Type to search

চৌগাছায় মৎস্যজীবীদের মানববন্ধন

চৌগাছা নড়াইল

চৌগাছায় মৎস্যজীবীদের মানববন্ধন

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের চৌগাছায় ‘ভুয়া মৎস্যজীবি সমিতি বাতিল এবং অবৈধ সমিতি কর্তৃক বাওড় ইজারা নিয়ে কিটনাশক দিয়ে রাণী মাছ মেরে ফেলা’র প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মৎস্যজীবিরা। বুধবার (১০মে) উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলা ১১টা থেকে আধা ঘন্টাব্যাপী ‘বেড়গোবিন্দপুর বাওড় তীরবর্তী সাধারণ মৎস্যজীবি’র ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে মৎস্যজীবি পরিবারের কয়েকশ’ নারী ও পুরুষ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বেড়গোবিন্দপুর বাওড় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সমিতির সভাপতি ইন্দ্রজিৎ রায়, সাবেক সভাপতি তপন কুমারসহ বেড়গোবিন্দপুর বাওড় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে ইমরান হোসেন বলেন, আমরা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ইউএনও, এসিল্যান্ড, এডিসি, ডিসি, বিভাগীয় কমিশনারসহ সকল দপ্তরে আমাদের আকুতি জানিয়েছি। আমরা তদন্তের দাবি জানিয়েছি, অথচ কোন তদন্ত করেন নাই। আমরা শেষে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রীট করেছিলাম। সেই রীটে ছয় মাসের জন্য বাওড়ের টেন্ডার সিডিউল স্থগিত করা হয়েছিল। অথচ অদৃশ্য কারনে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে, না মেনে ৭৩তম অধিবেশনে বাওড় ইজারা দিয়েছে। বাওড় ইজারা দিয়েছে নয়, হাইকোর্টের রীট আদেশ অমান্য করে তাদেরকে বাওড় বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। জানতে চাই কোন শক্তিতে, কোন আইনে আপনারা আমাদের পেটে লাথি মারলেন? আমাদের ২হাজার পরিবার বাওড়ের রাণীমাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। শুধু জেলে নয় আশেপাশের ৮/১০ গ্রামের লোকজন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। অথচ সরকারি নীতিমালা অমান্য করে গত  ৫মে তারিখে ওই জালিয়তি সমিতি বিষ প্রয়োগ করে বাওড়ের সকল রাণী মাছ মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার ধিক্কার জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৬২ বছর ধরে এই বাওড়ের সুফল ভোগ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। বাওড় যদি সরকার লিজ দিয়ে থাকে, তাহলে আমার সমিতির অগ্রাধিকার। আমরা বাওড় নেব। আমরা সরকারের রাজস্ব দেব। অথচ একটি জালিয়াতি সমিতিকে তদন্ত না করে বাওড় বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা জানিনা আমরা শেষ পর্যন্ত কি করবো? আমরা আমাদের শেষ সম্বল ফিরে পেতে চাই। আমাদের বেচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ফিরে পেতে চাই।

তপন কুমার বলেন, আমাদের সমিতির ২০২ জন সদস্য। বেড়গোবিন্দপুর বাওড় আমাদের সমবায় মাধ্যমে ছিলো। আমরা ৪০ শতাংশ পেতাম, সরকার ৬০ শতাংশ পেতো। এদিয়ে আমাদের সমস্ত কিছু, খাওয়া-দাওয়া, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াসহ সবকিছু এই বাওড় থেকে জীবিকা নির্বাহ হতো। কিন্ত কিছু মহল আমাদের কাছ থেকে এই বাওড়টা কেড়ে নিয়ে আমাদের পেটে লাথি মেরেছে। এখন আমাদের বিষ খাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। আমরা চাই বাওড়টি আমাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ২০ একরের উর্দ্ধের জলমহাল জেলা থেকে ইজারা দেয়া হয়। উপজেলা থেকে ইজারা দেয়া হয় না। এটিও জেলা থেকে দেয়া হয়েছে। যারা দরপত্র জমা দিয়েছেন তাদের মধ্যে থেকেই ইজারা দেয়া হয়েছে। নির্দেশ পেয়ে ইজারাদার সমিতিকে বাওড় বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।