটি নিয়েও কিছুটা সংশয় রয়েছে। প্রতিবছরই মশক নিধন অভিযান হয়। কিন্তু তারপরও মশার উৎপাত থেকেই যায়। কারণ হিসেবে তারা বলছে, যখন ওষুধ ছিটানো হয় তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘ল্যাথাল ডোজ’ বা মারণ মাত্রার সঠিক প্রয়োগ হয় না। এতে না মরে মশারা উল্টো কীটনাশকে সহনশীল হয়ে যায়।

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের (এমএম কলেজ) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিন উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, মার্চ মাস মশক নিধন অভিযানের সব চাইতে উপযুক্ত সময়। কারণ শীতকালে মশার প্রজনন বা বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে প্রতিকূল সময়। শীতকালে মশার প্রজনন একপ্রকার বিরতি দশায় থাকলেও গরম পড়তে শুরু করলে পুনরায় তা শুরু হয়। সাধারণত বদ্ধ পানিতে ডিম পেড়ে বংশবিস্তার ঘটায় মশা। তাই ড্রেনের পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে সেই সুযোগ কমে আসে। এছাড়া ছাদ বাগানের দিকেও নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রাণিবিদ্যার এ শিক্ষক।

তিনি বলেন, যশোরেও ছাদ বাগান বাড়ছে। ফলে সেখানকার টবে জমে থাকা পানিতে মশার বংশবিস্তার যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে মশা নিধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। পৌর সভার নয়টি ওয়ার্ডে ১০টি টিম চারটি ফগার মেশিন ও ছয়টি হ্যান্ড মেশিন দিয়ে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

সূত্র,  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম