Type to search

আমডাঙ্গা খালে বসতবাড়ি ভেঙ্গেপড়ছে! বিক্ষুব্ধ জনগন খালটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে

অভয়নগর

আমডাঙ্গা খালে বসতবাড়ি ভেঙ্গেপড়ছে! বিক্ষুব্ধ জনগন খালটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে

ভবদহ এলাকা মিনি সাগরে রুপান্তরিত হতে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার: ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনের বিকল্প ব্যবস্থা আমডাঙ্গা খাল রক্ষা বাঁধ না দেওয়ায় ভৈরব নদ থেকে যশোর খুলানা মহাসড়ক পর্যন্ত খাল পাড়ের ২৩টি বসতবাড়ি বিলিন হতে চলেছে। ক্ষতিগ্রস্থ ওই সব বাড়ির লোকজন খালটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছে। তারা শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বৈঠক করে খাল ভরাটের কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে। এদিকে খাল ভরাটের খবর জলাবদ্ধ এলাকায় রটে যাওয়ায় তাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

বিলিন হতে চলেছে বসতবাড়ি

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পলি জমে ভবহদের শ্রী – হরি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ভবদহ অঞ্চলের ২৭টি বিলের পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না। গত কয়েক বছর যাবৎ বিলের ফসলি জমি গুলো পতিত হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে বাড়ি ঘর জলামগ্ন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত পানির কিছু অংশ আমডাঙ্গা খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব নদের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। ২০০৬ সালে এলাকায় ব্যপক জলাবদ্ধতা দেখা দিলে খালটি খনন করা হয়। খালটি খননের পর বর্তমান ভাঙ্গনের অংশ রক্ষা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ইট সিমেন্টর তৈরি বøক বসায়। ভবদহ জলবদ্ধতা নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নের্তৃবৃন্দ বলেন, খালের তলদেশে অপরিকল্পিত ভাবে বøক বসানোর ফলে পানি নিষ্কাশনে বাধা গ্রস্থ হয়। যে কারনে গত বছরের অক্টবর মাসে জলাবদ্ধ এলাকার হাজার হাজার জনতা খালের তলদেশ থেকে বøক গুলো তুলে দেয়। সেই থেকে খালে জোয়ার ও ভাটার প্রবল স্্েরাতের তোড়ে পাশের বøক গুলো খালের ভিতর পড়ে খালে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।

খালে ভাঙ্গন লেগে ওই এলাকার ২৩টি বাড়ি ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ওই সব বাড়ির মধ্যে রয়েছে কয়েটি একতলা পাকা বাড়ি, টিন সেটের আধাপাকা বাড়ি ও অনেক গুলো কাঁচা বাড়ি।খাল পাড়ের বড় বড় গাছ পালা উপড়ে পড়ছে খালের মধ্যে। ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, খাল পাড়ের বাড়ি ঘর রক্ষার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি কর্মকর্তা , পৌরসভার মেয়র বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছেন। কিন্তু কোন দপ্তর এ পর্যন্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ক্ষতিগ্রস্থ শেখর চন্দ্র বলেন,‘ আমার বসত ভিটা ভেঙ্গে পড়েছে,টিন সেটের পাকা বাড়ি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা কয়েক দিন আগে উপজেলার ইউএনও, পৌর মেয়র, ভ’মি অফিস সহ অনেক দপ্তরে এ ব্যপারে প্রতিকার চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোন দপ্তর থেকে সাড়া পাইনি। বাধ্য হয়ে আমরা খালটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছি। শুক্রবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে খাল ভরাটের কাজ শুরু করা হবে’। দীনোবন্ধু সরকার বলেন, ‘আমরা খাল কেটে কুমির এনেছি। ওই খাল আমার বাপ দাদার ভিটা বাড়ি খেয়ে ফেলছে। বার বার অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোন দপ্তর সাড়া দেয়নি। বাধ্য হয়ে ভৈরব নদে অবস্থানরত বালি ভর্তি জাহাজ থেকে পাইপ লাগিয়ে বালি ফেলে খালটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাইপ বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’

খাল ভরাটের জন্য বালির পাইপ বসানো হইছে

পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুর রহমান বলেন, ‘জনগন খালের তলদেশ থেকে বøক উঠানোর ফলে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। খালটি প্রসস্থ ও গভির কওে খনন ও রক্ষা বাাঁদ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। আগামী একনেক’র সভায় প্রকল্প অনুমোদনের সম্ভাবনা আছে। প্রকল্পটি অনুমোদন না পেলে আশু কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’ অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আমিনুর রহমান বলেন,‘ একটি চলমান খাল ভরাট করার অধিকার কারো নেই। যারা খাল ভরাট করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।্ ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রণজিত বওয়ালী বলেন, ‘শ্রী-– হরি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জোয়ারাধার করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। এ অবস্থায় আমডাঙ্গা খাল বন্ধ করলে ভবদহ এলাকা মিনি সাগরে পরিণত হবে।’