Type to search

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা এক দিনে ঘুষ গ্রহণ করলেন ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা

অভয়নগর

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা এক দিনে ঘুষ গ্রহণ করলেন ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা

মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসদের সম্মানীর থেকে টাকা কেটে নেয়ার অভিযোগ
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা এক দিনে ঘুষ গ্রহণ করলেন ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা

অভয়নগর প্রতিনিধি:
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: ওহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে১ লাখ ৯১ হাজার ৪০০ টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে। মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসরা তাদের সন্মানীর টাকা উত্তোলনের সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ওই টাকা কেটে নেওয়া হয়।
উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ১৭৪ জন কর্মী ঘুষের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও শেষ পর্যন্ত তারা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্লানের আওতায় ২০১৯ সালে উপজেলার ২৬টি ক্লিনিকের কর্মপরিধি এলাকায় ১৭৪ জনকে এমএইচভি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্তদেরকে প্রতি মাসে ৩ হাজার ৬০০ টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা।
গত ১২ মে কমিউনিটি বেইজস হেলথ কেয়ারের লাইন ডাইরেক্টর ডাক্তার মাসুদ রেজা কবির স্বাক্ষরিত এক স্মারকে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসদের (এমএইচভি) ১০ মাসে প্রত্যেককে ৩৬ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হলো। সম্মানি বিল থেকে কোনোভাবেই আয়কর কর্তন করা যাবে না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসরা অভিযোগ করেন, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে তাদের ১০ মাসের সন্মানী প্রদানের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে বলা হয়। এরপর তাদের টাকা ছাড় ও বিভিন্ন খরচের কথা বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রতি জনের নিকট ৪ হাজার টাকা দাবী করেন। একথা জানার পর মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তার অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরপর ঘুষের টাকা কমিয়ে ২ হাজার টাকা দাবী করেন। তাও তারা মানতে রাজী না হওয়ায় সবশেষে বিকাল ৪ টার দিকে এক হাজার টাকা ঘুষ এবং ১ শত টাকা রেভিনিউ বাবদ কাটারপর টাকা প্রদান করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী মো: শাহিনুজ্জামান বলেন, টাকা কম দিচ্ছি স্যারের (উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা) নির্দেশে। এখানে আমার দায় নেই। কর্তনকরা টাকা স্যারকে দিতে হবে।
তথ্য অনুসন্ধান কলে সাংবাদিকের সাথে কথা হয় রানাগাতি কমিউনিটি ক্লিনিকের এমএইসভি মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই টাকা নিতে এসে বসে আছি। উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা আমাদের সন্মানী থেকে ৪ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। আমরা প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হলো না। এক হাজার টাকা ঘুষ ও রাজস্ব বাবদ ১ শত টাকা কম দিলো।’ বিভাগদি কমিউনিটি ক্লিনিক এমএইচভি পাপ্পু কুমার দাস বলেন, ‘ টাকা দেওয়ার সময় ৩৬ হাজার টাকার বুঝিয়া পাইলাম মর্মে সই নেয়া হচ্ছে আর দেওয়া হচ্ছে ৩৪ হাজার ৯০০ টাকা। এ ধরনের অভিযোগ মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারস মুনিয়া বেগম,নিপা সরকার,আজিজুর রহমান, আশা খাতুন, আসমা খাতুন, বিথি সরকার,সজিব মন্ডলসহ অনেকেই করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ওয়াহিদুজ্জামানের নিকট টাকা কম দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন টাকা নিচ্ছি তা আপনাদের বলতে হবে কেন? এটা আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বুঝবেন।’
এ ব্যাপরে যশোরের সিভিল সার্জন ডা: বিপ্লব কান্তি বিশ^াস বলেন, মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসদের সন্মানী থেকে টাকা কেটে নেয়ার সুযোগ নেই। এ ধরণের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *