Type to search

নওয়াপাড়া নদী বন্দরে ১৬০টি ঘাটের মধ্যে ৬০টি ঘাট অবৈধ

অভয়নগর

নওয়াপাড়া নদী বন্দরে ১৬০টি ঘাটের মধ্যে ৬০টি ঘাট অবৈধ

 

স্টাফ রিপোর্টার: নওয়াপাড়া নৌ – বন্দরে অবস্থিত ১৬০টি ঘাটের মধ্যে ৬০ টি ঘাট অবৈধ। এসব অবৈধ ঘাট থাকায় পলি জমে নদী ভরাট, ঘনঘন জাহাজ দূর্ঘটনার শিকার এবং সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার মজুদ খাল থেকে যশোর সদর উপজেলা আফরা ঘাট পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার নদীর তীরর্বতী এলাকা নিয়ে গঠিত হয়েছে নওয়াপাড়া নদী বন্দর। নদীর পশ্চিম তীর বরাবর যশোর- খুলনা মহসড়ক অবস্থিত। তাই বেশির ভাগ ঘাট পশ্চিম তীরে গড়ে উঠেছে। মোংলা বন্দর থেকে নদী পথে এখানে কার্গো, বার্জ,বলগেট ইত্যদি নৌ-যানের মাধ্যমে সার, কয়লা, সিমেন্ট, খাদ্য শস্য সহ নানা ধরনের মালামাল আমদানী ও রপ্তানী হয়। ঘাটকে কেন্দ্র করে নওয়াপাড়া বাজার শিল্প বাণিজ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে।

সরকার বছরে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে

ঘাটটি  অবৈধ তালিকায় রয়েছে তা আমি জানি না –

ঘাট মালিক আলমগীর সরকার

এ পর্যন্ত যতো জাহাজ দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে তার সবকটি নদী দখল করে অবৈধ ঘাট নির্মানের জন্ তলা  ফেটে ডুবেছে – নৌ যান শ্রমিক নেতা নিয়ামুল হক রিকো।

নওয়াপাড়া নৌ – বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এখানে ছোট বড় মিলে ১৬০টি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি ঘাট অবৈধ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এ সব অবৈধ ঘাটের বেশিরভাগ বাংলাদেশ অভ্যান্তরিন নৌ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেই। তাছাড়া কিছু ঘাট আছে তারা প্রবাহমান নদীতে ইট,বালু, গাছের বল্লি দিয়ে অবৈধ ঘাট করে জেটি নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া অনেক শিল্প কারখানার সীমানার প্রাচীর নদী দখল করে নির্মাণ করেছে। ওই সব ঘাট ও সীমানা প্রাচিরে নদীর পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে। এতে পলি জমে নদী ভরাট হচ্ছে। অবৈধ ঘাট উচ্ছেদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বার বার নোটিশ দিয়েছে কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি। যে কারনে অবৈধ ঘাট উচ্ছেদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা গেছে খুব শিঘ্রই ওইসব অবৈধ ঘাট ও জেটি উচ্ছেদ করা হবে।

 

নৌ কর্র্তৃপক্ষের অনুমদিত ঘাট নির্মাণের জন্য তীর ভূমি ব্যবহার বাবদ বার্ষিক ইজারার হার প্রতি শতাংশ জমির জন্য ১ হাজার ৭২৮ টাকা এছাড়া বাঁশের জেটিতে প্রতি বর্গ মিটারে ৮৪ টাকা, কাঠের জেটিতে ১৪৪ টাকা এবং পাকা জেটিতে ২৭৬ টাকা। সবমিলে প্রতিটি ঘাট থেকে সরকার বছরে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা ইজারা পায়। কিন্তু অনেক অবৈধ ঘাট মালিকেরা নদীর তীর ভূমি দখল করে ঘাট নির্মাণ করে দেদারছে মালামাল লোড আন লোডের কাজ করে যাচ্ছেন। এদের কাছ থেকে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের নওয়াপাড়া অঞ্চলের নেতা নিয়ামুল ইসলাম রিকো বলেন,নদী দখল করে অবৈধ ঘাট নির্মাণের কারনে ঘন ঘন নৌযান দুর্ঘনার শিকার হচ্ছে। এ পর্যন্ত যতো জাহাজ দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে তার সবকটি তলা ফেটে ডুবেছে। আর তলা ফাটার কারণ প্রবাহমান নদী দখল করে ই্ট বালু, গাছের বল্লি ও বিভিন্ন কারখানার সীমানা প্রাচীর নদীর মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। ভাটির সময় জাহাজ ওইসব স্থাপনায় ধাক্কা লেগে তলা ফেটে ডুবে যায়। আমরা দ্রুত ওই সব স্থাপনা অপসারন চাই।’
নওয়াপাড়া পৌরসভার মশরহাটি এলাকায় অবস্থিত সরকার ট্রের্ডাস এর ঘাট অবৈধ হিসাবে নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষ তালিকা ভুক্ত করেছে। ওই ঘাটের মালিক আলমগরী সরকার বলেন, ‘আমার ঘাটটি যে অবৈধ তালিকায় রয়েছে তা আমি জানি না। এ ব্যাপারে আমাকে কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি। আমি নৌ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে ঘাট করেছি। নৌ কর্তৃপক্ষ যদি আমাকে উচ্ছেদ করে তা করুক।’
নওয়াপাড়া নদী বন্দর এর উপ-পরিচালক মোহা: মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘বন্দরে ১৬০ টি ঘাট রয়েছে এর মধ্যে বৈধ আছে ১০০টি এবং ৬০টি ঘাট অবৈধ। এদের অনেকের অনুমোদন নেই, আবার অনেকে নদীর বক্ষে ইট ,বালু গাছের বল্লি দিয়ে জেটি নির্মাণ করে পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করছে। আমার অবৈধ ঘাটের তালিকা করে তাদের উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করছে না। বাধ্য হয়ে আমরা ওই সব অবৈধ ঘাট উচ্ছেদের জন্য চেষ্টা করছি। গত ঈদের কয়েক দিন পরে উচ্ছেদের তারিখ নির্ধারণ হয়েছিলো কিন্তু সিলেট এলাকায় বন্যা আসায় তা পিছিয়ে গেছে। আশা করি খুব তাড়াড়াড়ি ওইসব অবৈধ ঘাট উচ্ছেদের জন্য অভিযান চালানো হবে।’