Type to search

খলিষখালীতে পোষ্ট অফিসের  কর্মচারীর চাকুরির আড়ালে  তক্কক সাপের ব্যাবসা

সাতক্ষীরা

খলিষখালীতে পোষ্ট অফিসের  কর্মচারীর চাকুরির আড়ালে  তক্কক সাপের ব্যাবসা

 সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সন্ধ্যায় নামতেই শুরু হয় পোস্ট অফিসে তক্কক ব্যাবসায়ীদের আনাগোনা। কখন শোনা যায় হাঁসপা কোনটি দীর্ঘ লেজ বিশিষ্ট মুরগী পা ওয়ালা ওজনে ২৫০-৩০০গ্রামের দাম কোটি কোটি টাকা এভাবে  চলতে দীর্ঘরাত পর্যান্ত  দরদাম। এতক্ষনে বলছিলাম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী এলাকার পোষ্ট অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ইন্দ্রজিৎ ঘোষের  কথা।  ইন্দ্রজিৎ ঘোষ একই এলাকার সত্যপ্রসাদ ওরফে খোকন ঘোষের ছেলে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী প্রিয়া ঘোষকে নিয়ে  ইন্দ্র অনিয়মিত কাজ করেন পোষ্ট অফিসে। স্বামী ইন্দ্রের  দেখা মিললেও কাগজে কলমে স্ত্রীর চাকুরির দ্বায়িক্ত নিজে নিয়ে অফিসের দেখাশোনা করেন তিনি । মাঝে মাঝে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ অফিস পরিদর্শনে আসলে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করেন তাদের।  এছাড়া অফিসের চিঠি নিতে আসা দরিদ্র লোকদের কাছ ঘুষ নিতে কমতি করেন না তিনি। ঘুষের এসব টাকা দিয়ে চড়া সুধে ঋন দেন এলাকায়। এক সময়ে যে দরিদ্রতা  জন্য পিতার চিকিৎসা করাতে পারত না আজ সে কয়েক লক্ষ টাকার মালিক বনে গেছে। মোস্তাফিজুর রহমান চুম্মন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সন্ধ্যায় হতেই ইউনিয়ন পরিষদের পাশে পোষ্ট অফিসে বসে তক্কক সাপের ব্যাবসায়ীদের নিয়ে মসগুল থাকেন ইন্দ্র। প্রায় প্রতিদিনই কোমর উদ্দীন সরদার(৫২) শরিফুৃর ইসলাম( ৩২)  ও পরিমল মেম্বর নামক চক্রের তিন সদস্য নিয়ে তক্কক সাপ বিক্রির নেশায় মেতে থাকেন। সম্প্রতি খুলনা থেকে কিছু লোক তার বাড়িতে তক্কস সাপ ক্রয় করতে আসেন। ওই সময় স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় ওই প্রতারক চক্র। এরপর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে চার জনকে তক্কক ব্যাবসায়ী হিসাবে এলাকার ওপেন সিকরেট হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিইচ্ছু স্থানীয় এক চায়ের দোকানদার জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে চার তক্কক ব্যাবসায়ী গভীর রাত পর্যান্ত দেন দরবার চালায়। মাঝে মাঝে তাদের ভিতর কোটি টাকার ভাগবোটায়ারা নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এক সময় যার নুন আনতে পানতা ফুরাতো আজ সে তক্ককের ব্যাবসা করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনে গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ইন্দ্র দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে  তক্কক সাপের ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া অনিমিয়ত অফিসে আসে বলে অভিযোগ তাদের। তারা আরো জানান, স্ত্রী প্রিয়া ওই অফিসের কর্মচারী হলেও ছয় মাসেও একদিন দেখা মেলেনা তার।দিনের পর দিন এভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করছে স্বামী স্ত্রী মিলে। সবশেষে এই প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে  ইন্দ্রজিৎ ঘোষ  জানান, আমি পোষ্ট অফিসে চাকুরি ছাড়া একটি ব্যাবসা পরিচালনা করি।তবে কি ব্যাবসা করেন সেটা মন্তব্য করতে রাজী হননি। তক্কক বিক্রিয় বিষয় প্রস্ন ছুঁড়ে দিলে তিনি কৌশালে প্রসঙ্গ  এড়িয়ে সাংবাদিককে ম্যানেজ করার ব্যার্থ চেষ্টা করেন।
এবিষয়ে পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায়ের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো.হুমায়ন কবির বলেন, এই ধরনের প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসন সবসময় সজাক রয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।