নিরাপত্তার চাদরে মোড়া রাজধানীতে চলছে দুই সমাবেশ
এসএসসির ফল প্রকাশের দিন আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানীকে। এরি মধ্যে বৃষ্টি নেমে কিছু সময়ের জন্য বাগড়া বাধালেও সমাবেশ শুরু করেছে দুই পক্ষই।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার শান্তি সমাবেশের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ সমাবেশ করছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে। আর বিএনপির নেতৃত্বে সমমনা দলগুলোর নিয়ে মহাসমাবেশ চলছে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।
দুইদিন নানা জল্পনা এবং স্থান ও দিন পাল্টানোর পর অবশেষে বৃহস্পতিবার দুই সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সমাবেশ করার জন্য দুই পক্ষকেই বেঁধে দেয়া হয় ২৩ শর্ত।
অনুমতি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে দেয় আয়োজকরা। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ মঞ্চ করেছে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের পাশেই। আর বিএনপি মঞ্চ বানিয়েছে দলের কার্যালয় ঘেঁষে।
দুই পক্ষের ব্যাপক আয়োজনের মধ্যে কড়া নিরাপত্তার চাদরে রাজধানীকে মুড়ে ফেলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠে রয়েছে র্যাব ও আনসার সদস্যরা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। বাইরের জেলাগুলো থেকে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ মুখেও কড়া তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
দুই সমাবেশে লোকসমাগম ঘটাতে গিয়ে রাজধানীতে চলাচলের অধিকাংশ বাসই ভাড়া করে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে মহানগর জুড়ে গণপরিবহনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
পুলিশ শর্ত দিয়েছিল, বেলা দুইটা থেকে পাঁচটার মধ্যে সমাবেশস্থলে লোকসমাগম ঘটাতে পারবে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু তার আগেই মিছিলের পর মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে জনস্রোত।
সকাল হতেই পাড়া মহল্লা থেকে কর্মী সমর্থকদের জড়ো করা শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলো। সমাবেশের কাছাকাছি এলাকাগুলো থেকে মিছিল নিয়ে হেঁটেই সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। আর কিছুটা দূরের এলাকা থেকে বাস, পিকআপ চড়ে মিছিল আসছেন তারা।
যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশ
বৃষ্টি উপক্ষা করেই বেলা সোয়া দুইটার দিকে মুক্তিযুদ্ধের ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানে শান্তি সমাবেশ শুরু করেছে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস-জঙ্গিবিরোধী নানা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সমাবেশস্থল।
রঙিন, ব্যানার, ফেস্টুন, টুপি ও গেঞ্জি পরে সমাবেশে আসছে নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। বায়তুল মোকাররম এলাকা নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। একদিকে গোলাপশাহ মাজার থেকে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গেট, আর অন্যদিকে মহানগর নাট্যমঞ্চ এলাকা ছাড়িয়ে অবস্থান নিয়েছে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, সমর্থকেরা।
বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের মঞ্চ থেকে শুরু করে পল্টন-গুলিস্তান জুড়ে মাইক লাগানো হয়েছে। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগরের সব ইউনিটকে সমাবেশে আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। সমাবেশে আসছেন ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নেতাকর্মী, সমর্থকরা।
সাম্প্রতিককালে এই সমাবেশেই সবচেয়ে বড় গণজমায়েত হবে বলে আশা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির মহাসমাবেশ
বেলা দুইটার দিকে মহাসমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন এবং সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে সকাল থেকেই দলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সমাবেশে নেতাকর্মীরা সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।
সুত্র একাত্তর