Type to search

জনসাধারণের মধ্যে ‘লকডাউন’ মেনে চলার যেন ইচ্ছে নেই

জাতীয়

জনসাধারণের মধ্যে ‘লকডাউন’ মেনে চলার যেন ইচ্ছে নেই

অপরাজেয়বাংলা ডেক্স: দেশে চলছে সীমিত পরিসে লকডাউন। বন্ধ করা হয়েছে গণপরিবহন চলাচল।

সীমিত লকডাউনেয় প্রথম দিনে জনসাধারণের মধ্যে লকডাউন মেনে চলার কোনো প্রবণতাই দেখা যায়নি। যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। পাড়া-মহল্লা, অলিগলি ও প্রধান সড়কে জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল করতে দেখা যায়। বিভিন্ন এলাকার অলিগলি, প্রধান সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন ও রিকশার যানজট লেগে থাকতে দেখা যায়। 

সোমবার (২৮ জুন) লকডাউনের প্রথমদিনের বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর ১৪, ১২, ১১, ১০ ও ২ নম্বর এলাকার পাড়া-মহল্লা ও বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

মিরপুর এলাকায় ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পাড়া-মহল্লার অলিগলির চায়ের দোকানে নির্দ্বিধায় চলছে আড্ডা। এলাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্থানীয়দের আড্ডা দিতে দেখা যায়। প্রধান সড়কের তুলনায় এলাকার সড়কের মোড়ে মোড়ে বেশি জ্যাম লেগছে। সকালের তুলনায় বেশি মানুষকে সন্ধ্যাবেলায় ঘুরাঘুরি করতে বের হতে দেখা যায়।

মিরপুর ১১ নম্বর বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এখন তো সাধারণ ‘লকডাউন’ চলছে। ১ তারিখ থেকে তো শাটডাউন চলবে। তখন না হয় বাসায় থাকবো। এখন একটু বাইরে আসলাম। এখানেই দেখেন আমার মত কতজন চা খেতে এসেছে।

বাউনিয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ক্ষুধা কি আর ‘লকডাউন’ বুঝে। ক্ষুধার কাছে সব কিছু হার মানে। নিম্ন আয়ের মানুষরা ঘর থেকে বেরোচ্ছে কাজের সন্ধানে। আমিও তাদের মতো কাজের সন্ধানে বের হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে মোটর চালিত রিকশা বন্ধ করে দেওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। সেই মানুষেরা কাজের সন্ধানে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।

মিরপুর ১০ নাম্বার ফকির বাড়ি মোড়ে ভ্যান গাড়ির উপরে একসঙ্গে বসে থাকতে দেখা যায় ১০-১২ জনকে। তারা সবাই ভ্যান গাড়ি চালক। ভ্যানচালক মোশারফ লিটন বলেন, লকডাউনের কারণে আমাদের কাজ অনেক কমে গেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা এখানে ভ্যানে বসে থাকি, কাস্টমারদের অপেক্ষায়। দুইদিন পরে মাস পহেলা। ১ তারিখ অনেক মানুষ বাসা পরিবর্তন করে, এজন্য আমরা এখানে বসে আছি অনেকে এসে আমাদের ভ্যান গাড়ি ভাড়া করবেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা সব সময় এখানে বসি না। কাজ না থাকলেই এখানে বসে থাকি আমরা। আগের ‘লকডাউনের’ দিনগুলোতে এখানে ভ্যানের উপরে বসে থাকলে পুলিশ এসে আমাদেরকে সরিয়ে দিত।

অভিযোগ করে আরেক ভ্যান চালক সাইদুল ইসলাম  বলেন, করোনার কালে আমাদের অনেক কাজ কমে গেছে। সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় ‘লকডাউনে’ কিভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকবো। লকডাউনের আগে যাই টাকা উপার্জন করতাম তা নিয়ে পরিবার, ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা নিয়ে কোনো মতে খেয়ে পড়ে চলতে পারতাম। এখন যে অবস্থা হতে যাচ্ছে পকেটের টাকা থাকবে না, ঘরে থাকবে না ভাত। ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে রাস্তায় ভ্যান গাড়ি নিয়ে নামতে হবে।

এর আগে রোববার (২৭ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘লকডাউন’ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।

করোনার ঊর্ধ্বগতি রোধে এ তিন দিন সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শেষে ১ জুলাই থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়ন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছে সরকার। জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাস এবং আর্থিক বছর শেষে জুন ক্লোজিংয়ের জন্য ২৮ জুন থেকে তিন দিন সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ চলবে।সূত্র, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম