Type to search

যশোর বোর্ডের টাকা উধাওয়ের ঘটনায় আলোচনায় যারা

যশোর

যশোর বোর্ডের টাকা উধাওয়ের ঘটনায় আলোচনায় যারা

অপরাজেয়বাংলা ডেক্স

চেক জালিয়াতি করে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের আড়াই কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আলোচনায় আসছে ছয়জনের নাম। এর মধ্যে রয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোল্লা আমীর হোসেনসহ চার কর্মকর্তা এবং যে দুই ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তাদের নাম।

এদিকে, টাকা লোপাটের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তের প্রস্তুতি নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়।

শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, সরকারের ভ্যাট বাবদ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ ১০ হাজার ৩৬ টাকার চেক ইস্যু করে। কিন্তু সেই চেকের বিপরীতে প্রতারক চক্র আড়াই কোটি টাকা ৯টি চেকের মাধ্যমে তুলে নেয়। বিষয়টি ৭ অক্টোবর বোর্ডের হিসাব শাখা থেকে ধরা পড়ে।

বোর্ডের দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন হয়েছে যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু ও শাহী লাল স্টোরের মালিক আশরাফুলের অ্যাকাউন্ট থেকে।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেনের সঙ্গে উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন, প্রশাসন শাখার ভারপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার রাকিব হাসান ও হিসাব সহকারী আবদুস সালাম এ টাকা উত্তোলনে জড়িত বলেও আলোচনা চলছে।

ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু দাবি করেছেন, টাকা উত্তোলনের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেনসহ চারজন জড়িত।

তিনি জানান, ভুয়া প্যাড, সিল ব্যবহার করে প্রকৌশলী কামাল হোসেন ও চেয়ারম্যান এ কাজে সরাসরি জড়িত। টাকা সব তাদের কাছে। আমার কাছ থেকে ফিরতি চেকে তারা এ টাকা নিয়ে গেছে।

যশোর শিক্ষাবোর্ডের অডিট কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় যশোরের ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের নামে সাতটি ও শাহীলাল স্টোরের নামে দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

শিক্ষাবোর্ডের সচিব এ এম এইচ আলী আর রেজা  বলেন, ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও শাহীলাল স্টোর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখা থেকে এ টাকা তুলে নিয়েছে। বোর্ডের চেকে আমার সইয়ের সঙ্গে চেয়ারম্যানের সই থাকে। তিনি দেখে-বুঝে স্বাক্ষর করেন।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ব্যবস্থাপক রিয়াজ হাসান বলেন, ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং যে চেক দিয়েছে তা শিক্ষাবোর্ডের। ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান  বলেন, এ জালিয়াতির সঙ্গে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান ও তার আস্থাভাজনরা সরাসরি জড়িত। বিষয়টি দুদক তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।

বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন  বলেন, কেউ যদি আমার সম্পৃক্ততা পায়, তাহলে যে সাজা দেবে আমি মেনে নেবো।

এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, সচিব ও অডিট শাখা থেকে চেক আসে। তারা স্বাক্ষরের পর আমি করেছি। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা রহস্য উদঘাটন করবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত  বলেন, রোববার সব নথি তলব করা হবে। সরকারের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে যারাই জড়িত হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।সূত্র,জাগোনিউজ২৪.কম