Type to search

চৌগাছায় পল্লীবিদ্যুতের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

যশোর

চৌগাছায় পল্লীবিদ্যুতের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

শ্যামল দত্ত, চৌগাছা (যশোর)প্রতিনিধিঃ
যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ চৌগাছা জোনাল অফিসের এক লাইন টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি, চৌগাছা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম ও যশোর বিএডিসির অফিস-সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রায়হান উদ্দীন নামে এক পল্লীবিদ্যুতের সেচ মোটর গ্রাহক। তিনি উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
লিখিত অভিযোগে তিনি দাবী করেন, চৌগাছা পল্লিবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান সিরাজুল ইসলাম অর্থের বিনিময়ে তথ্য গোপন করে অবৈধ মোটর সংযোগ দিয়েছেন। তিনি ৪৪৪ নম্বর দাগের জমির পরিবর্তে ৪৪৩ নম্বর দাগে ও এস ৫৩০ পিলার পরিবর্তন করে এস ৫৮০ নম্বর বিদ্যুতের পিলারে সেচ মোটরে সংযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের মান্দু মন্ডলের ছেলে ইরাদ আলী হাজীপুর মৌজায় যার জেএল নং ৬৩, জমির দাগ নম্বর ৪৪৪ ও বিদ্যুতের পিলার নম্বর এস ৫৩০ হতে একটি সেচ মোটরের আবেদন করেন। এ আবেদনটি হাকিমপুর অভিযোগ কেন্দ্রের আওতায় হলেও অর্থের বিনিময়ে তথ্য গোপন করে অবৈধ ভাবে চৌগাছা জোনাল অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান সিরাজুল ইসলাম ওই মোটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন। যার দুরত্ব আমার মোটর হতে ৫শ ১০ ফুট, যাত্রাপুর গ্রামের মৃত আবেদ আলী ছেলে আব্দুল মান্নানের মোটর হতে ২শ ফুট ও মৃত আব্দার আলীর ছেলে আলী রেজা রাজুর মোটর যে দাগে সেই ৪৪৩ নম্বর দাগেই নতুন এই মোটরের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সকল তথ্য গোপন করে ওই ৪৪৩ দাগেই একটি সেচ মোটর হতে মাত্র ২শ ফুটের দুরে আর একটি সেচ মোটর দেওয়া হয়েছে। যা পল্লীবিদ্যুৎ ও সরকারি বিভাগ বিএডিসির আইন পরিপন্থী।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের রায়হান উদ্দীন নামে এক পল্লীবিদ্যুতের সেচ মোটর গ্রাহক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হকের দপ্তরে, চৌগাছা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী বালী আবুল কালামের দপ্তরে ও যশোর বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের দপ্তর-সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যেখানে সরকারি সংস্থা বিএডিসির ২০১৯ সালের সর্বশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ চালিত একটি ৫ সেচ মোটর থেকে আর একটি সেচ মোটরের বরিংয়ের দূরত্ব হতে হবে কমপক্ষে ৮শ ২৫ ফুট।
এ ব্যাপারে যশোর বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ চালিত একটি ৫ সেচ মোটর থেকে আর একটি সেচ মোটরের বরিংয়ের দূরত্ব হতে হবে কমপক্ষে ৮শ ২৫ ফুট। সেচ লাইসেন্সে জমির যে দাগ নম্বর ব্যবহার করা হয় তা পরিবর্তন করলে আইনত অপরাধ। এমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই উপজেলা সেচ কমিটির মাধ্যমে লাইসেন্স বাতিল পূর্বক কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে চৌগাছা পল্লিবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা, ওই সেচ মোটরে বিদ্যুৎ সংযোগে কোন প্রকার অর্থ লেনদেন করা হয়নি। সরকারি বিএডিসির লাইসেন্স থাকাই ওই গ্রাহকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী বালী আবুল কালাম বলেন, এমন একটি অভিযোগ পেয়ে আমি নিজে সরেজমিনে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি মোটর থেকে আর একটি মোটরের দুরত্ব ৫শ ফুট রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হক এঁর সাথে কথা বলেছি। আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তথ্য গোপন করলে ওই সেচ লাইসেন্স বাতিল করা হবে। অভিযোগ পেয়ে যশোর বিএডিসির প্রকৌশলী ও সেচ কমিটির সচিব জাকির হোসেনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।