কুরবানির উদ্দেশ্য ও শিক্ষা

মাওলানা মো. আনোয়ারুল ইসলাম
কুরবানি একটি মহান ঈবাদাত। কিন্তু আল্লাহর কাছে এর গোস্ত ও রক্ত পৌঁছেনা এবং কুরবানির উদ্দেশ্যও এ গুলো নয়। বরং আসল উদ্দেশ্য জন্তুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা এবং পূর্ণ আন্তরিকতা সহকারে পালন কর্তার আদেশ পালন করা। আন্তরিকতা ও মহব্বত বর্জিত ইবাদাত প্রাণহীন কাঠামো মাত্র। আল্লাহ তা’আলা পশুদেরকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন তাঁর এ দানের প্রতি কৃতঙ্গতা জ্ঞাপনের জন্য কুরবানি ওয়াজিব নয়। বরং পশুগুলি যার এবং যিনি তাদেরকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন তাঁর মালিকানা স্বত্বকে অন্তর দিয়ে এবং কাজের মাধ্যমে স্বীকার করার জন্য কুরবানি ওয়াজিব করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, অর্থাৎ আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশ্ত ও রক্ত; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি সে সবকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর তাকবীর পাঠ করতে পার, এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন; সুতরাং তুমি সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ Ñ৩৭)।
কুরবানির শিক্ষাঃ
প্রথমতঃ মহান আল্লাহর আদেশ নিষেধ হুকুম আহকাম পালন করতে হবে আন্তরিকতার সাথে শুধু মাএ তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে। লোক দেখানোর ও সুনাম অর্জনের জন্য নয়। এ ব্যপারে রাসুল (স.) বলেন, ان الله تعالى لا ينظر الى اجسامكم ولا الى صوركم ولكن ينظر الى قلوبكم واعمالكم- অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদের শরীর ও চেহারার প্রতি ভ্রƒক্ষেপ করেন না, বরং তোমাদের মনের ও কর্মের দিকে দৃষ্টিপাত করেন (মুসলিম)।
দ্বিতীয়তঃ পশু কুরবানির সাথে সাথে নিজের আমিত্ব ও বড়ত্বকেও কুরবানি করতে হবে।
তৃতীয়তঃ কুরবানির পশুর গোস্ত যেমন গরিব মিসকিন মুসলমান ভাইÑবোনদের মধ্যে বিতরণ করা হয় তেমনি বিভিন্ন বিপদ আপাদেও তাদের পাশে থাকতে হবে।
চতুর্থতঃ হযরত ইবরাহিম (আ.) যেমন আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য নিজের সন্তানকে কুরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন তেমনি ভাবে আমাদেরকেও তাঁর সকল হুকুম আহকাম পালনে ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে কুরবানি উদ্দেশ্য ও শিক্ষা সামনে রেখে কুরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।