Type to search

যশোর-৪ আসন বিজয়ী নৌকার বাবুল : এই জয় জনগণের, এই জয় শেখ হাসিনার

রাজনীতি

যশোর-৪ আসন বিজয়ী নৌকার বাবুল : এই জয় জনগণের, এই জয় শেখ হাসিনার

প্রিয়ব্রত ধর,স্টাফ রিপোটারঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮৮ যশোর-৪ আসনে বিশাল জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। গতকাল রবিবার ভোটগ্রহণের পর গণনা শেষে বেসরকারি ফলাফলে নৌকার মাঝিকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই জয়ে যশোর-৪ আসনের নির্বাচনী এলাকা অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং সদরের একাংশ বসুন্দিয়া ইউনিয়নে আনন্দের জোয়ার বইছে।
অভয়নগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম হাবিবুর রহমান জানান, যশোর-৪ আসনে এনামুল হক বাবুল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে।
যশোর-৪ আসনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩৮ ভোটের মধ্যে বাবুল পেয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৬৭৮টি ভোট। মোট গৃহীত ভোট ১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৬৯টি, যা মোট ভোটের ৪৬ শতাংশ। গৃহীত ভোটের ৪২ শতাংশ পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বাবুল। ১০ হাজার ৩৪৬ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের অ্যাডভোকেট জহুরুল হক। মোট ছয়জন প্রার্থী লড়াই করেছিলেন। এনামুল হক বাবুল ছাড়া অন্য পাঁচজন মিলে মাত্র ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
যশোর-৪ আসনে মোট অভয়নগরে তিন ও বাঘারপাড়ায় একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন
অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভোটের ফলাফল এসে পৌঁছলে আনন্দে ফেটে পড়েন এনামুল হক বাবুলের পাশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষিরা। এ সময় বাবুল বলেন, ‘নৌকার এই জয় জনগণের, এই জয় আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার। তাকে এই জয় উৎসর্গ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কথা দিয়েছিলাম আমাকে প্রার্থী করলে ভোটাররা কেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন। সেই কথা আজ বাস্তব হয়েছে। সারাদিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসবমুখর ভোটগ্রহণ হয়েছে। পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যম তা দেখেছে। যারা আমাকে ভোট থেকে সরিয়ে দিতে অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিলেন, তারা উচিত জবাব পেয়ে গেছেন; এই আমার সান্ত্বনা। এখন সবাইকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন করার পালা। জনগণের সেবক হয়েই আগামী দিনগুলো কাটাতে চাই। এই যাত্রায় সবার দোয়া, ভালোবাসা ও আশীর্বাদ চাই।’ তিনি বিশেষভাবে তরুণ ভোটাদের ধন্যবাদ জানান।
প্রচারপর্ব থেকে শুরু করে গতকাল ভোটের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা এনামুল হক বাবুলের সঙ্গে ছিলেন। তাদের নিয়েই আগামীর পথ চলতে চান বাবুল। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং বসুন্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষিরা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন পুরো এলাকা। বাবুলের গলায় পরিয়ে দেন বিজয় মালা।
সারা দিন ভোটের ব্যস্ততায় ছিলেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার ওলিয়ার রহমান, বাঘারপাড়ার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী, সিনিয়র সহসভাপতি ও অভয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর, বাঘারপাড়ার নেতা সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বিশ্বাস, আব্দুল গণি মোড়ল, আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নওয়াপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি গাজী নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত দাস শান্ত, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আইয়ুব হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ, বিকাশ রায় কপিল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মোল্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন ও হাবিবুর রহমান বাপ্পী, সহসম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুর রউফ মোল্যা, নওয়াপাড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, রাজঘাট-নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চল শাখা শ্রমিকলীগের সভাপতি ফারাজী নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রবিন অধিকারী ব্যাচা। বাঘারপাড়া থেকে ছিলেন ভিক্টোরিয়া পারভিন সাথী, ডা. নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার, সন্তোষ কুমার অধিকারী প্রমুখ।
বিজয়ক্ষণে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন অভয়নগর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আসলাম হোসেন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম আজিম উদ্দিন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খানম, জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহিলা সম্পাদিকা লায়লা খাতুন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মুন্সি আব্দুল মাজেদ, সাধারণ সম্পাদক তাপস ফারাজী।
আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কবির হোসেন জনি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান কুদ্দুস, দপ্তর সম্পাদক গোলাম জহিরুল হক লিখন, প্রচার সম্পাদক শাহ্ আব্দুল মুকিত জিলানী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তারু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান, হাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন, পৌর প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান মোল্যা, পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, পৌর কাউন্সিলর তানভীর হোসেন তানু, মোস্তফা কামাল, শেখ আব্দুল সালাম, রিজাউল ইসলাম রেজা ফারাজী, বিপুল শেখ, মিজানুর রহমান।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য সর্বস্তরের নেতারা ভোটের ফলাফলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন। ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দে ফেটে পড়েন তারা। এ সময় সেখানে ছিলেন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহ্ খালিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আহাদুর রহমান মামুন, জসিম উদ্দিন, রওশন কবির টুটুল, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান গাজী, যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল আহমেদ বাবু, শেখ জাকির হোসেন, তরুণলীগের আহবায়ক বেল্লাল হোসেন বকুল, পৌর সেচ্চালীগের সভাপতি মেহেদী রাজন, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মিলন, সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ শান্তসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল বলেন, ‘রাজনৈতিক অপশক্তির বিরুদ্ধে যশোর-৪ আসনের মানুষ যেভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের পক্ষে জেগে উঠেছেন, সব শঙ্কা কাটিয়ে কেন্দ্রে এসে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন, তা ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে।’
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা একজন ভালো নেতা হিসেবে এনামুল হক বাবুলকে চেয়েছিলাম। তাকে পেয়ে প্রমাণ করে দিয়েছি, যোগ্য প্রার্থী হলে মানুষ নৌকায় ভোট দেন।’
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণ পদ সাহা বলেন, ‘অপশক্তি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলকে জয়যুক্ত করেছে নির্বাচনী এলাকার মানুষ।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাপ্পি বলেন, ‘এই জয়ের মাধ্যমে মানুষের বুক থেকে চাপা কষ্ট নেমে গেছে।’ আরেক নেতা অ্যাডভোকেট কবির হোসেন জনি বলেন, ‘এই জয় কুচক্রীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সুসংগঠিত শক্তির জয়।’ দপ্তর সম্পাদক গোলাম জহিরুল ইসলাম লিখন বলেন, ‘অনেক লড়াই করে এই জয় ছিনিয়ে আনতে হয়েছে।’
অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার ওলিয়ার রহমান বলেন, ভোটাররা ভোট দিয়ে প্রমাণ করেছেন, তারা এনামুল হক বাবুলকে তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে চান; বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় দেখতে চান।