Type to search

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভয়াল দিন আজ

জাতীয়

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভয়াল দিন আজ

অপরাজেয়বাংলা ডেক্স: অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা, ২০০৪ সালের ২২শে আগষ্ট বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামগুলো এমনই ছিল।

আজ থেকে ১৭ বছর আগের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় সেই গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী আজ। সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে না পারলেও দলের ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন, আহত হন তিনশতাধিক।

দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ ডেকেছিল দলটি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সমাবেশে বিকেল ৫টায় আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। একটি ট্রাকে তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ্য নেতারা।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখতে শুরু করেন ৫টা ২মিনিটে। ৫টা ২২ মিনিটে বক্তব্য শেষ করে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে মাইক থেকে সরে যাবার মুহুর্তেই দক্ষিণ দিক থেকে কে বা কারা তাকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড ছুড়েঁ মারে।

মানববর্ম তৈরি করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করা নেতারা দ্রুত তাকে ব্যাক্তিগত গাড়িতে তুলে দেন। গ্রেনেড আক্রমণ ব্যর্থ হলে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার বিকল্প পথ হিসেবে তৈরি রাখা হয় বন্দুকধারীদের। তাদের গুলি গাড়ির বুলেটপ্রুফ কাঁচ ভেদ করতে ব্যর্থ হলে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারে। এই চেষ্টাও ব্যর্থ হলে গুলি করে গাড়ির দুটি চাকা পাংচার করে দেয় খুনিরা।

সাংবাদিক বায়েজিদ মিল্কি জানান, শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ কিন্তু বক্তব্য দেননি। তিনি বক্তব্য দেয়ার পরে সমাবেশটি শেষ হয়ে যাবে এমন সময় সেই নারকীয় সেই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এ থেকেই বোঝা যায়, বক্তব্য শেষে তিনি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ই গ্রেনেডগুলো বিস্ফোরণ হবে, এমনটাই পরিক্ল্পনা ছিল।

সেদিনের ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখেন সাংবাদিক বায়েজিদ মিল্কি। তিনি জানান, বিকেল ৫টা ২২ মিনিট থেকে এক থেকে দেড় মিনিটের ব্যবধানে ১৩টি বিস্ফোরণ ঘটে। ধোঁয়ার কুণ্ডলী, মানুষের চিৎকার, আতঙ্কিতদের ছুটোছুটিতে একটি প্রানবন্ত সমাবেশের চেহারা মুহূর্তেই পাল্টে যায়।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুুর রক্তের সম্পর্কের কেউ যেন এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসতে না পারে সেজন্য কামাল, জামাল এবং রাসেলকে হত্যা করেছে। এরপর দুই কন্যা বিদেশে ছিল, তাদের মধ্যে বড় কন্যাকে আমরা পতাকা তুলে দেই, আর এই আগস্ট মাসে তাকেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। সুতরাং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন।’

সেদিন বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের সরাতে পুলিশের ছোঁড়া কাদুনে গ্যাসের ধোঁয়া এবং এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আহতদের হাসপাতালে পাঠাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নেতাকর্মীদের। সন্ধ্যা নামতেই যেন আতঙ্কের নগরী হয়ে ওঠে ঢাকা। সারা শহরে কেবল এ্যাম্বুলেন্সের ছুটোছুটি। রাস্তায় সাক্ষী হয়ে পড়ে থাকে কাচেঁর গুড়ো, আহতদের স্যান্ডেল আর মৃতদের ছোপ ছোপ রক্ত।

সূত্র,ডিবিসি নিউজ