Type to search

মণিরামপুরে শিশু পার্কের পাঠশালা চাঁদপুর-মাঝিয়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয়

যশোর

মণিরামপুরে শিশু পার্কের পাঠশালা চাঁদপুর-মাঝিয়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয়

জি, এম ফারুক আলম, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের মণিরামপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু পার্ক ! বিষয়টি দেখে ও শুনে অনেকেই হতচকিত যাওয়ার কথা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিংহভাগ বিদ্যালয়ের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ শোনা যায় অহরহ। সেখানে ব্যক্তিগত তহবিল এবং সরকারী বরাদ্দ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ধরনের শিশু পার্ক নির্মাণ করে অবিশ্বাস্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিদ্যালয়ের সভাপতি অজয় রায়। বর্তমানে নজরকাড়া পার্কটি দেখতে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছে।
মণিরামপুর পৌর শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে অবস্থিত চাঁদপুর-মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির পড়া-লেখার মান বরাবরই উপজেলার শ্রেষ্টত্ব। এরই পাশাপাশি বিদ্যালয়ে শিশু পার্ক নির্মাণ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন কলেছেন এলাকার একজন গুনিজন প্রভাষক অজয় রায়। তিনি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ঝরেপড়া রোধ করতে এবং বিদ্যালয়গামী হওয়াসহ দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতেই এ নান্দনিক উদ্যোগ নিয়ে শিশু পার্ক নির্মাণ করেছেন বিদ্যাায়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অজয় রায়। উপজেলা ব্যাপী সর্বমহলে তিনি প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন। ইতোমধ্যে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি পার্কটি উদ্বোধন করেছেন।
অজয় রায় জানান, দেশ-বিদেশের দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তিনি এ পার্ক নির্মাণ করেছেন। শুধু পার্ক নয়, বিদ্যালয়ের শোভাবর্ধনে করেছেন দৃষ্টিনন্দন ফুল বাগান। অবশ্য এসব নান্দনিক কাজের স্বীকৃতি মিলেছে তার। গত বছর উপজেলার শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহেনা পারভীন বলেন, ২০১৯ সালের ৭ই জুলাই অজয় রায় সভাপতি হওয়ার প্রথম দিনই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১২টি সিলিং ফ্যান কিনে দেন। স্কুলটি ওই এলাকার সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্র। গত বছর এ কেন্দ্রে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারি ৫৫১ জন শিক্ষার্থীর নাস্তার ব্যবস্থা করেন ব্যক্তিগত তহবিল থেকে। এছাড়া দেওয়াল পঞ্জিকা, অনারি বোর্ড সভাপতি তৈরি করে দিয়েছেন।
ন্থানীয় অভিভাবক প্রভাষক মামুন অর রশিদ জুয়েল বলেন, এলাকার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সেবায় মেডিকেল ক্যাম্প করে ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন সভাপতি অজয় রায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহিদুল আলম ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির এমন কর্মপরিধি শুধু প্রশসংনীয় নয়, অনুকরনীয়, অনুসরনীয় ও অতুলনীয়। দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে তার মতো সভাপতি থাকলে শিক্ষা বিস্তারে দেশ আরো এগিয়ে যাবে। দেশের আর কোথাও এমন উদ্যোগের কথা তার জানা নেই বলেও তিনি জানান।
সভাপতি অজয় রায় বলেন, দিনাজপুরে স্বপ্নপুরী এলাকার শিল্পী এনে প্রায় দুই লাখ টাকার পারিশ্রমিক দিয়ে পার্কের রাইডার নির্মাণ করা হয়েছে। এ কাজে দেশে ও দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীসহ ভারতীয় কয়েকজন নাগরিক তার উদ্যোগে সাড়া দিয়ে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আগামীতে বিদ্যালয়ের প্রাচীর এবং আরো নান্দনিক দৃশ্য স্থাপনের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।