Type to search

ঝিকরগাছায় প্রভাবশালী জামায়াতের আমির ও ইউপি সদস্যের নিকট সরকারি দপ্তর জিম্মী পর্ব-২

ঝিকরগাছা

ঝিকরগাছায় প্রভাবশালী জামায়াতের আমির ও ইউপি সদস্যের নিকট সরকারি দপ্তর জিম্মী পর্ব-২

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :

ঝিকরগাছা উপজেলার ৭নং নাভারণ ইউনিয়নের জামায়াতের আমির ও হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আসাদুজ্জামান ও ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহবুর রহমানের নিকট সরকারি দপ্তর সমুহ জিম্মীর বিষয়ে সংবাদকর্মী বাদী হয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও তথ্য পাওয়া যায় না সরকারি দপ্তরে। পরবর্তীতে জেলা সমবায় কার্যালয়ে আপিল করা হলে আপিলের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায়। তাৎক্ষনিক জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক আবেদনকারীকে ঘটনার বিষয় তাকে অবগত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত ভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। জেলা সমবায় অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী ১৪/০৯/২০২২ইং তারিখে তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
উক্ত অভিযোগে হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমূখী সমবায় সমিতি লিঃ কর্তৃক উত্তর রাজাপুর জলমহল ইজারা নিয়ে সাবলিজ দেয় এবং অডিট নোটে তথ্য প্রদান না করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি সহ নানান অপকর্মের বিরুদ্ধে সমবায় সমিতি আইন- ২০০১ এর ৪৯ ধারায় তদন্ত করণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে উপজেলাধীন রেজি: নং ২৯/জে, তারিখ ০৯/০৯/২০০১ সনে শুরু হওয়া হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখি সমবায় সমিতি লিঃ। উপজেলা প্রশাসন ঝিকরগাছা কর্তৃক উত্তর রাজাপুর জলমহাল ইজারা নিয়ে স্থানীয় ৩নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমানকে সাবলিজ প্রদান করেছেন এবং উপজেলা সমবায় অফিসের মাধ্যমে সমিতির অডিট রির্পোটে সমিতির আয় ব্যায়ের হিসাব প্রদর্শন না করে, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ায় সাধারণ সদস্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন। হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এটা কোনো মৎস্যজীবী সমিতি বা এই সমিতির কোনো সদস্যই মৎস্যজীবী না। সমিতির সভাপতি মোঃ আছাদুজ্জামান মৎস্যজীবী না হয়েও তিনি মৎস্যজীবী সেজে বিভিন্ন সময় পুকুর, খাল, বিল বা বাওড় এর ইজারা গ্রহণ করছেন। হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ, বহুমুখী সমবায় সমিতি হয়ে ক্রমাগতই তারা উপজেলা প্রশাসনের নিকট হতে ইজারা গ্রহণ করছেন। এছাড়াও যুব উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের বয়স নিয়েও অনেক সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সমিতির এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে জেলা সমবায় কার্যালয় হতে সমবায় সমিতি আইন- ২০০১ এর ৪৯ ধারায় তদন্ত করণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মহোদয়ের নিকট বিনীত অনুরোধ করেন আবেদনকারী বা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক।
জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক তাৎক্ষনিক শার্শা উপজেলা সমবায় অফিসার এবিএসএম আক্কাস আলীকে আহŸায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি ০৫/০১/২০২৩ ইং তারিখে প্রায় ৪মাস ধরে তাদের তদন্ত সম্পন্ন করে জেলা সমবায় অফিসারের নিকট ২পাতার একটা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই সময় জেলা সমবায় অফিসারের নিকট ০৫/০২/২০২৩ইং তারিখে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির আবেদনে তদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত সকল কাগজপত্র চাওয়া হয় এবং তদন্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কার্যালয়ের পদক্ষেপ সমুহ এবং কতদিনের মধ্যে কার্যকর হবে সেটা জানতে চাওয়া হলে জেলা সমবায় কার্যালয়ের জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক ২৩/০২/২০২৩ইং তারিখে ৪৭.৬১.৪১০০.০০০.৩৯.০১৪.১৩.১০৯ নংস্মারকে তিনি জানান, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ সনের ২০নং আইনের ৭(ঠ) ধারা মোতাবেক চাহিত তথ্য প্রদান করা সম্ভব নয়। তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক এ বিষয়ের উপর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা সমবায় অফিসার, ঝিকরগাছা বরাবর পত্র প্রদান করা হয়েছে। তার বক্তব্যেই তো প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম শেষ।
তাহলে তিনি কিভাবে আবার বলছেন ২০নং আইনের ৭(ঠ) ধারায় (তদন্তাধীন কোন বিষয়ে যাহার প্রকাশ তদন্ত কাজে বিঘœ ঘটাইতে পারে এইরূপ তথ্য) প্রদান করছেন। তাহলে যেখানে জেলা সমবায় অফিসার অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য নিজেই সংবাদকর্মীকে আবেদন করতে বলেন সেখানেই তিনি আবার তথ্য না দেওয়ার জন্য তথ্য অধিকারের আইন উপস্থাপন করছেন। আবার জেলা সমবায়ের আদেশ পাওয়ার পরও উপজেলা সমবায় অফিস হাড়িয়া যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর উপর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অভিযুক্ত সভাপতি ও জামায়াতের নাভারণ ইউনিয়নের আমির আসাদুজ্জামানকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি চিঠি দিয়েছেন বলে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে জানা যায়। কিন্তু অদ্যবধি কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার আইনাগত ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক তথ্য অধিকার আইনেরর প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করায় দপ্তরের প্রতি সন্তুষ্ট হতে না পেরে ১৯/০৩/২০২৩ইং তারিখে জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হকের কার্যক্রমের বিষয়ে উল্লেখ পূর্বক বিভাগীয় সমবায় অফিসের বিভাগীয় যুগ্ম নিবন্ধক মোঃ মিজানুর রহমানের নিকট আপীল আবেদন দায়ের করা হয়। আপীল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা সমবায় অফিসার কে সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য ১০/০৪/২০২৩ইং তারিখে ৪৭.৬১.০০০০.২৬১.২২.০০১.১১.১৬৬ নং স্মারকে অফিস আদেশ দেন। আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা সমবায় অফিসার এসএম মঞ্জরুল হক ১৩/০৪/২০২৩ইং তারিখে শুধুমাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন দিলেও তদন্ত প্রতিবেদন সাথে সংযুক্ত তথ্য প্রদান করেনি। (চলবে)

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *