Type to search

পিঠা মেলা রূপ নিয়েছে খুলনাবাসীর মিলন মেলায়!

খুলনা

পিঠা মেলা রূপ নিয়েছে খুলনাবাসীর মিলন মেলায়!

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স : মাথায় ফুলের মুকুট, হাত ভর্তি ফুলের মালা, বাসন্তী রঙের শাড়িতে এসেছে তরুণীরা। তাদের হাতে রিনিঝিনি শব্দ করে বাজছে কাচের চুড়ি।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পড়ন্ত বিকেলে বাসন্তী পোশাকে খুলনা প্রেসক্লাবে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। সন্ধ্যার পর জনস্রোত রূপ নিয়েছে জনসমুদ্রে। বসন্তের সঙ্গে ভালোবাসার আনন্দে মিলেমিশে নানা বয়সের মানুষ মেতে উঠেছে আনন্দে।

খুলনা প্রেসক্লাবের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী পিঠা মেলা ও বসন্ত উৎসবের শেষ দিনে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পহেলা ফাগুন ও ভ্যালেন্টাইন্স ডে একদিনে হওয়ায় বিগত দুই দিনের চেয়ে দর্শনার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত ছিল প্রেসক্লাব চত্বর।

তবে দর্শনার্থীরা এসেছিলেন যতটা না কেনাকাটা করতে, তার থেকে বেশি ঘুরতে দেখা গেছে। করোনার কারণে দীর্ঘ দিন বন্দি জীবন কাটানোর পর একদিনের জন্য বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে অনেকে মেলায় এসেছেন। কেউ কেউ আবার একটু-আধটু কেনাকাটার পাশাপাশি বন্ধু বা নিকট পরিজনের সঙ্গে পিঠা পুলি খেতে খেতে কিছুটা সময় কাটিয়েছেন।

আগত দর্শনার্থীরা জানান, ভালোবাসার বার্তা নিয়ে এবারও একইসঙ্গে হাজির হয়েছে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস। বসন্তের হাওয়ায় নবপ্রাণের ছোঁয়ায় মেতে উঠতে তারা পিঠা মেলায় এসেছেন। করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব কমে আসায় সংস্কৃতিমনা নানা বয়সী শ্রেণি-পেশার মানুষ মেতে উঠেছে বসন্ত উৎসবে।

খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, করোনার কারণে অনেক দিন তেমন কোনো উৎসব ছিলো না। মানুষ বন্দি জীবন কাটাচ্ছিলো। এক ঘেয়ে হয়ে যাওয়া জীবনে এ রকম মেলা অনেক আনন্দ দিয়েছে। বন্ধুদের নিয়ে মেলায় এসেছি। অনেক মজা করেছি। পিঠা খেয়েছি। খুব ভালো লেগেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা মেলায় হরেক রকমের পিঠা পুলি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জামাই ভোগ, পাটিসাপটা, কুলি, ভাপা পিঠা, সবজি কুলি, পুলি পিঠা, নারু পিঠা, সেমাই পিঠা, চপ পিঠা, চিতই পিঠাসহ নানা নাম ও স্বাদের বাহারি পিঠা। নতুন চালের পিঠার মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে সব জায়গায়। এছাড়া মেলার স্টলগুলোতে রয়েছে পোশাক, ব্যাগ, প্রসাধনীসহ রকমারী পণ্য। হলুদ-লাল-বেগুনি রঙের ঝালরে সেজেছে উৎসব প্রাঙ্গণ। মেলায় ৩৬টি স্টল রয়েছে।

পিঠা মেলার তাসনিয়া বুটিকস এন্ড পিঠা ঘরের মালিক নুপুর বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। গত দুই দিনের থেকে ফুল্গুনের প্রথম দিন বেশি মানুষ এসেছেন। তারা দেখার পাশাপাশি পিঠাসহ পোশাক ও ব্যাগ কিনেছেন।

রোজ পিঠা ঘরের মালিক হালিমা খাতুন বলেন, প্রেসক্লাবের পিঠা মেলার মতো এত মানুষের আগমন আর কোন পিঠা মেলায় হয় না। বিভিন্ন বয়সী মানুষ যেমন এসেছেন তেমন কিনেছেনও।

প্রেসক্লাবের মেলা ছাড়াও মহানগরীর জোড়াগেটস্থ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে জাতীয় শিশু কিশোর ও যুব কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে খুলনায় চাঁদের হাটের পিঠা উৎসব, সিটি কলেজে বসন্ত মেলা, হোটেল ডিএস প্যালেচে ফাগুন মেলা, কেডিএ এভিনিউ সড়কে হকার্স মার্কেট মেলা ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের সামনে তাঁত বস্ত্র মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা। সেগুলোকে টিকিয়ে রাখতে ও সবাইকে পিঠার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ মেলার আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে বসন্ত উৎসব হয়। যেটি এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আয়োজন। করোনার কারণে এ বছর উৎসবটি না হওয়ায় মানুষ প্রেসক্লাবের পিঠা মেলা ও বসন্ত উৎসবে বেশি ভিড় করছেন।

সূত্র,  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *